‘লাঠির আঘাতে কিডনি ড্যামেজ’, নবান্ন অভিযানকারী ডিওয়াইএফআই কর্মীর মৃত্যু
গত ১১ ফেব্রুয়ারি বাম ছাত্র যুবদের নবান্ন অভিযান ছিল। সেখানেই পুলিশের লাঠিচার্জের অভিযোগ ওঠে।
কলকাতা: বাম ছাত্র যুবদের নবান্ন অভিযানে চলেছিল পুলিশের লাঠি। সেই লাঠির আঘাতে ৩১ বছরের এক ডিওয়াইএফআই কর্মীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠল। নাম মইদুল ইসলাম মিদ্যা। বাড়ি বাঁকুড়ার কোতুলপুরে। কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। সোমবার সকালে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের দাবিতে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল ১০টি বাম ছাত্র যুব সংগঠন। নবান্নমুখী মিছিল ডোরিনা ক্রসিংয়ে পৌঁছতেই শুরু হয় ধুন্ধুমার। অভিযোগ ওঠে, মিছিল প্রতিহত করতে লাঠি চালিয়েছে পুলিশ। সেই লাঠির আঘাতে বেশ কয়েকজন বাম কর্মী, সমর্থক জখম হন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আরও পড়ুন: মঞ্চে বক্তব্য পেশের সময় হঠাৎই কাঁপতে কাঁপতে পড়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী, উৎকন্ঠা গুজরাতে
তাঁদের মধ্যেই ছিলেন কোতুলপুরের এই যুবকও। এসএফআইয়ের তরফে দাবি, পুলিশের লাঠির আঘাতে গুরুতর জখম এই ডিওয়াইএফআই কর্মী ১৩ তারিখ থেকে চিকিৎসক ফুয়াদ হালিমের হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তাঁর মাথার আঘাত ছিল গুরুতর। বুকে পিঠে লাগে, ছিল শ্বাসকষ্টও। এরপরই সোমবার হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর।
এ প্রসঙ্গে বাম নেতা তথা চিকিৎসক ফুয়াদ হালিম বলেন, “ওকে পুলিশ নির্মমভাবে লাঠি দিয়ে মেরেছিল। এর ফলে ওর কিডনি ড্যামেজ হয়ে গিয়েছিল। কিডনি ফেলিওর হতে শুরু করে। সেখানে জল জমতে থাকে। সোডিয়াম লেভেল একেবারে নেমে যায়। বেড়ে যায় পটাশিয়াম। গতকাল থেকেই ওর অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। রাতের দিকে একটু ভাল হয়েছিল। কিন্তু আজ সকালে একটা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়।”
এই ঘটনায় সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, “পুলিশের নৃশংস আক্রমণে খুন হয়েছে মইদুল ইসলাম মিদ্যা। নারকীয় এই ঘটনায় নিন্দার কোনও ভাষা নেই। ছাত্র যুবদের ঘিরে ধরে যেভাবে সেদিন মারা হল জালিয়ানওয়ালাবাগের স্মৃতি উস্কে দেয়।” ডিওয়াইএফআই, এসএফআইয়ের তরফে জানানো হয়েছে, এই ঘটনা ঘিরে তারা বহু দূর যাবে। বড় আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে তারা।
মইদুল ইসলাম মিদ্যার মৃত্যু ঘিরে ইতিমধ্যেই পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের তর্জনী উঠেছে। তাই ময়না তদন্তের স্বচ্ছতা নিয়ে বিশেষ তৎপর প্রশাসন। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে হবে ময়না তদন্ত। পুরো প্রক্রিয়ারই ভিডিয়োগ্রাফি হবে। উপস্থিত থাকবেন অ্যাসিসটেন্ট কমিশনার পদাধিকারী একজন কর্তা, নিহতের পরিবারের সদস্য, ময়না তদন্তকারী চিকিৎসকরা। নিয়ম মেনে ইতিমধ্যেই ময়না তদন্তকারী চিকিৎসকদের বোর্ড গঠন করা হয়েছে। সেখানে তিন থেকে পাঁচজন চিকিৎসক থাকার কথা।