মইদুলের পরিবারকে চাকরি ও আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস মমতার, সঙ্গে তুললেন প্রশ্নও
মৃত্যুকে 'দুঃখজনক' আখ্যা দিয়ে মমতা জানান, তিনি সুজন চক্রবর্তীকে ফোন করেছিলেন। এবং সবরকমভাবে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।
কলকাতা: নবান্ন অভিযানে গিয়ে পুলিশের লাঠির ঘায়ে তিনি আহত হয়েছিলেন বলে অভিযোগ। গত চারদিন ধরে লড়ে সোমবার মৃত্যু হয়েছে কোতলপুরের ডিওয়াইএফআই-এর নেতা মইদুল ইসলাম মিদ্যার। যা নিয়ে এ দিন নবান্ন সভাঘরে এক সাংবাদিক বৈঠকে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মৃত্যুকে ‘দুঃখজনক’ আখ্যা দিয়ে মমতা জানান, তিনি সুজন চক্রবর্তীকে ফোন করেছিলেন। এবং সবরকমভাবে মইদুলের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। সঙ্গে কিছু প্রশ্নও তুলে দিয়েছেন মমতা।
এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে এ দিন মমতা বলেন, “সব মৃত্যুই দুঃখজনক। সুজন চক্রবর্তীকে আমি সকালে ফোন করেছিলাম। বলেছি এটা দুঃখজনক। কীভাবে মারা গেল সেটা ময়নাতদন্তের পর বোঝা যাবে। তারা পুলিশকে কোনও অভিযোগ জানায়নি। তাঁদের বাড়ির লোককেও জানানো হয়নি দু’দিন আগে।” তবে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন, “এর তিনদিন আগে যে ছেলেটা ভর্তি হল তাঁদের বাড়ির লোককে জানানো হবে না? পুলিশকে জানানো হবে না?”
যদিও শেষে আশ্বাসের সুরে মমতা বলেছেন, “আমি সুজন চক্রবর্তীকে বলেছি। যেভাবেই মারা যাক, ওদের গরিব পরিবার। আমি আর্থিক সাহায্য বা পরিবারকে চাকরি দিতে তৈরি।” যে ভাবেই মৃত্যু হয়ে থাক না কেন। তার প্রকৃত তদন্ত হবে বলেই এ দিন দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।”
অন্যদিকে, কর্মীর মৃত্যুর বিরুদ্ধে সরব হয়ে ইতিমধ্যেই পথে নেমেছেন ডিওয়াইএফআই কর্মীরা। সোমবার বিকেলে ডিওয়াইএফআই দফতরে পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাধে দলীয় কর্মীদের। এই নিয়ে বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী দাবি করেছেন, “পুলিশের নৃশংস আক্রমণে খুন হয়েছে মইদুল ইসলাম মিদ্যা। নারকীয় এই ঘটনায় নিন্দার কোনও ভাষা নেই। ছাত্র যুবদের ঘিরে ধরে যে ভাবে সে দিন মারা হল জালিয়ানওয়ালাবাগের স্মৃতি উস্কে দেয়। এটা কী চলছে বাংলায়? যে ভাবে সে দিন পুলিশ ওকে ঘিরে ধরে মারল এটা সাধারণ মৃত্যু নয়, খুন। নবান্ন অভিযানে শহিদ মইদুল। এ তো সুদীপ্ত গুপ্তর মৃত্যু মনে করাচ্ছে। কত নৃশংস হতে পারে পুলিশ তা বোঝা যাচ্ছে। কত লাশ চাই সরকারের যে একটা জলজ্যান্ত ছেলেকে লাশ বানিয়ে দিল!”
আরও পড়ুন: ‘ও কোনও দল করত না, ওকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল’, বিস্ফোরক মইদুলের বোন
যদিও মুখ্যমন্ত্রী যে তাঁকে ফোন করেছিলেন সে বিষয়ে কিছু বললেননি যাদবপুরের বিধায়ক। কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেন, “জল্লাদের সরকার চলছে। কীভাবে নিন্দা করব জানি না। এই সরকার হত্যাকারীর সরকার।”
আরও পড়ুন: ‘আমি আর বাঁচবুনি…’, মিলে গেল মইদুলের শেষ কথা
অন্যদিকে শাসক দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কথায়, “মইদুল আহত হওয়ার পর কোথায় চিকিৎসাধীন ছিলেন, কারা চিকিৎসা করেছেন, কী চিকিৎসা হয়েছে, তাঁর আর কোনও শারীরিক সমস্যা ছিল কি না, সঠিক চিকিৎসা হয়েছে কি না- এইসব তথ্য যতক্ষণ না সামনে আসছে এক বাক্যে বলা সম্ভব নয় যে নির্দিষ্টভাবে ওই কারণেই মারা গিয়েছেন।”
আরও পড়ুন: মইদুলের মৃত্যুতে শরীর অবশ হয়ে যাচ্ছে সরস্বতীর, তাঁর স্বামীও যে পাঁচদিন ধরে নিখোঁজ