Netaji Subhas Chandra Bose: কাস্তে হাতুড়ি পতাকা, ইনক্লাব জিন্দাবাদ স্লোগান, তারমধ্যেই নেতাজির পকেট থেকে হাপিশ দুশো টাকা!

Netaji Subhas Chandra Bose: লাহোরে এসে তাঁর এই দুশ্চিন্তা অনেকটাই কেটে যায়। তাঁর শত শত অনুগামীদের ভিড়ে কার্যত হারিয়েই যান নেতাজি। সেই ছবি বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়। সেই সময় অ্যাসোসিয়েট প্রেসের তরফে একটা চমকপ্রদ খবরও জানা যায়। কী সেই খবর?

Netaji Subhas Chandra Bose: কাস্তে হাতুড়ি পতাকা, ইনক্লাব জিন্দাবাদ স্লোগান, তারমধ্যেই নেতাজির পকেট থেকে হাপিশ দুশো টাকা!
Jawaharlal Nehru et Subhas Chandra Bose avec des soldats, en Inde, le 1er novembre 1937Image Credit source: Keystone-France/Gamma-Rapho via Getty Images
Follow Us:
| Updated on: Jan 23, 2024 | 5:06 PM

১৯৩৯ সালের জুন মাস। পঞ্জাবের লাহোরে (অবিভক্ত ভারত) তখন সুভাষচন্দ্র বসু। তাঁকে পেয়ে লাহোরের রাস্তায় নেমেছে জনপ্লাবন। এপ্রিলে জাতীয় কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে সবেমাত্র নতুন দল ফরওয়ার্ড ব্লক তৈরি করেছেন তিনি। তারপর বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে জনসমর্থন জোগাড় করছেন। সেই সূত্রেই লাহোরে নেতাজি। লাহোর পৌঁছনো মাত্রই সাধারণ মানুষের আন্তরিক অভ্যর্থনায় আপ্লুত হয়ে পড়েন। মনে মনে একটা জড়তা কাজ করছিল নেতাজির। কংগ্রেস সভাপতির পদ ছেড়ে যেভাবে দল থেকে বেরিয়ে নতুন দল তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন, তাতে আমজনতা কীভাবে প্রতিক্রিয়া করবে, সেটাই তাঁকে ভাবাচ্ছিল।

ইতিমধ্যে অনেকে সমালোচনাও করেছেন, নেতাজি নাকি কংগ্রেসকে দুর্বল করে দিলেন। বামমনস্ক কংগ্রেস নেতাদের ভাঙিয়ে আড়াআড়ি বিবাদ তৈরি করছেন দলের মধ্যে। এতে আখেরে লাভ হবে ইংরেজদের। কিন্তু কংগ্রেসের উদ্যম নিয়েই নেতাজির প্রশ্ন ছিল। কংগ্রেসের দক্ষিণপন্থী নেতাদের নীতি নির্ধারণে মতানৈক্য তৈরি হয় তাঁর। তবে, প্রাথমিকভাবে ফরওয়ার্ড ব্লককে কংগ্রেস থেকে আলাদা করতে চাননি। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য ছিল, যাঁরা কংগ্রেসের প্রাথমিক সদস্য তাঁরা ফরওয়ার্ড ব্লকের সদস্য হতে পারেন। তবে, ফরওয়ার্ড ব্লকের সদস্য হয়েছেন বলেই, কংগ্রেসের গঠনতন্ত্র মানবেন না, এটা হবে না। সে যাই হোক, কংগ্রেস থেকে নেতাজির বেরিয়ে আসায় অনেক মানুষ নেতৃত্ব সঙ্কটে ভুগছিলেন। দিশাহীন হয়ে পড়েন নেতাজির অনুগামীরা।

কিন্তু লাহোরে এসে তাঁর এই দুশ্চিন্তা অনেকটাই কেটে যায়। তাঁর শত শত অনুগামীদের ভিড়ে কার্যত হারিয়েই যান নেতাজি। সেই ছবি বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়। সেই সময় অ্যাসোসিয়েট প্রেসের তরফে একটা চমকপ্রদ খবরও জানা যায়। কী সেই খবর?

জানা যায়, লাহোর পৌঁছনোর পরপরই নেতাজি একটি মানি অর্ডার পেয়েছিলেন। সেই মানি অর্ডারে ছিল দু’শো টাকা। তা তিনি যত্ন করে পকেটে রেখে দিয়েছিলেন। তারপর বিভিন্ন মিটিং-সভা করেন। কাস্তে-হাতুড়ি লাল ধ্বজা হাতে খাকি হাফপ্যান্ট পরা অনুগামীদের ভিড়ে বক্তৃতা দেন। সেই ভিড়ে মুহুর্মুহু ‘ইনক্লাব জিন্দাবাদ’, ‘সুভাষ বোস কি জয়’ স্লোগানে মুগ্ধ হয়ে যান। তারপর সারাদিনের কাজ শেষে যখন বাসায় ফেরেন, কোট খুলতে গিয়ে দেখেন দু’শো টাকা হাওয়া! আছে শুধু মানি অর্ডারের খাম। তার সঙ্গে বিদায় নিয়েছে সেকেন্ড ক্লাস ট্রেনের টিকিটও। কে কখন সুভাষের পকেটে হাত চালিয়ে দু’শো টাকা সাবাড় করেছেন, ঘুণাক্ষরে বুঝতে পারেননি তিনি। এমন কাণ্ড দেখে বেশ মজাই পেয়েছিলেন তিনি।

এদিকে নেতাজির পকেটমারি বলে কথা! এ খবর আর চার দেওয়ালের মধ্যে চাপা থাকেনি। লাহোর থেকে সোজা পৌঁছয় কলকাতাতেও। ছাপা হল বাংলার সংবাদ মাধ্যমেও। কোথাও মজা করে লেখা হল, দু’খান নোট, দুই শ’ টাকা এসেছে ভোরের ডাকে, ব্যস্ত সভায়, অন্য মনে রেখেছে তারে ট্যাকে। কোথায় টাকা? পকেট দেখি মাঠের মতো ধূ ধূ খুলিয়া দেখে, মানি অর্ডার কুপন খানি শুধু…

তথ্যসূত্র: যুগান্তর পত্রিকা