চালকেরই দোষ, আবহাওয়া এতটাও খারাপ ছিল না যে সিগন্যাল দেখা যাবে না: অভিশপ্ত কাঞ্চনজঙ্ঘার যাত্রী

Kanchanjunga Express Accident: ভয়াবহতার বর্ণনা করে তিনি বলেন, "বাকিদের মতো আমিও খুব আতঙ্কিত। আমি যে কোচে ছিলাম, তার দুই কামরা পরেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। দ্রুতগতির ট্রেন চালু করা হচ্ছে রেলের তরফে। কিন্তু এই ধরনের দুর্ঘটনা তো আরও আতঙ্ক বাড়াচ্ছে।"

চালকেরই দোষ, আবহাওয়া এতটাও খারাপ ছিল না যে সিগন্যাল দেখা যাবে না: অভিশপ্ত কাঞ্চনজঙ্ঘার যাত্রী
দুর্ঘটনাগ্রস্থ ট্রেন। ইনসেটে ট্রেনের যাত্রী।Image Credit source: TV9 বাংলা
Follow Us:
| Updated on: Jun 17, 2024 | 12:44 PM

তুহিন সেন

কলকাতা: বাইরে তখন ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পড়ছে। অনেকেরই চোখ জানালার বাইরে। হঠাৎ বীভৎস একটা ঝাঁকুনি। সিট থেকে ছিটকে পড়লেন যাত্রীরা। কী হল, তা বুঝে উঠতেই বেশ কিছুটা সময় লেগে গিয়েছিল। ট্রেন থেকে নেমে পিছনে তাঁকাতেই গায়ে কাঁটা দিল। এ কী অবস্থা। দুমড়ে মুচড়ে পড়ে রয়েছে পিছনের কামরা। মালগাড়ির ইঞ্জিনের ছাদে উঠে গিয়েছে আরেকটি কামরা। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার (Kanchanjunga Express Accident) মুহূর্তের বর্ণনা দিলেন ওই ট্রেনেই থাকা এক যাত্রী।

গড়িয়ার বাসিন্দা আশুতোষ দেব। নিয়মিতই যাতায়াত করেন উত্তরবঙ্গের ট্রেনে। আজও তিনি ত্রিপুরার আগরতলা থেকে ফিরছিলেন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে। কখন, কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, “সকাল ৯টা সাড়ে ৯টার দিকে দুর্ঘটনা ঘটে। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ১০ কিমি দূরে, বিজবাড়ি স্টেশন থেকে ১ কিমি দূরে ট্রেন দাঁড়িয়েছিল। হঠাৎ পিছন থেকে এসে ধাক্কা মারে মালগাড়ি।”

দুর্ঘটনার অভিঘাতে অনেকেই ছিটকে পড়েন বলে জানান। তিনি বলেন, “ট্রেন থেকে নেমে দেখি, মালগাড়ির কাঁচ ভেঙে চালককে নামানো হয়েছে। তিনি গুরুতর আহত। ট্রেনের পিছনের যে কামরাটি ছিল, তার অবস্থা ভয়ঙ্কর। অনেকের মৃত্যুর সম্ভাবনা। দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে জেনারেল কামরা।”

ভয়াবহতার বর্ণনা করে তিনি বলেন, “বাকিদের মতো আমিও খুব আতঙ্কিত। আমি যে কোচে ছিলাম, তার দুই কামরা পরেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। দ্রুতগতির ট্রেন চালু করা হচ্ছে রেলের তরফে। কিন্তু এই ধরনের দুর্ঘটনা তো আরও আতঙ্ক বাড়াচ্ছে। উত্তরবঙ্গে আবহাওয়া খারাপ। কিন্তু আবহাওয়া এতটাও খারাপ ছিল না যে সিগন্যাল দেখা যাবে না। নিশ্চয়ই চালকের দোষ ছিল। আমি A1 কোচে ছিলাম, সেখানে কেউ বিশেষ আহত হয়নি। তবে পিছনের কামরায় অনেকে আহত হয়েছেন।”

আশুতোষবাবু জানান, বাসে তিনি কলকাতা ফিরছেন। দুর্ঘটনাস্থল রঙপানি থেকে ২ কিমি হেঁটে মেইন রোডে আসতে হয়েছে তাঁদের। সেখান থেকে গাড়ি করে এসে বাস ধরেন। তিনি বলেন, “আমরা রাস্তায় হাত দেখিয়ে বাস দাঁড় করানোর চেষ্টা করছিলাম। প্রথমে বাস দাঁড়াচ্ছিল না। পরে স্থানীয় পুলিশ এসে সহযোগিতা করে। একসঙ্গে এত যাত্রী থাকায় বাসের ব্যবস্থা করতেও সমস্যা হচ্ছে। আধ ঘণ্টা আমি দুর্ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েছিলাম। তখন সবে দু-একজন পুলিশ এসে পৌঁছেছিল।”