জেলে গিয়ে দেবাঞ্জনকে জেরা করবে ইডি, অনুমতি দিল আদালত
Fake Vaccine Case: ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডের তদন্ত প্রথমে শুরু করেছিল কসবা থানার পুলিশ।
কলকাতা: ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের মূল পাণ্ডা দেবাঞ্জন দেবকে জেলে গিয়ে জেরার অনুমতি পেল ইডি। তদন্তের স্বার্থে দেবাঞ্জনকে জেরা করতে চেয়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা। বিচারভবনে বিশেষ পিএমএলএ আদালত তাতে অনুমতি দেয়। পুলিশ হেফাজত শেষে জেল হেফাজতে গেলেই জেল কর্তৃপক্ষ জানাবে ইডিকে। তারপর জেলে গিয়ে জেরা করা হবে।
আদালত জানিয়েছে, প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোনও সময় ইডি অফিসারেরা তাঁকে জেরা করতে পারবেন। এর আগে দেবাঞ্জনের সঙ্গীদের জেলে গিয়ে জেরা করেছে ইডি। প্রসঙ্গত, গত ২৬ অগস্ট ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে চার্জশিট পেশ করে কলকাতা পুলিশ। লিপুর আদালতে এক হাজার পাতার এই চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেব-সহ মোট সাতজনের নাম রয়েছে চার্জশিটে। খুনের চেষ্টা, ষড়যন্ত্র, সম্মিলিত প্রতারণা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে দেবাঞ্জন দেব-সহ বাকিদের বিরুদ্ধে। চার্জশিটে নাম রয়েছে দেবাঞ্জন দেব, রবীন শিকদার, সুশান্ত দাস, শরৎ পাত্র, অরবিন্দ বৈদ্য, অশোককুমার রায়, কাঞ্চন দেব ও শান্তনু মান্নার। ১৩০ জন সাক্ষী রয়েছেন এই মামলায়।
ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডের তদন্ত প্রথমে শুরু করেছিল কসবা থানার পুলিশ। পরবর্তী কালে লালবাজারের গোয়েন্দা শাখার হাতে সেই তদন্তভার যায়। দেবাঞ্জন দেব-সহ অনেককেই এই কাণ্ডে গ্রেফতারও করা হয়। এতদিন পর্যন্ত কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা যে তদন্ত চালিয়েছে, তাতে কী কী তথ্য উঠে এসেছে তার বিস্তারিত এদিন আদালতে জানানো হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।
এই ঘটনায় দেবাঞ্জন দেবের কী ভূমিকা ছিল, টিকার নামে যে ভুয়ো তরল দিনের পর দিন সাধারণ মানুষকে শিবির করে দেওয়া হয়েছে তাতে মূলত কী ছিল তার সমস্ত খতিয়ে দেখা হয়েছে কলকাতা পুলিশের তরফে। টিকার ভায়াল পাঠানো হয় পরীক্ষার জন্য।
গত ২২ জুন কসবা ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ড প্রকাশ্যে আসে। ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে মোট চারটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। এর মধ্যে একটি মামলা খারিজ হয়ে যায়। জুুলাই মাসেই দেবাঞ্জন কাণ্ডের তদন্তভার হাতে নিয়েছে ইডি। কলকাতা পুলিশের কাছে রিপোর্ট তলব করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পুলিশের কাছে দেবাঞ্জন-কাণ্ডের বিষয়ে একাধিক তথ্য জানতে চাওয়া হয়।
তদন্তে দেখা গিয়েছে বিপুল টাকা আসত দেবাঞ্জনের কাছে। দেবাঞ্জনের টাকার উৎস কোথায়, সেই টাকা কী ভাবে ব্যবহার করা হত? এ সবই তলিয়ে দেখতে চাইছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এফআইআর-এর সমস্ত কপি খতিয়ে দেখার পরই দিল্লিতে ইডির বিশেষ কমিটির বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জনকে হেফাজতে নিতে পারে ইডি। তার আগে তদন্তের স্বার্থেই এই সব বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া হয়েছে।
জাল ভ্যাকসিন মামলার তদন্তে নেমে ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেব-সহ মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। এদের মধ্যে দেবাঞ্জন ছাড়া আরও ৪ জন বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। বাকিরা আদালতের নির্দেশে রয়েছে সংশোধনাগারে। সবাইকেই জেরা করতে চেয়ে বিশেষ আদালতে আবেদন জানানো হয়েছিল। সেই মোতাবেক অনুমতিও মিলেছে। আরও পড়ুন: ঘরে ছিল কোন ‘গুপ্তধন’? লুঠে বাধা পেয়েই কি খুন? পর্ণশ্রীতে মা-ছেলের রহস্যমৃত্যুতে বিভ্রান্ত তদন্তকারীরা