কোন অঙ্কে চার সাংসদকে মন্ত্রিসভায় স্থান? বাবুলের জন্যও বিকল্প ভাবনা বিজেপির

Modi Govt Cabinet Expansion: নিখুঁত রাজনৈতিক অঙ্ক কষেই এই ৪ সাংসদকে মন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

কোন অঙ্কে চার সাংসদকে মন্ত্রিসভায় স্থান? বাবুলের জন্যও বিকল্প ভাবনা বিজেপির
গ্রাফিক্স- অভীক দেবনাথ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 07, 2021 | 9:29 PM

কলকাতা: ২০১৪ সালে ২, ২০১৯-এ ১৮। লোকসভা আসনের নিরিখে ৫ বছরের ব্যবধানে বিজেপির প্রাপ্তির ভাঁড়ার ভরলেও মন্ত্রী খুব একটা বেশি জোটেনি বাংলার। পূর্ণ মন্ত্রক দূরে থাক, ১৮ আসন পাওয়ার পরও বাংলার মাত্র দু’জন সাংসদকে প্রতিমন্ত্রী করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। যা নিয়ে সেই সময় সমালোচনাও কম হয়নি। এ বার বিধানসভা ভোটে গেরুয়া শিবিরের মনোবাঞ্ছা পূরণ না হলেও তারপরই মন্ত্রিসভায় বাংলার ভাগিদারী বাড়ল। আগের দুই মন্ত্রী ইস্তফা দিলেন। তাঁদের জায়গায় ৪ জন নতুন মুখ এলেন। নিখুঁত রাজনৈতিক অঙ্ক কষেই এই ৪ সাংসদকে মন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। অন্যদিকে, মন্ত্রিত্ব হাতছাড়া হয়ে কিছুটা ‘মনমরা’ বাবুল সুপ্রিয়র জন্যও বিকল্প ভাবনাচিন্তা করছে পদ্মশিবির।

পশ্চিমবঙ্গ থেকে ২০১৯ সালেই নির্বাচিত হওয়া জন বার্লা, নিশীথ প্রামাণিক, সুভাষ সরকার এবং শান্তনু ঠাকুর বুধবার রাষ্ট্রপতি ভবনে মন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন। কিন্তু কোন ভিত্তিতে এই ৪ জনকেই বেছে নিল মোদী সরকার? ঠিক কোন সমীকরণ কাজ করছে এর নেপথ্যে?

প্রথমেই আসা যাক উত্তরবঙ্গের কথায়। ২০১৯ সালের ভোটের স্পষ্ট, পার্বত্য জমিতে নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করে ফেলেছে বিজেপি। সেই কারণে উত্তরবঙ্গ থেকে দুই সাংসদকে মন্ত্রী করে সেখানকার আবেগকে গুরুত্ব দিতেই বিজেপির এই সিদ্ধান্ত, এমনটা মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। আরেকটি অংশ বলছে, বিধানসভা ভোটেও রাজবংশীদের সমর্থন বিজেপির প্রতি অটুট ছিল, এবং তাঁদের মুখ নিশীথ প্রামাণিক। সেই কারণে তৃণমূল থেকে আসা কোচবিহারের এই তরুণ সাংসদকে সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকতে পারে মন্ত্রিসভায়। পাশাপাশি আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লা আদিবাসী সম্প্রদায়ের। এই সম্প্রদায়ের সিংহভাগ ভোটও বিজেপির ঝুলিতেই আসে।

এ বার দক্ষিণবঙ্গের কথায় আসা যাক। দক্ষিণে মতুয়া ভোট সর্বদাই বিজেপির একটি বড় হাতিয়ার। এই সম্প্রদায়ের মানুষদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েই ২০১৯ সালে বনগাঁ ও রানাঘাটের মতো লোকসভা আসন দখল করেছিল বিজেপি। কিন্তু তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত নাগরিকত্বের বিষয়ে কোনও কাজ সেভাবে এগোয়নি। যা নিয়ে সাংসদ শান্তনু ঠাকুর নিজেও একাধিকবার ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন প্রকাশ্যে। কার্যত তাঁকে এবং মতুয়া সমাজকে শান্ত রাখতেই বনগাঁর সাংসদকে মন্ত্রিসভায় ঠাঁই দেওয়া হল বলে মত রাজনীতির কারবারিদের একাংশের। অন্যদিকে, বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার সংঘ ঘনিষ্ট, পেশায় চিকিৎসক এবং সজ্জন ব্যক্তি। লক্ষ্যণীয়ভাবে, গত বিধানসভায় গোটা দক্ষিণবঙ্গে বিজেপির কার্যত ভরাডুবি হলেও বাঁকুড়ার ফল তুলনামূলক কিছুটা ভাল হয়েছিল। সেই কারণেই তাঁকে মন্ত্রিসভায় অগ্রাধিকার দেওয়া হয়ে থাকতে পারে।

আরও পড়ুন: নিশীথ-সুভাষ-শান্তনু-জন বার্লা, চার মন্ত্রী পেল বাংলা

এই ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে মন্ত্রিত্ব হারিয়ে ‘হতাশা’ চেপে রাখেননি বাবুল। ফেসবুকে তিনি লিখেছিলেন, “আমাকে ইস্তফা দিতে বলা হয়েছে, নিজের জন্য খারাপ লাগছে…।” পরে যদিও ঢোঁক গিলে তিনি লেখেন, “ইস্তফা দিতে বলা হয়েছিল’ কথাটা হয়তো এভাবে ব্যবহার করা ঠিক নয়।” কিন্তু, কেন আগের পোস্ট মুছে নতুন করে আবার এই ব্যাখ্যা দিলেন তিনি? এর কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। তারপরই বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪ ও ২০১৯ সালে দু’বার মন্ত্রী হওয়া বাবুল সুপ্রিয়কে সংগঠনে কোনও বড় পদ দেওয়া হতে পারে।

আরও পড়ুন: ‘যার যেমন বোঝার শক্তি…,’ সৌমিত্রের ‘অর্ধেক বোঝেন’ কটাক্ষের জবাব দিলীপের