তৃণমূল আমার প্রয়োজন বোধ করেছে…এবার পুরনো ময়দানে ফিরব, টিকিট পেয়েই প্রত্যয়ী গর্জন মনোরঞ্জন ব্যাপারীর

কিছুদিন আগেই পশ্চিমবঙ্গে গঠিত হয়েছে দলিত সাহিত্য আকাদেমি। এই আকাদেমির শীর্ষ পদে রয়েছেন সাহিত্যিক মনোরঞ্জন ব্যাপারী (Manoranjan Byapari)। এই পদ পেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।

তৃণমূল আমার প্রয়োজন বোধ করেছে...এবার পুরনো ময়দানে ফিরব, টিকিট পেয়েই প্রত্যয়ী গর্জন মনোরঞ্জন ব্যাপারীর
তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় সাহিত্যিক মনোরঞ্জন ব্যাপারীর নাম
Follow Us:
| Updated on: Mar 06, 2021 | 12:13 PM

অরুণাভ রাহারায়: খানাখন্দে ভরা এক জীবনে এ বার নতুন জোয়ার। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী (Trinamool candidate) হচ্ছেন সাহিত্যিক মনোরঞ্জন ব্যাপারী (Manoranjan Byapari)। হুগলি জেলার বলাগড় থেকে প্রার্থী হচ্ছেন তিনি। আজ সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা ঘোষণা করেন স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বলেন, “বলাগড়ের প্রার্থী মনোরঞ্জন ব্যাপারী। তিনি দলিত সাহিত্য আকাদেমির প্রেসিডেন্ট। জীবনে অনেক দিন রিকশা চালিয়েছেন। রান্নার কাজ করেছেন। আমি তাঁকে নিয়ে এসেছি এখানে। অনেক বই লিখেছেন। খুব গুরুত্বপূর্ণ মানুষ।”

মনোরঞ্জন ব্যাপারীর লেখায় উঠে আসে দলিত মানুষের জীবন। কৃষক-শ্রমিক-শ্রমজীবী মানুষের হয়ে কথা বলে তাঁর লেখা। এক সময় রিকশা চালাতেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী। একদিন হঠাৎ মহাশ্বেতা দেবীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এরপর মহাশ্বেতা দেবীর অনুপ্রেরণায় তিনি সাহিত্য জগতে আসেন। পরবর্তীতে সাহিত্য রচনায় ব্রতী হন মনোরঞ্জন ব্যাপারী। দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসতে থাকে স্বীকৃতি। নানা অনুষ্ঠানেও যোগ দিয়েছেন তিনি। আমন্ত্রণ পেয়েছেন বাংলাদেশে থেকেও। তাঁর একাধিক সৃষ্টি অনূদিত হয়েছে ইংরেজি ভাষায়। ‘ইতিবৃত্তে চণ্ডাল জীবন’, ‘বাতাসে বোরুদের গন্ধ’, ‘ছন্নছাড়া’ বইয়ের জন্য ২০১৮ সালে দ্য হিন্দু প্রাইজ পান। লেখক হিসেবে সারা ভারতের পাঠকের কাছেই তাঁর পরিচিতি।

নিজের প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে মনোরঞ্জন ব্যাপারী TV9 বাংলাকে বলেন, “লড়তে হবে। আমি ওই ময়দানের লোক। সাহিত্যে পরে এসেছি। আমি ছত্তিশগড় মুক্তি মোর্চার লোক। শঙ্কর গুহ নিয়গীর সঙ্গে কাজ করেছি। কাজেই রাজনীতির ময়দান আমার অচেনা নয়। মাঝে লেখালিখি নিয়ে ছিলাম। এ বার পুরনো ময়দানে ফিরে যাব।”

তিনি আরও বলেন, “মৌলবাদ, ব্রাহ্মণ্যবাদ, পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে আমার আজীবন লড়াই ছিল। এ বারও এ সবের বিরুদ্ধে লড়ব। আগে আমি লিখতাম। সেটাও একটা লড়াই ছিল। এ বার মঞ্চে মঞ্চে বলব। লিখে মানুষকে সচেতন করেছি, এ বার মানুষের জন্য কাজ করব। সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখতে হবে। এটাই আমার কাজ। আমি সারাজীবন বিজেপির আদর্শের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। তবে সেটা ছিল আমার একার ক্ষুদ্র শক্তি। আজ আমি সংগঠিত শক্তি পেয়েছি। একটা বড় দল আমার প্রয়োজন বোধ করেছে। আমাকে এগিয়ে দিয়েছে। এতে আমি বলপ্রাপ্ত হয়েছি। আমি দলিত দরিদ্র মানুষের প্রতিনিধি। কৃষক শ্রমিক শ্রমজীবী মানুষের প্রতিনিধি। আমি এ বার ভোটে দাড়িয়ে সেইসব মানুষের লড়াইকেই এগিয়ে নিয়ে যাব। বিধানসভার ভেতরে তাদের জন্য কথা বলব।”

কিছুদিন আগেই পশ্চিমবঙ্গে গঠিত হয়েছে দলিত সাহিত্য আকাদেমি। এই আকাদেমির শীর্ষ পদে রয়েছেন সাহিত্যিক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। এই পদ পেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। এরপর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা। এ বার বিধানসভা নির্বাচনের প্রার্থী তালিকায় উঠে এল মনোরঞ্জন ব্যাপারীর নাম।