Calutta High Court: ওড়না বা হাত ধরে টানা POCSO আইন অনুযায়ী যৌন হেনস্থা নয়: কলকাতা হাইকোর্ট
Calutta High Court: বিচারপতি বিবেক চৌধুরীর বেঞ্চ এই মামলার কিছু প্রমাণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। ২০১৭ সালের অগস্ট মাসের একটি ঘটনার ভিত্তিতে এই মামলা হয়েছিল।
কলকাতা : ওড়না বা হাত ধরে টানা পকসো (POCSO) আইনে যৌন হেনস্থার সংজ্ঞার আওতায় পড়ে না। একটি মামলার পর্যবেক্ষণে এমনটাই জানাল কলকাতা হাই কোর্ট। কাঁথির একটি আদালতে ওই মামলায় যৌন হেনস্থার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল এক ব্যক্তিকে। পরে সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় অভিযুক্ত। প্রমাণের ভিত্তিতে পর্যবেক্ষণের ওপর জোর দেওয়ার কথা বলেছে হাইকোর্ট। অভিযুক্তের সাজা কমানোর হয়েছে।
কী সেই ঘটনা?
২০১৭ সালের অগস্ট মাসের ঘটনা। এক কিশোরী যখন স্কুল থেকে ফিরছিল, তখন আচমকা তার হাত ধরে টানে এক যুবক। ওড়না ধরেও টানাটানি করে। শুধু তাই নয়, বিয়ের প্রস্তাব গ্রহণ না করলে মুখে অ্যাসিড ছোড়া হবে বলেও হুমকি দেয় ওই যুবক।
কাঁথির ট্রায়াল কোর্টে ওই মামলা ওঠে। প্রমাণ খতিয়ে দেখে আদালতের তরফে বলা হয়, ওড়না টেনে, বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে হুমকি দেওয়ার ক্ষেত্রে যৌন হেনস্থা করা হয়েছে। হাত ধরে টেনে যৌন হেনস্থা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন কাঁথির ট্রায়াল কোর্টের বিচারপতি। পকসো আইনের ৮ ও ১২ নম্বর ধারায় অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে ওই আদালত। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪, ৩৫৪ বি, ৫০৬ ও ৫০৯ ধারায়ও দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
কী বলল হাই কোর্ট?
প্রমাণ খতিয়ে দেখে হাইকোর্টের দাবি, নির্যাতিতার বয়ানে কিছু অসঙ্গতি রয়েছে। আদালত জানিয়েছে, নির্যাতিতার আত্মীয় এফআইআরে যে অভিযোগের কথা উল্লেখ করেছেন, তাতে কখনও হাত ধরে টানার কথা বলা হয়নি। ঘটনার দিন দশেক পর নির্যাতিতার যে বয়ান নেওয়া হয়, সেখানেই সে প্রথম হাত ধরে টানার কথা উল্লেখ করে।
পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছে, যদি ওড়না বা হাত ধরে টানাও হয়, তাহলেও সেটা সেটা পকসো আইনে যৌন হেনস্থার সংজ্ঞার আওতায় পড়ে না। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ এ ও ৫০৬ ধারায় অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা যেতে পারে।
উল্লেখ্য, গত ১৯ জানুয়ারি এক নাবালিকার যৌন হেনস্থা মামলায় বিতর্কিত পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছিলেন বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি পুষ্প গনেদিওয়ালা। পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছিল, ত্বকে-ত্বকে সংস্পর্শ না হলে তাকে পকসো আইনের অন্তর্ভুক্ত করা যায় না। তারপর নিম্ন আদালতের রায় সংশোধন করে অভিযুক্তের সাজা কমানোর নির্দেশ দিয়েছিল বম্বে হাইকোর্ট। সেই পর্যবেক্ষণের প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে বেণুগোপাল জানিয়েছেন, হাইকোর্টের এই নির্দেশ বিপজ্জনক নজির সৃষ্টি করতে পারে। তার পর ২৭ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট ওই সংশ্লিষ্ট রায়ে স্থগিতাদেশ দেয়। অ্যাটর্নি জেনারেলকে সেই রায়ের প্রেক্ষিতে আবেদনের অনুমতি দেয় দেশের শীর্ষ আদালত।
সম্প্রতি বম্বে হাইকোর্টের সেই রায় বাতিল করে দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, স্কিন-টু-স্কিন বা শুধু ত্বকে-ত্বকে সংস্পর্শই যে পকসো আইনে ফেলা যাবে এমনটা নয়। শুধু তাই নয়, গত জানুয়ারি মাসে বম্বে হাইকোর্টের ওই রায়কে ‘আইনের সংকীর্ণ ব্যাখ্যা’ বলে মন্তব্য করেছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট জানায়, শুধু ত্বকে-ত্বকে সংস্পর্শ নয়, নাবালিকার সঙ্গে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করতে যে কোনও ধরনের স্পর্শই পকসো আইনের আওতায় পড়বে।