Calcutta High Court: আদালতেই গ্যাংওয়ার! কলকাতা হাইকোর্টও কি নিরাপদ?

Security Calcutta High Court: দিল্লির রোহিনীর কোর্টে দুষ্কৃতী তাণ্ডবের ঘটনা। প্রশ্ন উঠেছে আদালতের নিরাপত্তা নিয়ে।

Calcutta High Court: আদালতেই গ্যাংওয়ার! কলকাতা হাইকোর্টও কি নিরাপদ?
আদালতের নিরাপত্তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন (ফাইল ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 24, 2021 | 10:37 PM

কলকাতা: আদালতের মধ্যে ঢুকে দুষ্কৃতী তাণ্ডব অপ্রত্যাশিত হলেও নতুন ঘটনা নয়। তবে আজ দিল্লিতে যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে গেল, তার নজির বোধহয় সাম্প্রতিক অতীতে নেই। আইনজীবীর পোশাক পরে আদালত কক্ষে প্রবেশ করল দুষ্কৃতীরা। তারপর আচমকা চলল গুলি। কজ্ষের মধ্যেই ৩৫-৪০ রাউন্ড গুলি চলেছে বলে সূত্রের খবর। মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। দিল্লির (Delhi) রোহিনী কোর্টের (Rohini Court) সেই ঘটনা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে আদালতের নিরাপত্তা নিয়ে। নিম্ন আদালতে প্রতিনিয়ত এজলাশে তোলা হয় দুষ্কৃতীদের। স্বাভাবিকভাবেই দুষ্কৃতী হানার আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কিন্তু নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কি ততটা তৎপরতা দেখা যায়? কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) নিরাপত্তা কতটা? কী বলছেন আইনজীবী? জানার চেষ্টা করল TV9 বাংলা।

প্রত্যেকদিন গুচ্ছ গুচ্ছ মামলা ওঠে কলকাতা হাইকোর্টে। দুষ্কৃতী তাণ্ডব না হলেও, আদালত কক্ষের বাইরে বিক্ষোভ দেখানোর নজির রয়েছে এই আদালতে। এমনকি একসময় এক ব্যক্তি আদালতের মধ্যেই গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এক মহিলা আইনজীবীকে শ্লীলতাহানির শিকারও হতে হয় এই হাইকোর্টে। এই সব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কতটা নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে আদালতে।

জানা গিয়েছে, প্রত্যেক মাসেই নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠক হয় হাইকোর্টে। সম্প্রতি সেরকমই একটি বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর বাড়ানো হয়েছে ব্যাগ স্ক্যানারের সংখ্যা। আগে মাত্র একটি ব্যাগ স্ক্যানার ছিল। এবার সেই সংখ্যা বাড়িয়ে ৭টি করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, আদালত চত্বরে রয়েছে ২৪৪টি সিসিটিভি। তবে দরজায় দরজায় নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা যথেষ্ট নয় বলেই অভিযোগ একাধিক আইনজীবীর। তবে সবথেকে বড় সমস্যা গাড়ি পার্কিং-এর। আদালতের পার্কিং লটে যে কেউ গাড়ি পার্ক করে থাকেন বলে অভিযোগ। একবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যাতে আইনজীবীদের গাড়ি আলাদাভাবে স্ক্যান করার ব্যবস্থা করা হয়। অন্য কারও গাড়ি যাতে বিনা অনুমতিতে আদালত চত্বরে প্রবেশ করতে না পরে, সেই বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু সে সব সিদ্ধান্ত আলোচনাতেই রয়ে গিয়েছে, কার্যকর হয়নি।

তবে, আইনজীবীদের মতে হাইকোর্টে যতটুকু নিরাপত্তা রয়েছে, সেই তুলনায় কিছুই নেই নিম্ন আদালতে। কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী অনির্বাণ মিত্র বলেন, ‘আধার কার্ড দেখে সাধারণ প্রবেশ করতে দেওয়া হয় আদালতে। কিন্তু কোনও দুষ্কৃতী যদি আধার কার্ড নিয়ে প্রবেশ করে, তাহলে কিছু করার থাকবে না। তাই আরও বেশ সাবধান হওয়া উচিৎ।’ তিনি আরও জানান, আদালতে সাধারণ আইনজীবী, ক্লায়েন্ট বা সাংবাদিকরাই আসেন। তাই ক্লায়েন্টদের ক্ষেত্রে যদি আইনজীবীর একটা লিখিত অনুমোদন দেওয়া হয় নিরাপত্তারক্ষীকে, তাহলেও যে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। আর এক আইনজীবী অরিন্দম দাস বলেন, ‘এটা কোর্ট। মানুষ এখানেই নিজেকে সবথেকে বেশি নিরাপদ বলে মনে করে।’ তবে পার্কিং ইস্যু নিয়ে সমস্যার সমাধান হয়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি। আইনজীবী বলেন, বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে এই ইস্যু নিয়ে বারবার আবেদন জানানো সত্ত্বেও কোনও সুরাহা হয়নি।

তবে মহিলা আইনজীবীরা কি নিরাপদ? হাইকোর্টের আইনজীবী রুমেলি সরকার জানান, তিনি নিজেকে যথেষ্ট নিরাপদ মনে করেন হাইকোর্টে। তবে নিম্ন আদালতে তাঁর অভিজ্ঞতা খুব একটা ভালো নয়। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই এক মহিলা আইনজীবীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা হয় হাইকোর্টে। জানা যায় এক ব্যক্তি আইনজীবীকে অনুসরণ করে কখন আদালতে পৌঁছন, তা তিনি জানতে পারেননি। কাজ সেরে হাইকোর্টের সিঁড়ি দিয়ে নামছিলেন মহিলা আইনজীবী। অভিযোগ, তখনই অভিযুক্ত সিঁড়ি দিয়ে দৌঁড়ে নেমে তাঁকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরেন। লোকজন ঘটনাস্থলে চলে এলে পালিয়ে যান অভিযুক্ত। তাই হাইকোর্টে দিল্লির ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সে কথা মাথায় রেখে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা রয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

আরও পড়ুন: Firing at Delhi Court: আদালতের ভিতরেই গ্যাংস্টারের তাণ্ডব, এলোপাথাড়ি গুলিতে মৃত্যু গ্যাংস্টার সহ ৫ জনের