School Reopening: ‘শিশুমনে প্রভাব পড়ছে, স্কুল খুলুন’, মুখ্যমন্ত্রীকে এবার চিঠি শিশুরোগ চিকিৎসকদের
School: একমাত্র যে সকল শিশু কো-মর্বিড এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাঁদের ক্ষেত্রে স্কুল আসার প্রশ্নে চিকিৎসকদের পরামর্শ বিবেচ্য হতে পারে।
কলকাতা: এবার স্কুল খোলার (School Reopen) আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে (CM Mamata Banerjee) চিঠি লিখল শিশুরোগ চিকিৎসকদের সংগঠন। ধাপে ধাপে স্কুল খোলার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিল শিশুরোগ চিকিৎসকদের সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাকডেমি অব পেডিয়াট্রিকস (West Bengal Academy of Pediatrics)। তাদের বক্তব্য, প্রায় দু’বছর ধরে বন্ধ স্কুল, পার্ক, শিশুদের ক্রীড়াকেন্দ্র। স্কুল শুধুমাত্র শিক্ষার বিকাশ নয়। মনের বিকাশ। বন্ধুদের সঙ্গে মেলামেশার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ। স্কুল বন্ধ থাকায় অনেক শিশুমনের উপর তা প্রভাব ফেলছে। তাই এবার ধাপে ধাপে রাজ্যের স্কুলগুলি খুলে দেওয়া হোক, দাবি শিশুরোগ চিকিৎসকদের। ইতিমধ্যেই স্কুল খোলার দাবি নিয়ে চার চারটি মামলা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। সেখানে রাজ্য স্কুল খোলার জন্য আরও কিছুটা সময় চেয়েছে। তবে বিভিন্ন মহলের মতে, স্কুল বন্ধ রেখে শিক্ষার অধিকারের মতো মৌলিক অধিকার যেমন খর্ব করা হচ্ছে, তেমনই আগামী প্রজন্মের বুনিয়াদও নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে। যা আগামীর জন্য মোটেই খুব একটা ভাল নয়।
শিশুরোগ চিকিৎসকদের সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাকডেমি অব পেডিয়াট্রিকস যে চিঠি দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে অনলাইন ক্লাস দীর্ঘদিন বিকল্প হতে পারে না। শিশুদের ক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণ যে মৃদু অসুখেই সীমাবদ্ধ থাকছে, সেই তথ্য এখন রয়েছে। শিশুদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থতার হার মাত্র ২.৫-৩ শতাংশ। বাংলায় ০-১৫ বছরের মধ্যে মৃত্যুহার মাত্র ০.০৮%। স্কুল খোলার ফলে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বেড়েছে এমন নজিরও নেই। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিলে স্কুল থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি যে কম একাধিক গবেষণায় তা দেখা গিয়েছে।
একমাত্র যে সকল শিশু কো-মর্বিড এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাঁদের ক্ষেত্রে স্কুল আসার প্রশ্নে চিকিৎসকদের পরামর্শ বিবেচ্য হতে পারে। বাকিদের ক্ষেত্রে স্কুলে আসতে বাধা নেই। টিকা ছাড়া শিশুদের স্কুলে পাঠানো যাবে না, এমন ভাবনাও ঠিক নয় বলে দাবি একাংশের। নিঃসন্দেহে শিশুরোগ চিকিৎসকদের এই চিঠি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। সূত্রের খবর, এই সংগঠন বিভিন্ন অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। একইসঙ্গে কোভিড নিয়ে বাংলা ও গোটা দেশে কিংবা বিশ্বস্তরে যে তথ্য আছে সেগুলি বিশ্লেষণ করে দু’পাতার একটি চিঠি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লিখেছে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে স্কুল খোলা নিয়ে জনস্বার্থ মামলার শুনানি ছিল। সেখানে রাজ্যের তরফে এজি সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, স্কুল খুলতে রাজ্যের আগ্রহ পুরোপুরি রয়েছে। স্কুলে গিয়ে ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করুক, রাজ্যও তাই চায়। কিন্তু সরকারকে যখন কোনও সিদ্ধান্ত নিতে হয়, অনেক কিছু ভাবতে হয়। পুজোর ছুটির পরে স্কুল খুলতে গেলে উল্টে মামলা করা হয়েছিল, কেন স্কুল খোলা হচ্ছে তা নিয়ে। ছোটদের টিকাকরণ শুরু হলেও ১৫-১৮ বছর বয়সী এমন ৪৫ লক্ষের উপর ছাত্র ছাত্রী রয়েছে যাদের টিকা দিতে হবে। এখনও অবধি ৩৩ লক্ষের কিছু বেশি টিকার প্রথম ডোজ় পেয়েছে। জেলাগুলি এক্ষেত্রে অনেকটাই পিছনে। তাই আরও কিছুটা সময় দরকার।