KMC Budget: কলকাতা পুরসভার বাজেট অধিবেশনে তুমুল হট্টগোল! বকা খেলেন এক তৃণমূল কাউন্সিলরও

KMC: পুরনিগমের তথ্য বলছে, স্থায়ী কর্মীদের বেতনের ১৫ শতাংশ কলকাতা পুরনিগম এবং ৮৫ শতাংশ রাজ্য সরকারকে বহন করতে হয়।

KMC Budget: কলকাতা পুরসভার বাজেট অধিবেশনে তুমুল হট্টগোল! বকা খেলেন এক তৃণমূল কাউন্সিলরও
বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ বক্তব্য রাখছেন। বেঞ্চ বাজিয়ে হট্টগোল শাসকদলের কাউন্সিলরদের।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 05, 2022 | 8:36 PM

কলকাতা: কলকাতা পুরনিগমের বাজেট প্রস্তাব অধিবেশনে শুক্রবার হইচই বেঁধেছিল ভ্যাকসিন নিয়ে। শনিবার উঠে এল পেনশন-সমস্যা। পেনশন-বিতর্ক নিয়ে এদিন সরব হন বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ। পাল্টা হট্টগোল শুরু হয় শাসকদলের বেঞ্চ থেকেও। পেনশন নিয়ে গত দেড় দু’ মাস ধরে বিতর্কের কেন্দ্রে কলকাতা পুরনিগম। এই পুরনিগমের বহু অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী পেনশন এবং গ্র্যাচুইটি পাচ্ছেন না বলেই পুরনিগম সূত্রে খবর। এবার সেই বিতর্ক সরাসরি কলকাতা পুরনিগমের বাজেট অধিবেশনে উঠে এল। বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ বাজেট প্রস্তাব আলোচনার শেষ দিন নিজের বক্তব্য রাখতে উঠে পেনশন এবং গ্র্যাচুইটি নিয়ে তৃণমূলকে নিশানা করেন। পেনশন নিয়ে সজল ঘোষ সরব হতেই শাসকদলের বেঞ্চ থেকে সংশ্লিষ্ট দলের কাউন্সিলররা হট্টগোল করে ওঠেন। চিৎকার করতে থাকেন তাঁরা।

চেয়ারপার্সন মালা রায়ের নির্দেশে পরে কাউন্সিলররা শান্ত হন। তবে চুপ করানো যায়নি ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অলকানন্দা দাসকে। যা নিয়ে ভরা সভায় কড়া কথাই শুনতে হয় তাঁকে। এদিন সজল ঘোষ বলতে উঠেই কটাক্ষের সুর চড়ান, ‘কলকাতা পুরসভা এখন সব লোক দেখানো কাজ করছে। অর্থ সংকটে জর্জরিত হয়ে রয়েছে প্রশাসন। ভাঁড়ে মা ভবানী অবস্থা। গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে এখনও পর্যন্ত ৬৪০ জন অবসর নিয়েছেন। তাঁদের পেনশন এবং গ্র্যাচুইটি দেওয়া হচ্ছে না। অথচ ফিরহাদ হাকিম গালভরা কথা বলে যাচ্ছেন।’

সজল ঘোষের বক্তব্য, প্রায় ১৮-১৯ লক্ষ টাকা আটকে রাখা হয়েছে এইসব অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের। চরম সমস্যায় রয়েছেন এই কর্মীরা। বাজেট প্রস্তাব আলোচনা পর্ব শেষে সাংবাদিক বৈঠক করে সজল ঘোষ বলেন, একের পর এক মিথ্যা ভাষণ দিয়েছেন তৃণমূল প্রশাসনের কর্তারা। দিশাহীন বাজেট। বাজেটে কোন সারবত্তা নেই। অর্থ সংকটে জর্জরিত হয়ে রয়েছে অথচ একাধিক মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে বাজেট বইতে।

যদিও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম নিজের বাজেট বক্তব্যের শেষে সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “কোনও পেনশন গ্র্যাচুইটি আটকানো হয়নি। অনেক কর্মী রয়েছেন যাঁরা পেনশন ‘বিক্রি’ (মাসে মাসে পেনশন তোলার বদলে একবারে টাকা নিতে চান) করে টাকা নিতে চান। তাঁদের পেনশন শুধু আটকে রাখা হয়েছে। অর্থসঙ্কট ছিল, তবে অনলাইনে ট্যাক্স এবং অন্যান্য রাজস্ব আদায় হওয়ায় সে অর্থসংকট অনেকটাই কমে গিয়েছে। কারও পেনশন আমরা আটকাই না।”

যদিও কলকাতা পুরনিগমের প্রশাসনিক সূত্রে খবর, বহু অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীর গ্র্যাচুইটি আটকে রয়েছে অর্থসঙ্কটের কারণে। পেনশন চেয়ে পুরনিগমের সংশ্লিষ্ট বিভাগে ঘুরেও তাঁরা পেনশন হাতে পাচ্ছেন না। এ নিয়ে পুরনিগমের তথ্য বলছে, বর্তমানে কলকাতা পুরনিগমে স্থায়ী এবং অস্থায়ী কর্মীদের বেতন এবং পেনশন দিতে প্রয়োজন হয় মাসে প্রায় ১৩৩ কোটি টাকা। ১৮ হাজার স্থায়ী কর্মীর জন্য ৭৮ কোটি টাকা, ২৬ হাজার অস্থায়ী কর্মীদের জন্য ১৫ কোটি টাকা এবং ৩৫ হাজার অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের জন্য ৪০ কোটি টাকা প্রয়োজন হয়।

পুরনিগমের তথ্য বলছে, স্থায়ী কর্মীদের বেতনের ১৫ শতাংশ কলকাতা পুরনিগম এবং ৮৫ শতাংশ রাজ্য সরকারকে বহন করতে হয়। অস্থায়ী কর্মীদের বেতনের পুরো টাকাই কলকাতা পুরনিগমকে বহন করতে হয়। অবসরপ্রাপ্তদের পেনশনের ৬০ শতাংশ কলকাতা পুরনিগম বহন করে। গত ২০-২৪ মাস ধরে ঠিকাদারদের কাজের বিল দেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কারণ ভাঁড়ে মা ভবানী অবস্থা। কোষাগারের কীভাবে হাল ফিরবে, তা নিয়ে সংশয়ে খোদ পুর কর্তারা।

পুরনিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে তাদের অধীনে নিজস্ব এবং ঠিকাদারদের থেকে নেওয়া বহু সংখ্যক গাড়ি চলে। যেগুলির তেলবাবদ ব্যয়, চালকের বেতন-সহ সংশ্লিষ্ট খাতে মাসিক সাড়ে চার থেকে পাঁচ কোটি টাকা অর্থাৎ প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয় হয়। এই ব্যয় গত তিন চার বছরে অত্যাধিক বেড়ে গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। অতীতে সার্কুলার জারি করে, এই গাড়ি ব্যবহারে কড়াকড়ি করেছিল পুরনিগম। সেই অনুযায়ী, পুর আধিকারিকরা গাড়ি চড়ার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও সতর্ক হয়েছিলেন। কিন্তু তারপর অবস্থা আবার তথৈবচ হয়ে যায়।

আরও পড়ুন: Madhyamik 2022: সোমবার থেকে শুরু মাধ্যমিক, সাংবাদিক সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা পর্ষদ সভাপতির