Na Bollei Noy: নেতার চিকিৎসা আগে হবে না তো কি জনতার চিকিৎসা আগে হবে? যে কথা ‘না বললেই নয়’
Anubrata Mondal: অনুব্রত মণ্ডল আসছেন বলে কথা। তাই আসানসোল হাসপাতালের আউটডোর সর্বসাধারণের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
কলকাতা: মোগাম্বো খুশ হুয়া? নেহি হুয়া? মোগাম্বোকে খুশি করতেই কি চেষ্টার কসুর ছিল না? যদি কোনওভাবে একটা তিল খুঁজে পাওয়া যায়, তাহলে তাল করতে বেশি সময় লাগবে না। এমনই কি চিন্তাভাবনা ছিল? কিন্তু, মানুষ ভাবে এক আর হয় আরেক। ওই যে কথায় বলে না, ধর্মের কল আকাশে বাতাসে নড়ে। আসানসোলেও নড়ে কি? এই ভাবনাচিন্তা পুরোটাই কাল্পনিক। এরসঙ্গে বাস্তবের মিল খুঁজতে যাবেন না যেন।
বাস্তব হচ্ছে অনুব্রত মণ্ডল, ‘হেভিওয়েট’ মানুষ। গতকাল জীবনে প্রথম রাত কেটেছে সংশোধনাগারে। এমনিতেই যা গরম পড়েছে। তারওপর কলকাতা টু আসানসোল। আদালত টু সংশোধনাগার। সফর করে যথেষ্ট কাহিল হয়ে পড়ারই তো কথা। অনুব্রত মণ্ডলের শরীরটা যুতের ছিল না। তাই আজ সকালে তাঁকে আসানসোল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। যতই, গরু পাচার মামলায় CBI-এর হাতে বন্দি হোন, নাম তো কেষ্ট মণ্ডল। শুনাহি হোগা? কিন্তু, কে শোনে কার কথা। তখনই পাবলিকের যত দরকার ছিল হাসপাতালে। অসুস্থ হওয়ার আর সময়ও পায় না কেউ। অনুব্রত মণ্ডল আসছেন বলে কথা। তাই আসানসোল হাসপাতালের আউটডোর সর্বসাধারণের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। মানে, জনতা কিছুক্ষণের জন্য NOT ALOOWED। কিন্তু জানেনই তো। আজকাল লোকজনের মধ্যে ধৈর্য্য বড়ই কম। অনুব্রত মণ্ডল একটু নিশ্চিন্তে ডাক্তার দেখাবেন। সেই সময়টুকু, একটু অপেক্ষা করার মতো ধৈর্য্যও ছিল না অনেকে। তাই আসানসোল হাসপাতালের আউটডোরের বাইরে বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায়। এই এক মুশকিল। সব কিছুতেই মানছি না, মানব না টাইপের মানসিকতা। তো পাবলিক একটু অসহিষ্ণু হতেই ব্যাপরটা কড়া হাতে ট্যাকেল করে নেয় পুলিশ। লাঠি উঁচিয়ে অনেকটা ক্লাসটিচারের ঢঙে ক্লাস নেওয়ার পরও, সাধারণ, হতদরিদ্র মানুষগুলো বুঝতে চাইছিলেন না সবুরে মেওয়া ফলে! সর্বঘটে কাঁঠালি কলার মতো তখনই, ঘটনাস্থলে ছিলেন TV9 বাংলার প্রতিনিধি। ক্যামেরাবন্দি হল, বুমে কথাবার্তা বলল জনতা। ক্ষোভ কি আর চাপা থাকে?
সে যাই হোক অনুব্রত মণ্ডলের কি হল বলি। না। কোনও এমার্জেন্সি নেই কেষ্ট মণ্ডলের। জানিয়ে দিয়েছে আসানসোল হাসপাতাল। তা হলে ঘণ্টাখানেক যে হয়রান হল মানুষ? দূর, ভোট দিলেই কি মাথা কিনে নিতে হবে? সরকারি হাসপাতালে নেতার চিকিত্সা আগে হবে না তো কি জনতার চিকিত্সা আগে হবে? এতদিনেও এই শিক্ষা যে কেন আমাদের হল না! শিক্ষা কার হবে সেটাই এখন প্রশ্ন। দিল্লির খবর, ইডি না কি খেলতে নামবে বলে, জোরকদমে নেট প্র্যাক্টিস করছে। একটু বুঝিয়ে বলি। গরু পাচারের তদন্তে সিবিআই যেমন আছে, ইডিও আছে। তো ইডি মামলাটা দায়ের করে রেখেছে দিল্লিতে। ফলে হিল্লি দিল্লি করার একটা ঝুঁকি আছেই। গরু পাচারে কিং পিন বলে অভিযুক্ত এনামুল হক, দিল্লির সংশোধনাগারে। সায়গল হোসেন, যিনি আবার অনুব্রত মণ্ডলের বডিগার্ড, তাঁর বিরুদ্ধে ইডি কেস করেছে, দিল্লিতে। তাহলে কি অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লিতে ডাকবে ইডি? গরু পাচারের বখরা কে কে পেতেন সেটা তদন্ত সাপেক্ষ। কিন্তু যেভাবে কেষ্ট-বিষ্টুদের আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে। তাতে অনেক কিছু খতিয়ে দেখার আছে বলে ইডির ধারণা। মুশকিল হচ্ছে, ইডি ছুঁলে তো আবার ৩৬ ঘা! পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের ক্ষেত্রে দেখেননি?
আচ্ছা, এই যে অনেকে অভিযোগ করছেন, তৃণমূলের পার্টি অফিসের জন্য দেওয়া জমিও, অনুব্রত নিজের নামে করে নিয়েছেন। তারপর, অনুব্রত ঘনিষ্ঠরা বীরভূম জুড়ে বেআইনি টোল তোলে। মানে এমন হাল যে বোলপুর না টোলপুর বোঝা দায়। এই সব অভিযোগ কি সত্যি?
এই সব কথা হবে কখন? রাত ৮.৫৭। যেমন রোজ হয়। টিভি নাইন বাংলায়, না বললেই নয়। মানুষের কথা বলার সময়।