CM Mamata Banerjee: টাকা নেই, খরচে রাশ টানার নির্দেশ মমতার! পাল্টা দিলীপের, ‘দুয়ারে সরকার কী দরকার’
CM Mamata Banerjee: কেন্দ্রীয় বাজেটে ১০০ দিনের কাজে বরাদ্দ কমানো নিয়েও এদিন সরব হন মুখ্যমন্ত্রী।
কলকাতা: সরকারের আয় কম। তাই খরচেও রাশ টানতে হবে। বাজেটের বাইরে কোনও অতিরিক্ত খরচ নয়। বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক বৈঠক (Administrative Meeting) থেকে বিভিন্ন দফতরকে এই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Chief Minister Mamata Banerjee)। নতুন প্রকল্পের জন্য অর্থ দফতর ও মুখ্যসচিবের অনুমোদন নিতেই হবে। নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়াম (Netaji Indoor Stadium) থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, গত প্রায় আড়াই তিন বছর ধরে করোনার কারণে বিভিন্ন খাতে সরকারের আয় কমেছে। কিন্তু মানুষের কল্যাণে যে প্রকল্পগুলি রয়েছে তা এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তার জন্য অতিরিক্ত খরচ কমানোর পরামর্শ যেমন দিয়েছেন, তেমনি বলেন, কোনও কাজ বাকি রেখে নতুন কাজে হাত দেওয়ার দরকার নেই। ১০০ দিনের কাজের প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “১০০ দিনের কাজে আমরা প্রথম। এবারও দেখেছেন আপনারা ১০০ দিনের কাজে টাকা কমিয়ে দিয়েছে। আগেবার ৫২ দিন ছিল, এবার ৪২ দিন পর্যন্ত হয়েছে এখনও অবধি। কাজের নিরিখে কিছু জেলা পিছিয়ে আছে। যেমন পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, নদিয়া, দক্ষিণ দিনাজপুর। পঞ্চায়েত দফতরকে একটু এগিয়ে চলতে হবে। ভাল করে মনিটরিং করতে হবে। ১০০ দিনের কাজে লোকেরা যেন ঠিক সময়ে টাকা পায়, সেটা দেখতে হবে।”
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্যের নিজস্ব রাজস্ব আদায় কমেছে কোভিডের জন্য। সবই তো বন্ধ তিন বছর ধরে। ইয়াসে প্রচুর খরচ হয়েছে আমাদের। কেন্দ্র সরকার সেন্ট্রাল শেয়ারের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। কেন্দ্রের কাছ থেকে ৯০ হাজার কোটি টাকারও বেশি আমরা পাইনি। তা সত্ত্বেও ২০২১-২২ অর্থবর্ষে অর্থ দফতর দফতরগুলোকে পরিকল্পনা খাতে নিজেদের কাছ থেকে ৭৪ হাজার ৩০১ কোটি টাকা রিলিজ করেছে। এর মধ্যে ৬৩ হাজার কোটির বেশি খরচ হয়ে গিয়েছে। আমরা বলব একটু রাশ ধরে চলুন যেহেতু আয় কম হচ্ছে। কোনও অপ্রয়োজনীয় বা বাজেট বহির্ভূত খরচ যেন না হয়। আর বাজেটে থাকলেও যে খরচটা না করলে সরকারের টাকা বাঁচে, গরীব মানুষের কাছে যেতে পারে সেটা লক্ষ্য রাখতে হবে। খুব জরুরি যেগুলি, গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প, সেই স্কিমগুলিই হাতে নেওয়া হবে।”
একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অর্থ দফতর ও মুখ্যসচিবের অনুমোদন ছাড়া নতুন প্রকল্প যেন না নেওয়া হয়। কারণ অনেক প্রকল্প চলছে, আগে সেগুলো শেষ হোক। আমরা করি কী, আধা খেচড়া করে ফেলে রাখে। অর্ধেক হয়, অর্ধেক হয় না। তা হবে না। আগে অর্ধেক যেটা আছে তা সম্পূর্ণ হবে, তারপর নতুন। অনেক পরিকাঠামো পড়ে আছে। কৃষক বাজার, কর্মতীর্থ, পথসাথী সেগুলি ঠিকমতো কোন কোন জেলায় ব্যবহার হয়নি, কেন পড়ে রয়েছে তা দেখতে হবে। মুখ্যসচিবকে বলব রিপোর্ট নিন। কেন্দ্রের স্পনসর্ড অনেক স্কিম আছে। আমাদেরও টাকা দিতে হয়, ওদেরও দিতে হয়। ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট যেন ঠিক সময় দেওয়া হয়। তা না হলে আমরা আমাদের টাকাটা পাই না।”
এই বক্তব্যের কটাক্ষ করে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, “উনি আগেও বহুবার বলেছেন টাকা নেই। তাই ৫ লক্ষ কোটি টাকা ধার পার হয়ে গিয়েছে। তা হলে এই যে দুয়ারে সরকার, পাড়ায় সমাধান আনছেন কেন? দু’টো পরস্পর বিরোধী হয়ে যাচ্ছে না? আপনার দেওয়ার কিছু নেই, কিন্তু লোককে বিভ্রান্ত করছেন। লোককে পেটে খিদে নিয়ে নাটক দেখতে হচ্ছে। এটা বোধহয় অমানবিক। সরকার যদি চালাতে হয়, কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে কথা বলুন। রোজ রোজ ধার করে সরকার কতদিন চলবে। এই দুরবস্থা পশ্চিমবাংলার ছিল না। এটা উনি করেছেন বাংলাকে এগিয়ে দিতে গিয়ে।” অন্যদিকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, “পশ্চিমবঙ্গ তো আর্থিক দেউলিয়ার রাস্তায় চলছে। যে প্রকল্প আছে, সেগুলিই তো টানতে পারবে না। পয়সা কোথায়? বাংলায় সরকারের কোষাগার তো শূন্যই।”
আরও পড়ুন: এ বছর এক মাস আগেই পুজোর গন্ধ বাংলায়, ১ সেপ্টেম্বর উলু, শঙ্খে ‘মাতৃবন্দনা’