১৮০৩ সালে তৈরি হয়েছিল প্রাসাদোপম রাজভবন। তখন ভারতের রাজধানী ছিল কলকাতা। এই ভবনকে বলা হত গভর্নমেন্ট হাউস। পরে যাঁরা ভাইসরয় অব ইন্ডিয়া হতেন, তাঁরাই থাকতেন এই ভবনে। ফলে অনেক ইতিহাসের সাক্ষী এই ভবন। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের বাসভবন এটি। তবে সাধারণ মানুষের প্রবেশের অনুমতি ছিল না এতদিন। এবার রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের উদ্যোগে খুলে দেওয়া হল রাজভবনের দরজা। সাধারণ মানুষ রাজভবনের বেশ কয়েকটি জায়গা ঘুরে দেখতে পারবেন।
ড্রাগনে সওয়ার চিনা কামান: রাজভবনের অন্দরে রয়েছে ইতিহাসের চিহ্ন। এই কামানটিও অনেক স্মৃতি বহন করছে। ১৮৪২ সালে এটি চিন থেকে কিনেছিলেন তৎকালীন গভর্নর জেনারেল এলেনবরো। এই কামানেই ফার্স্ট ওপিয়াম ওয়ার লড়েছিলেন ব্রিটিশরা।
স্ফিংসের মূর্তি: এক কাল্পনিক চরিত্র স্ফিংস, যার মাথাটা মানুষের মতো আর সিংহের শরীর। সেই স্ফিংসের মূর্তি রয়েছে রাজভবনের সিঁড়ি সংলগ্ন একটি জায়গায়। প্রথমে কাঠ ও মাটি দিয়ে এটি তৈরি করা হয়েছিল। পরে ইট ব্যবহার করা হয়েছে ও রঙ করা হয়েছে, যাতে এটি দীর্ঘদিন একই রকম থাকে।
স্থাপত্যের নিদর্শন : রাজভবনের অন্দরমহলে রয়েছে নানা বিরল স্থাপত্যের রেপ্লিকা। কলকাতার মিউজিয়াম থেকে সেগুলি রাজভবনে রাখা হয়েছিল বহু বছর আগে। রয়েছে গনেশ, কার্তিক, বুদ্ধদেব, বিষ্ণুর মূর্তি।
রয়্যাল কোট অব আর্মস: গভর্নর জেনারেল কার্জন এই রয়্যাল কোট অব আর্মসের রেপ্লিকা বসিয়ে দিয়েছিলেন রাজভবনের সামনে। এটির ওজন ৪০ টন। পরে ভারতের স্বাধীনতার পর অশোক স্তম্ভ বসানো হয়।
লেকের ওপর কাঠের সেতু: সাহিত্যিক এমিলি ইডেন যখন ভারতে ছিলেন, তখন তিনি এই রাজভবনের সৌন্দর্যায়ন করেছিলেন। তাঁর ভাই, তৎকালীন গভর্নর জেনারেল অকল্যান্ড তখন একটি জলাশয় করেছিলেন। পরে মিস্টার লিটন ১৮৮০ সালে ১১ হাজার টাকা খরচে একটি সেতু বানিয়েছিলেন।
লাইব্রেরি : সাধারণ মানুষ যেতে পারবেন রাজভবনের লাইব্রেরিতেও। সেই গ্রন্থাগারে রয়েছে অন্তত ১০,০০০ বই। কোনও কোনও বই উপহার হিসেবেও দেওয়া হয়েছিল এই গ্রন্থাগারে। রয়েছে রাজ্যপালের বই পড়ার জন্য আলাদা একটি জায়গা।
এশিয়ার সবথেকে পুরনো লিফট : সিড়ির পাশে রয়েছে এই লিফট। ১৮৬৩ সালে এই লিফট বসানো হয়েছিল। পরে সেগুলো আধুনিকীকরণ করা হয়।