উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ থেকে ‘অপসারিত’ মহুয়া দাস, ‘মুসলিম কন্যা’ বিতর্কের জেরেই কি এই সিদ্ধান্ত?

শিক্ষাবিদ থেকে রাজনৈতিক মহল, সকলেই একলপ্তে একজন ছাত্রীর ধর্মীয় পরিচিতি উল্লেখ করা নিয়ে নিন্দায় সরব হয়।

উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ থেকে 'অপসারিত' মহুয়া দাস, 'মুসলিম কন্যা' বিতর্কের জেরেই কি এই সিদ্ধান্ত?
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Aug 13, 2021 | 2:56 PM

কলকাতা: উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি পদ থেকে সরানো হল মহুয়া দাসকে। উচ্চ মাধ্যমিকের ফল ঘোষণার দিন তাঁর বক্তব্য ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়। সংসদ সূত্রে খবর, প্রথম থেকেই বিষয়টি ভাল ভাবে নেয়নি নবান্ন। এসবের মধ্যেই নতুন সভাপতির নাম ঘোষণা করল সংসদ। নব নির্বাচিত উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য।

গত ২২ জুলাই এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ হয়। যেহেতু করোনার কারণে এ বছর পরীক্ষা নেওয়া হয়নি, তাই মূল্যায়ণ পদ্ধতিতেও বেশ কিছু বদল আসে। এ বছর পরীক্ষার যে ফলাফল, তা একাদশের ফাইনাল পরীক্ষার নম্বর, প্র্যাকটিকালের নম্বর ও মাধ্যমিকের নম্বর যোগ করে তৈরি হয় চূড়ান্ত ফল। ফল প্রকাশের পরই দেখা যায় মুর্শিদাবাদের এক ছাত্রী প্রথম হয়েছেন। নাম রুমানা সুলতানা। রুমানার নাম ঘোষণা করতে গিয়ে সেদিন বার বার মহুয়া দাসের মুখে উঠে এসেছিল ‘মুসলিম কন্যা’ শব্দটি।

মহুয়া দাস বলেছিলেন, “সর্বোচ্চ নম্বরের ভিত্তিতে একটা ইতিহাস সংসদে হয়েছে। সেটা একটু বলতে ইচ্ছা করছে। যিনি এককভাবে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন, তিনি একজন মুসলিম কন্যা। মুসলিম, মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে। একজন মুসলিম মেয়ে। তিনি এককভাবে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন।” ঠিক তিনবার মুসলিম কথাটি বলতে শোনা যায় তাঁকে। যা নিয়ে নানা মহলে সমালোচনা শুরু হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এর তীব্র নিন্দা করে। শাসকদলের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “একজন ছাত্রী ভালো ফল করেছে তাঁর মেধার ভিত্তিতে। ধর্মের ভিত্তিতে নয়। উচ্চমাধ্যমিক সংসদের সভাপতি যা বলেছেন তাকে আমি সমর্থন করি না। অত্যন্ত অন্যায় হয়েছে। মেধা দিয়ে সবপথ অতিক্রম করা যায়। ধর্ম নিয়ে কিছু করা যায় না। ওই ছাত্রী মেধার ভিত্তিতে নিজেকে সবার সেরা করেছে। তাই এই ধরনের বক্তব্য অত্যন্ত অনুচিত।” নবান্ন এই বিষয়টি ভাল ভাবে নেয়নি। মহুয়া দাসকে সেখানে ডেকেও পাঠানো হয়। এরই মধ্যে শুক্রবারের এই সিদ্ধান্ত।

এ প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ বলেন, “সরাসরি সরকার তো জানায়নি যে কী কারণে মহুয়া দাসকে সরানো হল। তবু আমরা যদি ধরে নিই ওই ঘটনার জন্যই সরানো হয়েছে নিঃসন্দেহে এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাচ্ছি। আমরাও ওনার অপসারণ দাবি করেছিলাম। যতই আবেগ, বেগম রোকেয়ার কথা পড়ছে জাতীয় কথা বলুন না কেন, আমার খুব জানতে কৌতূহল হয় ওনাকে কেউ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নাম জানতে চাইলে উনি কি বলেন ‘উনি একজন ভবানীপুরের হিন্দু লেডি’। নিশ্চয়ই বলেন না।”

নতুন সংসদ সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য সোমবারই নিজের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “সরকার আমাকে একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছে। আমি সবরকম ভাবে তা পালনের চেষ্টা করব।” আরও পড়ুন: আত্মনির্ভর ভারত গড়ার লক্ষ্যে নমোর মাস্টারস্ট্রোক, স্ক্রাপেজ নীতির খুঁটিনাটি বোঝালেন প্রধানমন্ত্রী