Post Poll Violence: কাঁকুরগাছির নিহত অভিজিতের দাদাকে খুনের হুমকি, এবার সেই মামলার তদন্তে সিবিআই
Post Poll Violence: মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে রয়েছে, তাই এবার সাক্ষীকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার তদন্তে এগোতে চাইছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
কলকাতা: ভোট-পরবর্তী হিংসা মামলায় কাঁকুরগাছিতে খুন হওয়া অভিজিৎ সরকারের মামলার অন্যতম সাক্ষী তাঁর দাদা বিশ্বজিৎ সরকারকে খুনের হুমকি দেওয়ার তদন্তে এবার নামতে চলেছে সিবিআই। আজ বেলা ১১ টা নাগাদ বিশ্বজিৎকে তাঁর অভিযোগপত্র ও শিয়ালদহ আদালতের নির্দেশের কপি-সহ সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে পাঠিয়েছে সিবিআই। যেহেতু মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে রয়েছে, তাই এবার সাক্ষীকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার তদন্তে এগোতে চাইছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
অভিজিৎ সরকারের (Abhijit Sarkar) দাদা বিশ্বজিৎ সরকার আজ এক পুলিশ কর্তা-সহ দুই প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। শিয়ালদহ আদালতে নারকেলডাঙার প্রাক্তন ওসি শুভজিৎ সেন ও এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বলে খবর।
দিন কয়েক আগে প্রাণনাশের হুমকি পান বিশ্বজিত্। তাঁর দাবি, বাইকে এসে দুষ্কৃতীরা তাঁর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েই খুনের হুমকি দিয়ে যায়। মামলা প্রত্যাহার না করলে খুন করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। বিশ্বজিতের দাবি, দুষ্কৃতীরা হুমকি দিয়েছিল, যদি তিনি সিবিআই কর্তাদের কাছে নারকেলডাঙার ওই ওসি ও বিধায়কের নামে কিছু বলেন, তাহলে খুন করা হবে। এই ঘটনার পর লালবাজারে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। তবে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ। তাই আদালতের কাছে আবেদন করে তাঁদের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা রুজু করার আবেদন জানাবেন বিশ্বজিৎ। আজ ১১টা নাগাদ মামলা করার কথা রয়েছে তাঁর।
এর আগে গত শনিবার সিবিআই দফতরেও যান বিশ্বজিত্। কেন এই মামলায় কোনও অভিযুক্তই এখনও পর্যন্ত ধরা পড়েনি, তা জানতে চান তিনি। শাপাশি এই খুনের মামলায় দ্রুত যাতে তাঁর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়, সেই ব্যবস্থা করার আবেদন জানান। কারণ তিনি অন্যতম সাক্ষী, তাঁর জবানবন্দি গুরুত্বপূর্ণ। খুনে হয়ে যেতে পারেন, এই আশঙ্কা করছেন বিশ্বজিত্। তাই আগেই তিনি তাঁর গোপন জবানবন্দি দিতে চাইছেন।
কাঁকুরগাছি অভিজিত্ সরকার ‘খুনে’র ঘটনায় ততপর সিবিআই। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে সিবিআই। চার অভিযুক্তের বাড়িতে অক্টোবরের শুরুতেই হানা দিয়েছে সিবিআই। পলাতক অভিযুক্তদের ওপর চাপ বাড়াতেই সিবিআইয়ের এই কৌশল।চার অভিযুক্তের বাড়িতে পৌঁছে যান তদন্তকারীরা। ওই চার জনের নাম রয়েছে চার্জশিটে। চার জনের বিরুদ্ধেই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। তিন অভিযুক্তকেই বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তাঁরা কোথায় গিয়েছেন, তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় পরিবারের সদস্যদের।
প্রসঙ্গত, সেপ্টেম্বরেই চার্জশিট জমা করেছে সিবিআই। ২০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা করা হয়েছে। ভোট গণনার পরের দিনই মৃত্যু হয় বেলেঘাটার বাসিন্দা বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের। তদন্তের স্বার্থে তাঁর দেহ সৎকার করা হয়নি। ১৩৬ দিন পর সৎকারের অনুমতি পায় পরিবার।
ভোটের দিন গলায় তার পেঁচানো উদ্ধার হয় অভিজিৎ সরকারের মৃতদেহ। তাঁর পরিবার প্রথম থেকেই দাবি তোলে, বিজেপি করার অপরাধে অভিজিৎকে খুন করা হয়েছে। একই সঙ্গে এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলে নিহতের পরিবার।
সম্প্রতি অভিজিৎ সরকারের এই মোবাইল ফোন নিয়ে সিবিআই দফতরে গিয়েছিলেন দাদা বিশ্বজিৎ। বিশ্বজিতের বক্তব্য, অভিজিৎ সম্ভবত আগেই বুঝতে পেরেছিলেন, তিনি খুন হতে পারেন। সেই জন্যই নিজের মোবাইল ফোন লুকিয়ে রেখেছিলেন বলে মনে করছেন বিশ্বজিৎ। সূত্রের খবর, মোবাইল ফোনে অভিজিতের মৃত্য়ুর আগের মুহূর্তের বেশ কিছু ভিডিয়ো রয়েছে। সেগুলি তদন্তকারীদের কাজে লাগতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্বজিৎ। সেই ভিডিয়ো নিয়েই সম্প্রতি সিবিআই দফতরে হাজির হন তিনি।
সিবিআই তদন্ত ভার নেওয়ার পর থেকেই এই ঘটনায় একাধিকবার অভিজিতের দাদা বিশ্বজিৎ সরকারের সঙ্গে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। কখনও বিশ্বজিতের বাড়িতে গিয়েছেন তাঁরা। কখনও আবার নিজাম প্যালেস কিংবা সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হয়েছেন বিশ্বজিৎ নিজে।
আরও পড়ুন: ‘লোকের কাছে ভাল সাজতে চাইছেন…’, দুয়ারে রেশন নিয়ে মমতাকে কটাক্ষ দিলীপের