Omicron Variant: হু হু করে ছড়াতে পারে ওমিক্রন, নমুনা পরীক্ষায় জোর বিশেষজ্ঞদের, জোরকদমে প্রস্তুতি স্বাস্থ্যভবনের

COVID19: রাজ্যে ওমিক্রনের অনুপ্রবেশে কী পদক্ষেপ করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর? স্বাস্থ্য ভবনের মুখ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে শিশুটিকে মুর্শিদাবাদের মাতৃসদনে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেখানে তাকে একান্তবাসে রাখা হবে

Omicron Variant: হু হু করে ছড়াতে পারে ওমিক্রন, নমুনা পরীক্ষায় জোর বিশেষজ্ঞদের, জোরকদমে প্রস্তুতি স্বাস্থ্যভবনের
করোনার থাবা বঙ্গে, অলঙ্করণ: অভিজিত্‍ বিশ্বাস
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 15, 2021 | 5:56 PM

কলকাতা:  গত কয়েকদিন ধরে ওমিক্রন নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে দেশ জুড়ে। একে একে করোনার নয়া ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, গুজরাট সহ একাধিক রাজ্যে। এবার বাংলায় মিলল ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ। তারপরেই জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু করে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। বিশেষজ্ঞদের মত, সংক্রমণ রোধে পরীক্ষা আরও বাড়ানো হোক।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ কাজলকৃষ্ণ বণিক TV9 বাংলাকে জানিয়েছেন, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন দ্রুত সংক্রমণ ছড়াতে সক্ষম। কিন্তু, সংক্রমণ ক্ষমতা অত্যধিক হলেও এই নতুন ভ্যারিয়েন্টের মারণ ক্ষমতা অনেক কম। কিন্তু, সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলে তা ক্ষতিকর। এই পরিস্থিতে  নমুনা পরীক্ষায় জোর দেওয়ার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। জিনোম সিকোয়েন্সে পরীক্ষার পরিমাণ বাড়াতে হবে।

কাজলবাবুর আরও সংযোজন, “এখানে কেবল আক্রান্তের খবর পেলে তাঁদের ও তাঁদের আশপাশের কনট্যাক্ট ট্রেসিং করা হচ্ছে। কিন্তু, যাঁদের কোনও উপসর্গ দেখা যাচ্ছে না তাঁরা যে কেউ আক্রান্ত নন, তা কে নির্ধারণ করবে? সেই পরীক্ষাগুলোও হওয়া দরকার। অর্থাত্‍ যাঁরা আক্রান্ত নন, তাঁদেরও পরীক্ষা হওয়া প্রয়োজন। নয়ত, ভারতের মতো এত বিশাল দেশে কী করে সংক্রমিতদের খোঁজ মিলবে?”

কেন ওমিক্রন ভয়ের? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নতুন করোনা ভ্যারিয়েন্ট অ্যান্টিবডিকেও ফাঁকি দিতে পারে। যার জেরে সংক্রমণ দ্রুত ছড়াতে  পারে। উপসর্গও বেশ কিছুটা ভিন্ন। করোনার অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে যেরকম জ্বর, সর্দিকাশি দেখা যায়, ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে মূলত গা-হাত-পা ব্যথা, দুর্বলতা, ক্লান্তিবোধ এগুলিই দেখা যায়। তাহলে সংক্রমণ প্রতিরোধের উপায়?

এ প্রসঙ্গে, চিকিত্‍সক সুমন পোদ্দার জানিয়েছেন, ওমিক্রনের মারণক্ষমতা কম বলে তাকে হালকা ভাবে দেখা কিছু নেই। আবার সংক্রমণ ভীষণভাবে ছড়ায় বলে অতিরিক্ত ভাবারও কিছু নেই। পরিস্থিতিতে থেকেই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। পুরনো নিয়ম মেনে টিকাকরণ, সামাজিক দূরত্ববিধি পালন, মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি, প্রয়োজনে টিকার বুস্টার ডোজ়ও নিতে হতে পারে।

এদিকে, রাজ্যে ওমিক্রনের অনুপ্রবেশে কী পদক্ষেপ করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর? স্বাস্থ্য ভবনের মুখ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে শিশুটিকে মুর্শিদাবাদের মাতৃসদনে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেখানে তাকে একান্তবাসে রাখা হবে। পাশাপাশি, কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। যেহেতু শিশুটি হায়দ্রাবাদ থেকে কলকাতা হয়ে মুর্শিদাবাদ পৌঁছেছে তাই সে ও তার পরিবার কোন পথে ও কোন রুটে কীভাবে যাতায়াত করেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেইমতো সেই নির্দিষ্ট রুটে ওই শিশুটির আশেপাশে যাঁরা ছিলেন তাঁদের সম্ভাব্য একটি তালিকা তৈরি করে করোনা পরীক্ষা করা হবে। এছাড়াও, মুর্শিদাবাদে শিশুটির বাড়ির আশেপাশে ও সেই এলাকাটিও চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানকার মানুষদেরও পরীক্ষা করা হবে বলে জানা গিয়েছে।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১১ ডিসেম্বর আবু ধাবি থেকে এসে হায়দরাবাদে বিমানবন্দরে অবতরণ করে ওই শিশু ও তার বাবা-মা। হায়দরাবাদে দু দিন থাকার পর গতকাল অর্থাৎ ১৪ ডিসেম্বর কলকাতায় ফেরে সেই পরিবার। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে সড়কপথে গতকালই তারা মুর্শিদাবাদের বাড়িতে ফেরে। মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার বাসিন্দা ওই পরিবার।

এ দিকে, আবু ধাবি থেকে এসে হায়দরাবাদে বিমানবন্দরে নামার পর ওই পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের করোনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে বাবা-মায়ের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে, তবে শিশুর নমুনায় করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপরই ওই নমুনা জেনোম সিকোয়েন্সিং-এর জন্য পাছানো হয়। তেলেঙ্গানা সরকার ওই রিপোর্টে জানতে পারে শিশুটি ওমিক্রনে আক্রান্ত। এরপরই পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সে কথা জানানো হয় তেলেঙ্গানার তরফ থেকে।

তবে করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর ওই শিশুকে কী ভাবে তার পরিবার এতটা পথ নিয়ে এল, সেই প্রশ্ন উঠছে। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে ওমিক্রন পজিটিভ বালক কী ভাবে ফরাক্কা পৌঁছল? এই প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, ডোমেস্টিক উড়ানে আসায় নজরদারি এড়িয়ে গিয়েছে ওই বালক। প্রোটোকল মেনে আন্তর্জাতিক উড়ানে আসা যাত্রীদের‌ই পরীক্ষা করা হচ্ছে। নজরদারির ফাঁক কোথায়, এই ঘটনা তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।

এখনও পর্যন্ত ৭৭ টি দেশে এই ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ মিলেছে। বিশেষজ্ঞরা ভাগেই জানিয়েছেন যে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের মৃদু উপসর্গ দেখা যাচ্ছে আক্রান্তদের মধ্যে। হু প্রধান টেডরস আধানম বলেছেন, ‘ওমিক্রনকে মৃদু বলে গুরুত্ব দিচ্ছেন না অনেকে। কিন্তু ওমিক্রনের জেরে অসুস্থতা যতই কম হোক না কেন, এত বেশি সংখ্যায় মানুষ আক্রান্ত হতে পারে যাতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধাক্কা খেতে পারে।’ সতর্ক করে তিনি জানিয়েছেন, অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় অনেক বেশি দ্রুত হারে ছড়িয়ে পড়ছে ওমিক্রন।

আরও পড়ুন: BJP Clash in Singur: বিজেপির কর্মসূচিতে ‘আমন্ত্রিত নন’ মাস্টারমশাই, ‘নিজে কেন আসেননি?’, প্রশ্ন দলের