CPIM Joining in West Bengal: দলে দলে ‘দলবদলু’ ঢুকছে সিপিএমে, কোন ছাঁকনিতে ছাঁকছে আলিমুদ্দিন?
CPIM Joining in West Bengal: সুজন চক্রবর্তী বলেন, আগে বাংলায় পতাকা ধরার কালচার ছিল না। এসব চালু করেছে তৃণমূল ও বিজেপি।
কলকাতা: এক দলের ‘চোর’, আর এক দলে গিয়ে হয়ে যায় ‘সাধু’! সম্প্রতি ধরনা মঞ্চে আস্ত ওয়াশিং মেশিন তুলে নিয়ে গিয়ে এই তত্ত্বই বুঝিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। তারপরই কেউ কেউ কটাক্ষ করে বলছেন, সব পাখি মাছ খায়, দোষ শুধু মাছরাঙার? সাগরদিঘির উপ নির্বাচন পরবর্তী রাজনৈতিক আবহে দলে দলে বামে যোগ দেওয়ার হিড়িক দেখা যাচ্ছে জেলায় জেলায়। সোমবারই নদিয়ার তেহট্টে অন্তত ৬০ টি পরিবার তৃণমূল ছেড়ে যোগ দিয়েছে সিপিএমে। রয়েছে পঞ্চায়েত সদস্যার পরিবারও। এ রাজ্যে ভোট এলেই দলবদলের হিড়িক নতুন নয়। বিধানসভা নির্বাচনের আগে অনেক বড় বড় নেতার গায়ে দলবদলু-র তকমা পড়েছিল। ভোট মিটতে ‘ঘরে ফেরা’র নজিরও সামনে এসেছে। এবার বামেদের নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। দরজা কি সবার জন্য খোলা? নাকি নীতি মেনে দলবদল? যাদের গায়ে দুর্নীতির দাগ, তারাও বেনোজলে এসে ঢুকে পড়ছে না তো?
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর দাবি, যাকে খুশি দলে নেওয়া হচ্ছে না। জীবনযাত্রা, চলাফেরা সব দেখেই বিবেচনা করা হচ্ছে। আর হাতে পতাকা নিলেই যে দলের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া যাবে, এমনটা নয় বলেও দাবি করেছেন তিনি। সুজন চক্রবর্তী বলেন, আগে বাংলায় পতাকা ধরার কালচার ছিল না। এসব চালু করেছে তৃণমূল ও বিজেপি। কেউ কেউ খানিকটা বাধ্য হয়েই পতাকা ধরেছিলেন তৃণমূলের। তাঁদের মধ্যে অনেকেই তৃণমূলকে আর ভরসা করতে পারছে না। তাই চলে আসছেন। এতে কোনও নতুনত্ব নেই। তাঁর দাবি, যত মানুষকে পতাকা ধরতে বা দলবদল করতে দেখা যাচ্ছে, তার থেকে অনেক বেশি মানুষ সমর্থন করছেন বামেদের।
তাঁর দাবি, বড় অংশের মানুষ যাঁরা বীতশ্রদ্ধ হয়েছেন বা বুঝেছেন বামপন্থা ছাড়া বিকল্প নেই, তাঁরাই দলে দলে যোগ দিচ্ছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, দলীয় নীতি মেনেই নতুন সদস্যদের নেওয়া হচ্ছে। যাঁদের কাছে ব্যক্তি স্বার্থের থেকে সমাজের স্বার্থ বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তাঁরাই অগ্রাধিকার পাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
নদিয়ায় সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সুমিত বিশ্বাস বলেন, আমরা ওদের মতো ওয়াশিং মেশিন নই। যারা উপলব্ধি করতে পারছে যে তৃণমূল ও বিজেপি- এই দুই দল বিপজ্জনক, তারাই চলে আসছে।
সিটু নেতা সুমিত চাকির দাবি, তৃণমূল-বিজেপির প্রতি মানুষের মোহভঙ্গ হচ্ছে। গোটা রাজ্যের মানুষ কন্ঠরোধ করা হচ্ছে। দুর্নীতির পরিকাঠামোয় মানুষ বীতশ্রদ্ধ। তাই ভুল বুঝতে পেরে পুরনো কর্মীরা ফিরছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
আর যাঁরা যোগ দিলেন, তাঁরা কী বলছেন? দলবদল করা পঞ্চায়েত সদস্যা নুরজাহান বিবি বলেন, দলের হয়ে নাকি ভোট চাইতে যেতে পারবেন না তিনি, তাই এই সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, “তৃণমূল এখন দুর্নীতিতে ভরা। এই দলের হয়ে ভোট চাইতে যেতে পারব না। আর বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে তৃণমূলের লড়ারও ক্ষমতা নেই। সিপিআইএম একমাত্র বিকল্প। তারাই পারবে লড়াই করতে। তাই এই দলে যোগ দিলাম।”
তবে তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা বলছেন, তৃণমূল থেকে যেমন অনেকে সিপিএমে যোগ দিয়েছেন। আবার উল্টোটাও হয়েছে। অর্থাৎ অনেকে সিপিএম থেকে তৃণমূল যোগ দিচ্ছেন বলে দাবি করেছেন তিনি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজনীতির পারদ যে ক্রমশ চড়ছে, তা স্পষ্ট।