Mamata Banerjee: ‘খুব মিস করছি, একরাশ দুঃখ নিয়ে আসা’, ‘সুব্রতদা’র পুজোয় এসে আবেগঘন মমতা
Mamata Banerjee: একডালিয়া এভারগ্রিনে দুর্গাপুজোর মণ্ডপ উদ্বোধন করতে এসেছিলেন মমতা। কিন্তু এবার সুব্রত মুখোপাধ্যায় নেই। তাঁর স্মৃতিতে আবেগঘন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কলকাতা: একডালিয়া এভারগ্রিনে পুজো এবার ‘অভিভাবকহীন’। পুজো হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবার আর নেই। মঙ্গলবার একডালিয়া এভারগ্রিনের পুজো উদ্বোধন করতে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের একটি মূর্তিও উন্মোচন করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী জানান, যে মূর্তি উন্মোচিত হল তা অস্থায়ী রূপে। তিন মাসের মধ্যে নতুন মূর্তি তৈরি করে তা ম্যান্ডেভিলা গার্ডেনে বসানো হবে। পুজোর উদ্বোধনের পর সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণায় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “যে মানুষটা পুজো নিয়ে মেতে থাকতেন, যেটা ছিল তাঁর প্রাণ, যে পুজো নিয়ে আমার সঙ্গে ঝগড়া করতেন, তা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। আমি গতকাল বালিগঞ্জের অনেক পুজোতে গিয়েছি। সব জায়গায় সুব্রতদাকে মিস করেছি।”
সুব্রত মুখোপাধ্যায় মমতার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সঙ্গী। শুধু রাজনীতি নয়, ব্যক্তি সুব্রত মুখোপাধ্যায়কেও মমতা খুব পছন্দ করতেন। তৃণমূল কংগ্রেসের সূচনালগ্ন থেকেই তিনি রয়েছেন মমতা সঙ্গে। তার আগে একসঙ্গে কংগ্রেস করেছেন। মমতার ‘রাজনৈতিক অভিভাবক’ হিসেবে যাঁদের ভূমিকা অপরিসীম, তাঁদের মধ্যে সুব্রত মুখোপাধ্যায় অন্যতম। তিনি বলেন, “যাঁর হাত ধরে রাজনীতি করেছি। সেই ছোট থেকে রাজনীতি করেছি। সুব্রতদার বাড়িতে চলে আসতাম। বৌদি জানে। আমার মনটা খুব খারাপ। খুব মিস করছি। একবারে মনের মানুষ ছিলেন।”
সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক যে রাজনীতিকে ছাপিয়ে অনেক বেশি পারিবারিক হয়ে গিয়েছিল, সেই কথাও এদিন বার বার ঘুরে ফিরে আসে মমতার কথায়। সুব্রত বাবুর স্মৃতিতে আবেগঘন মমতা বললেন, “আমি জেলায় গেলে বলতেন, আমার জন্য কটকটি কিনে এনেছিস? আমায় লুকিয়ে সুব্রত দাকে সাপ্লাই করতে হত। নইলে বৌদি বকবে। আমার এখানে আসা মনে একরাশ দুঃখ নিয়ে আসা।” মুখ্যমন্ত্রী সেই সঙ্গে আরও বলেন, “ওদের গ্রেফতার করেছে শুনে সিবিআই অফিসে ছুটে গেলাম। আমার বিরুদ্ধেও তো কেস করে দিল। আমায় ববি আসতে আসতে বলল, জেলে গিয়ে সুব্র দার বুকে ব্যাথা ওঠে। অনেককে এই অসম্মান ভোগ করতে হচ্ছে। মা গো শক্তি দাও, যাতে সুব্রত দা এই অসম্মানের বিরুদ্ধে লড়াই করে জিতে আসতে পারেন। আমি মনে করি, সুব্রতদার আত্মা এখানেই বিচরণ করছে।”
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “জেলে যখন বুকে ব্যথা ওঠে তখন ববি সুব্রতদা কে বলেছিলেন, হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হন। কিন্তু সুব্রতদা ববিকে বলেছিলেন, ববি আমি খুব অসম্মানিত হয়েছি। আমাকে একটা বন্দুক দে। আমি নিজেকে গুলি করে শেষ করব। অন্য গুলিতে যারা আমায় অসম্মানিত করেছে তাদের শেষ করব।”