করোনা রোগীর ক্ষত ড্রেসিং করছেন আরেক করোনা রোগী, অভূতপূর্ব ঘটনা NRS-এ
অভিযোগ শুনে ক্ষুব্ধ স্বাস্থ্যভবন। করোনা আক্রান্ত তরুণীর যেখানে বিশ্রাম ও চিকিৎসা প্রয়োজন, সেখানে কেন অন্য রোগীর ক্ষতস্থানে ড্রেসিং করতে হল? কার নির্দেশে?
তন্ময় প্রামাণিক: চিকিৎসাধীন এক করোনা (Coronavirus) রোগীকে দিয়ে ওয়ার্ডের আরেক করোনা রোগীর ক্ষতস্থানে ড্রেসিং করানো হল। অভূতপূর্ব এই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে এনআরএস-এ (NRS)। ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছে স্বাস্থ্যভবন। তড়িঘড়ি কোভিড (COVID19) ওয়ার্ড নজরে রাখতে তৈরি হয়েছে ৫ সদস্যের বিশেষ কমিটি।
দিন দশেক আগে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটেছে। বছর পয়ত্রিশের এক মহিলা প্রসূতি বিভাগে ভর্তি হন। অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন ছিল তাঁর। সে কারণে করোনা পরীক্ষা করা হলে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তাঁকে করোনা ওয়ার্ডে পাঠানো হয়।
সেখানে অন্য একটি বেডে চিকিৎসাধীন ছিলেন আরেক প্রবীণ মহিলা। তাঁর ক্ষতস্থানে প্রয়োজন ছিল ড্রেসিংয়ের। ওয়ার্ডে চিকিৎসক ড্রেসিং করার জন্য খোঁজাখুঁজি করলেও কারোর খোঁজ মেলেনি। সূত্রের খবর, ড্রেসিং করার সময় কোনও কর্মীর খোঁজ না মেলায় “আপাত সুস্থ” ওই বছর চল্লিশের মহিলাকে বলা হয় ড্রেসিং করে দিতে। সেই করোনা আক্রান্ত প্রবীণ মহিলাকে ড্রেসিং করে দেন ওই তরুণী। আর তাতেই হয় বিপত্তি! বিষয়টি নিয়ে তরুণীর পরিবার স্বাস্থ্য ভবনে অভিযোগ জানায়।
অভিযোগ শুনে ক্ষুব্ধ স্বাস্থ্যভবন। করোনা আক্রান্ত তরুণীর যেখানে বিশ্রাম ও চিকিৎসা প্রয়োজন, সেখানে কেন অন্য রোগীর ক্ষতস্থানে ড্রেসিং করতে হল? কার নির্দেশে? একাধিক প্রশ্ন তুলে রিপোর্ট চেয়ে পাঠায় স্বাস্থ্যভবন। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ভবনের এক আধিকারিক বলেন, “এমনটা হওয়া উচিত না। দ্রুত কোভিড ওয়ার্ডে নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” এমন নজিরবিহীন ঘটনায় বিড়ম্বনা এন আর এস কর্তৃপক্ষের।
আরও পড়ুন: ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ হওয়ার আগেই কি করোনা টিকার ছাড়পত্র! বৈঠক আগামিকাল
ঘটনাচক্রে মেডিসিন বিভাগের কেশব সিংহ রায়ের নেতৃত্বে ৫ চিকিৎসকের বিশেষ পর্যবেক্ষণ টিম তৈরি করা হয়েছে কোভিড ওয়ার্ডে নজরে রাখতে। অ্যানাটমি, কমিউনিটি মেডিসিন, ফার্মাকোলজি বিভাগের চিকিৎসকেরা রয়েছেন ওই কমিটিতে।
এনআরএসের এক আধিকারিক বলেন, “কোভিড ওয়ার্ডে রোগীদের পরিষেবা আরও উন্নত করতেই এই কমিটি। প্রত্যেক রোগীকে নজরে রাখতেই এমন উদ্যোগ। তবে ওই তরুণী নিজের ইচ্ছেয় ড্রেসিং করেছিলেন। তিনি খুবই প্রাণবন্ত। করোনা আক্রান্ত হলেও তিনি উপসর্গহীন। অনেককে মুড়ি মেখে খাওয়াতেন। হেল্প করতেন। উনিই চিকিৎসককে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিলেন বলে শুনেছি।”
আরও পড়ুন: ‘আরোগ্য সেতুর’ পর ‘কো-উইন’, ভ্যাকসিন পেতে কেন্দ্রের নয়া অ্যাপ