ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে নওশাদের, ‘সিপিএম সংযুক্ত মোর্চার মালিক নয়’, শাসানি শরিকদের
তিনি ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন, জোট গঠনের সময় এক কথা বলা হলেও এখন সিপিএম সেই অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে অন্য পথে হাঁটা শুরু করেছে।
কলকাতা: সমঝোতার সুর আর নয়। সিপিএম-কে একহাত নিয়েই এ বার ফের একপ্রকার মোর্চা ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিলেন আইএসএফ চেয়ারম্যান নওশাদ সিদ্দিকি। শুক্রবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন, জোট গঠনের সময় এক কথা বলা হলেও এখন সিপিএম সেই অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে অন্য পথে হাঁটা শুরু করেছে। এই অবস্থায় মোর্চা-ত্যাগ বাদ দিয়ে অন্য কোনও বিকল্প যে আইএসএফ-র কাছে থাকছে না, ঘুরপথে সেটাই বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন তিনি।
পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির উপস্থিতিতে ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে পথ চলা শুরু করেছিল সংযুক্ত মোর্চা। কিন্তু তখনও সিপিএমের নেতারা বুঝতে পারেননি, যে ভাইজানের উপস্থিতি এই জোটকে উজ্জীবিত করছে, সেই ভাইজানের দলই ভোটের পর ‘গলার কাঁটা’ হয়ে যাবে। আইএসএফ প্রথমবার বিধানসভা নির্বাচনে লড়েই খাতা খুলে নিয়েছে। তাই তারা কিছুই হারায়নি বলা যায়। কিন্তু বাম-কংগ্রেস যেভাবে ‘অপদস্থ’ হয়েছে, তার নজির স্বাধীনতা-ইস্তক কোনও ভোটেই দেখা যায়নি। বামফ্রন্টের এই ব্যর্থতার জন্য আইএসএফ-কে দায়ী করেছেন বাম শরিকরাও। কিন্তু তারপরও বুঝিয়ে-সুঝিয়ে আব্বাস-নওশাদকে জোটে ধরে রেখেছিলেন বিমান বসু। কিন্তু সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি রাজ্য কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে এসে হাটে হাঁড়ি ভেঙে ফেলেছেন।
সীতারামকে বলতে শোনা যায়, এই জোট ছিল কেবলই নির্বাচনী-কেন্দ্রিক। দলীয় নেতৃত্বের কাছেও স্পষ্টভাবে সেই বার্তা পৌঁছে দিয়েছিলেন তিনি। মোর্চা ভাঙার প্রয়োজন না থাকলেও অধিক নৈকট্যের দরকার নেই বলে জানিয়ে দেন। তাই কথা থাকলেও, সিপিএম ও বাকি শরিকদের নিয়ে আইএসএফ-র কোনও যৌথ কর্মসূচি এখনও পর্যন্ত হয়নি। সীতারামের বক্তব্যের পর সিপিএম নেতারাও এই নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেননি। ফলে এখন স্বাভাবিকভাবেই ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে নওশাদের।
শুক্রবার সে প্রসঙ্গ উঠতেই রীতিমতো ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটান নওশাদ। বলেন, “ব্রিগেডের মিটিংয়ে ঘোষণা হয়েছিল যে সংযুক্ত মোর্চা কোনও নির্বাচনী জোট নয়। এটা একটা আন্দোলনের মঞ্চ। কিন্তু এখন সিপিএম নিজেই উল্টো পথে হাঁটা শুরু করছে।” সর্বভারতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে হলেও সিপিএম-তৃণমূলের পারস্পরিক নৈকট্যও যে তিনি স্বীকার করতে নারাজ, সেই বার্তাও এ দিন স্পষ্টভাবে দিয়ে রেখেছেন নওশাদ। তাঁর কথায়, “সিপিএম কিন্তু সংযুক্ত মোর্চার মালিক নয়। যারা শাসকদলের চাটুকারিতা করছে, তাদের নিয়ে সংযুক্ত মোর্চা চলতে পারে না।” আরও পড়ুন: কোমর কষছে সিবিআই, হিংসা ও মামলার পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য চেয়ে চিঠি ডিজি বীরেন্দ্রকে