কয়লা কাণ্ডে লালার আবেদন খারিজ হাইকোর্টে, তল্লাশির প্রশ্নে ‘জয়’ সিবিআইয়ের
কয়লা ও গরুপাচারকাণ্ডে তদন্তে নেমে সিবিআই এই ধরনের অনুমতি রাজ্যের থেকে নেয়নি। আর তাকেই হাতিয়ার করে এবার সিবিআই-এর বিরুদ্ধেই মামলা হাইকোর্টে।
কলকাতা: কয়লা কাণ্ডের (Coal Scam Case) মূল অভিযুক্ত অনুপ মাঝি (Anup Majhi) তথা লালার গ্রেফতারির নির্দেশ খারিজের আবেদন ধোপে টিকল না হাইকোর্টের (Calcutta High Court) ডিভিশন বেঞ্চে। এই মামলায় শুক্রবার বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দেয় আপাতত রাজ্যের অনুমতি ছাড়াই যে কোনও জায়গায় তদন্ত করতে পারবে সিবিআই। পাশাপাশি খারিজ করে দেন লালার এফআইআর খারিজের আর্জিও। আগামী ২৩ মার্চের মধ্যে সিবিআইকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআর তুলে নেওয়ার আবেদন জানিয়ে গত ১০ ডিসেম্বর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় কয়লা কাণ্ডের মূল চক্রী লালা। এ প্রসঙ্গে লালা মূলত ‘জেনারেল কনসেন্ট’ প্রসঙ্গ উত্থাপন করে। তার প্রশ্ন ছিল, রাজ্যের অনুমতি ছাড়া কীভাবে সিবিআই রাজ্যের এলাকাগুলিতে তল্লাশি করতে পারে? এদিন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য জানিয়ে দেন, সিবিআই তদন্ত করতে পারবে, তবে সেক্ষেত্রে রাজ্যের সঙ্গে কথা বলে যুগ্মভাবে তল্লাশি করতে পারবেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তকারীরা। তবে লালা এফআইআর তুলে নেওয়ার আর্জি খারিজ করে দেন তিনি।
এক্ষেত্রে প্রশ্ন, ‘জেনারেল কনসেন্ট’ বিষয়টি কী? যার ওপর ভিত্তি করে সিবিআই-এর বিরুদ্ধেই হাইকোর্টে গিয়েছিল লালা….
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সাল পর্যন্ত যে কোনও বিষয়েই নিজে থেকে তদন্ত করতে পারত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। কিন্তু তারপর ‘জেনারেল কনসেন্টে’ ধার্য হয়, রাজ্যের কোনও সরকারি কর্তার বিরুদ্ধে এই ধরনের মামলার তদন্ত করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের থেকে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন। কিন্তু কয়লা ও গরুপাচারকাণ্ডে তদন্তে নেমে সিবিআই এই ধরনের অনুমতি রাজ্যের থেকে নেয়নি। আর তাকেই হাতিয়ার করে এবার সিবিআই-এর বিরুদ্ধেই মামলা হাইকোর্টে।
গরু ও কয়লাপাচারকাণ্ডে ইতিমধ্যেই কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আবার কয়েকজনকে সমন পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। কয়লা পাচারের মূল অভিযুক্ত হিসেবে অনুপ মাঝি ওরফে লালার বিরুদ্ধে হয় লুক আউট নোটিস জারি।
আরও পড়ুন: শরীরের অংশ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে, মাথা কার্যত মিশেছে রাস্তায়, শিউরে উঠলেন হাইওয়ের ধারের দোকানিরা
উল্লেখ্য, কয়লাকাণ্ডের কিনারা পেতে বেশ কয়েকদিন ধরেই কয়লাখনিতে তল্লাশি চালায় সিবিআইয়ের দল। সঙ্গে ছিলেন খনি বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে সিবিআই আধিকারিকের তল্লাশির ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন ওঠে। তদন্তের স্বার্থে তল্লাশি করতে গেলে সিবিআই রাজ্যের অনুমতি আদৌ পাবে কিনা, তা নিয়ে দ্বিধা তৈরি হয়। এরপর ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় সিবিআই। ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের এই সংশয় মিটে যায়। এবার রাজ্যের অনুমতি ছাড়াই তদন্তের স্বার্থে যে কোনও জায়গায় তল্লাশি চালাতে পারবেন সিবিআই আধিকারিকরা।