বাদুড়িয়ার তানিয়া পারভিনের লস্কর-যোগের মামলায় পাকিস্তানির নাম, কে এই আয়েশা বুরহান?
পাক জঙ্গিদের সঙ্গে যোগ ছিল তানিয়ার। সেনাকর্তাদের হানি-ট্র্যাপে ফেলে তথ্য হাতানোই ছিল তানিয়ার কাজ।
কলকাতা: বাদুড়িয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল কলেজ ছাত্রী তানিয়াকে। লস্কর-ই-তইবার সঙ্গে তা যোগ থাকার প্রমাণ উঠে এসেছিল আগেই। আর এবার সেই মামলার চার্জশিটে প্রথমবার এক পাকিস্তানির নাম উল্লেখ করল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ। আয়েশা বুরহান নামে ওই পাকিস্তানি পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। ভারতীয়দের লস্করের কাজে লাগানোই তার উদ্দেশ্য। শুধু আয়েশা নয়, মোট তিনজনের নাম রয়েছে সেই চার্জশিটে।
বুধবার লস্কর-ই-তইবার সক্রিয় সদস্য তানিয়া পারভিনের মামলায় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দিয়েছে এনআইএ। এ দিন কলকাতার বিশেষ এনআইএ আদালতে জমা পড়ে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট। চার্জশিটে রয়েছে নতুন নাম ও সেই সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে একাধিক নতুন ধারা। ভারতীয় সংবিধানের ১২১ এ ধারা অর্থাৎ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা, ১২২ অর্থাৎ সেই কাজের জন্য অস্ত্র সংগ্রহ করার ধারা যুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ইউএপিএ আইন অর্থাৎ রাষ্ট্রদ্রোহিতার ১৮, ২০ ও ২৮ নম্বর ধারা যোগ করা হয়েছে।
তদন্তে একাধিক নতুন তথ্য উঠে আসায়, সেই তথ্যের ভিত্তিতেই এই নতুন ধারা যোগ করেছে এনআইএ। সাপ্লেমেন্টারি চার্জশিটে নাম রয়েছে তানিয়া পারভিন, সৈয়দ এম ইদ্রিস ও আয়েশা ওরফে আয়েশা বুরহানের। তদন্তে গোয়েন্দাদের হাতে আসা তথ্য অনুযায়ী, লস্কর-ই-তইবার এই মডিউলের মাথা ছিল সদ্য কাশ্মীর থেকে গ্রেফতা হওয়া অঙ্কের শিক্ষক আলতাফ আহমেদ। পাকিস্তানের আয়েশাই আলতাফকে নিয়োগ করেছিল। তারপর আলতাফ সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তানিয়াকে লস্করের কাঝে নিয়োগ করে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দেশের সশস্ত্র বাহিনীর জওয়ানদের হানি ট্র্যাপে ফেলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করাই ছিল তানিয়য়ার কাজ। গোয়েন্দা সূত্রের জানা গিয়েছে, সেই তথ্য পাঠানো হতোৱ পাকিস্থানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর কাছে। অসংখ্য হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে তাদের যোগাযোগ চলত। এই মডিউলের সঙ্গে আর কারা কারা যুক্ত রয়েছে, তা জানতে তদন্ত চালাচ্ছে এনআইএ।
আরও পড়ুন: বৃহস্পতিবার থেকে সম্পূর্ণ বন্ধ লোকাল ট্রেন, গণ-পরিবহণ ও মেট্রোর ক্ষেত্রে কী সিদ্ধান্ত মমতার?
গত বছর মার্চ মাসে উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়া থেকে গ্রেফতার করা হয় কলেজ ছাত্রী তানিয়াকে। লস্কর জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্স। পরে জঙ্গিযোগের প্রমাণ সামনে আসতেই ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয় এনআইএ। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তে উঠে আসে, পাকিস্তান থেকে নিয়মিত হোয়াটসঅ্যাপ কলে তানিয়াকে নির্দেশ দিত পাক জঙ্গিরা। আর সেই মতো দেশের নানা উচ্চপদস্থ সেনা ও নিরাপত্তা আধিকারিকদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়ে গোপন তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করত সে।
এরকমই বেঙ্গালুরুর কয়েকজন আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তানিয়ার। তারা কারা, তা জানতে বেঙ্গালুরু উড়ে গিয়েছে গোয়েন্দাদের একটি দল। কাদের কাছ থেকে তানিয়া তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছিল তা জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। কী কী তথ্য ইতিমধ্যে তার হাতে পৌঁছেছে জানার চেষ্টা চলছে তাও।