শর্তপূরণ করতে পারলেই বাংলার সব মহিলারাই ‘লক্ষ্মী’, নবান্নে বড় ঘোষণার মমতার
তিনি বলেন, "সরকারি চাকরি করেন আর পেনশন পান, এ বাদে যে কোনও মা-বোনেরা এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে পারেন। যারা স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করেছেন তাঁরা তো সেই কার্ড দেখালেই ফর্ম পেয়ে যাবেন।"
কলকাতা: শর্তপূরণ করতে পারলে বাংলার সব মহিলাই ‘লক্ষ্মী’। বুধবার নবান্নে বসে আবারও বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়ে দিলেন, যদি কেউ সরকারি চাকরি না করেন, বা পেনশনভোগী না হন, তাহলে পরিবারের সকল মহিলারাই লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করাতে পারবেন। বুধবার নবান্নে বসে জানিয়ে দিলেন মমতা।
তিনি বলেন, “সরকারি চাকরি করেন আর পেনশন পান, এ বাদে যে কোনও মা-বোনেরা এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে পারেন। যারা স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করেছেন তাঁরা তো সেই কার্ড দেখালেই ফর্ম পেয়ে যাবেন। যারা স্বাস্থ্যসাথী কার্ড এখনও করতে পারেননি তাঁরা পরিবার হিসেবে করে নিন। এই কার্ড তো বাড়ির সবথেকে বয়স্ক মহিলা যিনি তাঁর নামে হবে। কিন্তু ধরুন সেই বাড়িতেই আরও ৩ জন মহিলা রয়েছে। যাদের বয়স ২৫ থেকে ৬০-এর মধ্যে পড়ছে। তাঁদের নামে হয়তো স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নেই। কিন্তু বাড়ির অভিভাবকের নামে থাকলেও ওই বাড়ির বউরা এর সুবিধা পাবে।”
এর পাশাপাশি দুয়ারে সরকারের ক্ষেত্রে ক্যাম্পগুলিতে অতিরিক্ত ভিড়ের কথা মাথায় রেখে এই কর্মসূচির সময়সীমা আগামী দিনে বাড়ানো হতে পারে বলেও এ দিন ইঙ্গিত দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নতুন প্রকল্পের জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখে তিনি রাজ্যবাসীকে পরামর্শ দেওয়া সুরে বলেছেন, শিবিরে বেশি ভিড় করবেন না। কারণ, কোভিড বিধি চলছে। হাতে এক মাস সময় রয়েছে। ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে। প্রয়োজনে এর মেয়াদ আরও ৩-৪ দিন বাড়ানো হবে।
একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আবারও মনে করিয়ে দিয়েছেন, কেউ যেন দুয়ারে সরকার ক্যাম্প বাদে অন্য কোথাও থেকে লক্ষ্মীর ভান্ডারের ফর্ম সংগ্রহ না করেন। ইতিমধ্যেই রাজ্যের একাধিক জেলায় এই ঘটনা ঘটতে দেখা গিয়েছে যেখানে পুরসভা থেকে বা অন্যান্য পথে আগেভাগে ফর্ম বিলি করা হচ্ছে। এই ধরনের পদ্ধতি এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন মমতা। তিনি জানান, রাজ্যে এই মুহূর্তে দুয়ারে সরকারের জন্য রাজ্যজুড়ে ২ হাজার ৬৫০ টি ক্যাম্প চলছে। মাত্র ৩ দিনেই ৪৬ লক্ষ আবেদনপত্র জমা পড়েছে। তাই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, “ক্যাম্প ছাড়া অন্য কোথাও থেকে ফর্ম নেবেন না। ওই ফর্মে রয়েছে ইউনিক নম্বর। সেই নম্বরের ফর্ম পূরণ করেই জমা দিতে হবে।”
মুখ্যমন্ত্রী জানান, “এই ফর্ম কোনও ভাবে জেরক্স বা ডুপ্লিকেট করা যাবে না। এই ফর্ম ছাড়া অন্য কোনও ফর্ম নেওয়াও হবে না। কেউ যাতে এই ফর্মের অপব্যবহার করতে না পারে তার জন্যই এই ব্যবস্থা।”
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “ফর্মটা পাওয়ার পর আপনারা ওখানেই ফর্মটা ফিলআপ করে জমা দেবেন। মনে রাখবেন, ফর্মের সঙ্গেই কম্পিউটার জেনারেটেড ইউনিক নম্বরটা থাকবে। এটার সঙ্গে আধার কার্ডও লিঙ্ক করে দেওয়া হবে। এই নম্বরটাই ফর্ম ফিলাপের জন্য স্বীকার্য হবে। ঘুরপথে যদি কেউ অন্যভাবে ফর্ম জোগাড় করে তা জমা দেওয়ার চেষ্টা করে, সেটা কিন্তু মেনে নেওয়া হবে না। শুধুমাত্র দুয়ারে সরকার শিবির থেকেই ফর্ম নিতে হবে।”
গোটা প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে যদি কোনও বেনিয়মের অভিযোগ থাকে, তার জন্য পৃথক হেল্পলাইন নম্বরও চালু করেছে রাজ্য। এই নম্বরটি সোজা মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। ১০৭০ অথবা ২২১৪ ৩৫২৬- এই টোল-ফ্রি নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানালেই সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। আরও পড়ুন: ৩ মন্ত্রীকে বেদম ঝাড়! প্রশাসনিক বৈঠকে রুদ্রমূর্তি মমতার