আব্বাসের অপেক্ষায় বাম-কংগ্রেসের জোট বৈঠক বাতিল, তবে জট অব্যাহত
বাকি ১০১টি আসনের মধ্যে আর একটিও আসন ছাড়তে রাজি নয় বামেরা। ফলে আব্বাস যদি কোনও ভাবে ২৫টি আসনের শর্তে রাজি হয়েও যান, সেগুলো কংগ্রেসকেই ছাড়তে হবে, বামেদের দাবি এমনটাই।
কলকাতা: পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির (Abbas Siddique) জন্য জোটের দরজা খোলা রাখছে বাম-কংগ্রেস (Left-Congress)। সেই ইঙ্গিত আরও স্পষ্ট করে আগামিকালের পূর্ব নির্ধারিত জোট বৈঠক বাতিল করা হয়েছে। কোনও ভাবেই আব্বাসকে চটিয়ে জোটের আসন রফা করতে চাইছেন না বিমান-অধীররা। আব্বাসের সিদ্ধান্তের জন্যই অপেক্ষা করেই পূর্ব নির্ধারিত এই বৈঠক আপাতত স্থগিত রাখা হল বলে মনে করা হচ্ছে।
১৯৩ টি আসনের ভাগাভাগি ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত করে ফেলেছে বাম-কংগ্রেস নেতৃত্ব, বাকি রয়েছে ১০১। একাধিক বৈঠকের পর এই আসনগুলি নিয়ে পাকা সিদ্ধান্তে এসেছে দুই দল। তবে আব্বাসের ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টকে পাশে পাওয়ার আগ্রহ আগাগোড়াই এই দুই শিবিরে দেখা গিয়েছে। সূত্রের খবর, আব্বাস সিদ্দিকি বাম-কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে কমপক্ষে ৪৪টি আসনের দাবি জানিয়েছিলেন। যদিও জোটসঙ্গীরা ২২ থেকে বড়জোর ২৬টি আসনের বেশি ছাড়তে রাজি নয় বলেই খবর সূত্রের। এই অবস্থায় কাস্তে-হাতুড়ির প্রস্তাবে আব্বাস আদৌ রাজি হবেন কিনা, সেই বড় প্রশ্নটা রয়ে গিয়েছে। এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার অপেক্ষাতেই পূর্ব নির্ধারিত এই বৈঠক বাতিল করা হয়েছে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। এমন একটা সময় যখন বাম-কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে জোট নিয়ে আব্বাসের আলোচনা চলছে, তখন যদি বাকি আসনগুলির ফয়সালা করতে বৈঠকে বসা হয়, তখন ভুল বার্তা যেতে পারে। তাই বাকি আসন রফা নিয়ে কোনও তাড়াহুড়ো করতে চাইছে না হাত-হাতুড়ি।
আব্বাস যে জোটে আসতে চান, সে ইঙ্গিত তিনি নিজেই একাধিকবার দিয়েছেন। ফলে যতক্ষণ না আসন ভাগাভাগি নিয়ে জট কাটছে, ততক্ষণের জন্য পরবর্তী বৈঠক স্থগিত রাখা হবে বলেই খবর সূত্রের। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি আবার ব্রিগেডে সভা রয়েছে বাম-কংগ্রেসের। ততদিনে যদি জট না কাটে, তবে সঠিক বার্তা যাবে না। সেই কথাও ভাবাচ্ছে দুই শিবিরকে।
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর তৃণমূল ছাড়ার আসল কারণ জানালেন অভিষেক
আব্বাস কত সংখ্যক আসন পেলে রাজি হবেন তা অবশ্য পরের কথা। কিন্তু, বাম-কংগ্রেসের মধ্যে জটিলতা এখনও অব্যাহত। কেননা, বাকি ১০১টি আসনের মধ্যে আর একটিও আসন আব্বাসকে ছাড়তে রাজি নয় বামেরা। ফলে আব্বাস যদি কোনও ভাবে ২৫টি আসনের শর্তে রাজি হয়েও যান, সেগুলো কংগ্রেসকেই ছাড়তে হবে, বামেদের দাবি এমনটাই। জোটের চিন্তা বাড়িয়ে রেখেছে মালদা জেলাও। সেখানে যেহেতু কংগ্রেস শক্তিশালী, তাই তারা বামেদের একটিও আসন ছাড়তে রাজি নয়। আব্বাস সিদ্দিকি আবার জানিয়ে রেখেছেন, তিনি মালদা জেলার ৬টি আসনে যেনতেন প্রকারে প্রার্থী দেবেন। ফলে বাম-কংগ্রেস ও আব্বাসের এই জোট শেষ পর্যন্ত কেমন আকার ধারণ করবে, তা নিয়ে কৌতূহল বেড়েই চলেছে।
আরও পড়ুন: ‘অনেক হয়েছে মমতা, পরিবর্তন চাইছে জনতা’, রথ যাত্রার শুরুতেই নাড্ডার হুঙ্কার
অন্যদিকে, কংগ্রেসও আবার ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে বসতে চলেছে বাকি শরিক দলগুলির সঙ্গে। যেখানে যেখানে সমন্বয়ে সমস্যা হচ্ছে তা মিটিয়ে ফেলতে প্রথমে তারা সিপিএম-র সঙ্গে বৈঠকে বসবে বলে খবর। এরপর ধাপে ধাপে ফরওর্য়াড ব্লক ও আরএসপি-র সঙ্গেও বৈঠকে বসা হবে। নির্বাচনের আগে যত সত্ত্বর সম্ভব জট কাটিয়ে নিতে এই বৈঠক নির্ণায়ক ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।