AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘মেসি’র স্বপ্ন বড় হয়ে কমান্ডো হওয়ার, পাচারকারীদের ছুঁড়ে ফেলতে চায় এই পাহাড়ি বিছে

উত্তরবঙ্গের এক পাহাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ওই কিশোর শুক্রবার এক ঘন্টার জন্য কমিশনের চেয়ার পার্সন হয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজাকে চিঠি লেখে।

'মেসি'র স্বপ্ন বড় হয়ে কমান্ডো হওয়ার, পাচারকারীদের ছুঁড়ে ফেলতে চায় এই পাহাড়ি বিছে
নিজস্ব চিত্র।
| Edited By: | Updated on: Jul 31, 2021 | 10:04 AM
Share

সুজয় পাল: তার শৈশব কেটেছে লোকের ঘরে কাজ করে। স্কুলমুখো হওয়ার সুযোগ তো মেলেইনি, বরং কাজে সামান্যতম ত্রুটি হলে জুটেছে অশ্রাব্য গালিগালাজ, মারধর। এত কিছু করার পরেও দু’বেলা পেট ভরে খেতে দেওয়া হয়নি। এ এক অন্য ‘মেসি’র গল্প। এই মেসি পাচার হওয়া এক শিশু।

তখন মেসির বয়স সাতের কাছাকাছি। ওই বয়সের অন্য বাচ্চাদের মতোই সে খুব ঘুরতে ভালোবাসত। কিন্তু তার এই ভালো লাগাই যে তার শৈশব জীবনকে অন্ধকারে ঠেলে দেবে তা জানা ছিল না। ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে কোনও এক ব্যক্তি তাকে বাবা-মায়ের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে বিক্রি করে দেয় এক অজানা আশ্রয়ে। যেখানে তার কাজ ছিল কাপড় কাচা, বাসন মাজা। সেই বাড়ির বাচ্চার দেখভাল করা। সে কাজে সামান্যতম ত্রুটি হলেই জুটত লাঠির আঘাত, নোংরা কথা।

বাড়ি থেকে দূরে অজানা আশ্রয়ে এভাবেই এক বছরের বেশি সময় কেটে যায় তার। তারপর কোনওভাবে বিষয়টি জানতে পারে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন। তারাই শিশুটিকে উদ্ধার করে। গ্রেফতার হয় অত্যাচারী পরিবারের সদস্যরা। এখন সেই পুরনো অতীত ভুলে মূল স্রোতে ফিরে এসেছে মেসি। বয়স তার ১৫। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে। আন্তর্জাতিক পাচার প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে শুক্রবার তাকে এক ঘন্টার জন্য রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের আমন্ত্রিত চেয়ার পার্সন করা হয়।

তার মেসি নামের পিছনেও রয়েছে গল্প। আসলে ওই কিশোর আর্জেন্টিনার ফুটবলার লিওনেল মেসির বড় ভক্ত। কমিশনের চেয়ার পার্সন অনন্যা চক্রবর্তীকে তা সে জানিয়েছিল। এরপর অনন্যাই ওই কিশোরের নাম দেন মেসি। এই মেসির স্বপ্ন কমান্ডো হওয়ার। মেসির কথায়, “কমান্ডোরা যেভাবে শত্রুর সঙ্গে লড়াই করে দেশকে রক্ষা করে, আমিও সে ভাবে দেশকে রক্ষা করতে চাই। আর যারা আমার মত শিশুদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে চায়, সেই শত্রুদের সঙ্গে লড়াই করে আমি অন্যদের শৈশব রক্ষা করতে চাই।”

উত্তরবঙ্গের এক পাহাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ওই কিশোর শুক্রবার এক ঘন্টার জন্য কমিশনের চেয়ার পার্সন হয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজাকে চিঠি লেখে। কিছু দাবি-দাওয়ারও উল্লেখ রয়েছে সেখানে। চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, রাজ্যে যত নেশাদ্রব্যের কারখানা রয়েছে সেগুলিকে অবিলম্বে বন্ধ করে স্কুল গড়ে তোলা হোক। শিশুশ্রম বন্ধ হোক। অভাবী শিশুদের পড়াশোনার জন্য সরকার আর্থিক সাহায্য করুক। পাচারকারীদের জন্য আরও কঠোর আইন আনা হোক যাতে তাদের কঠোরতম শাস্তি হয়। তার লেখা এই চিঠি ইতিমধ্যেই মন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে কমিশনের দফতর। সরকার যাতে অবিলম্বে বিষয়গুলির দিকে নজর দেয় সেই দাবি রেখেছে ‘পাহাড়ি বিছে’। আরও পড়ুন: ‘উনি নিজে মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন বলে ভোট নিয়ে এত তাড়া’, উপনির্বাচন প্রসঙ্গে মমতাকে তোপ দিলীপের