RG Kar: ছাত্র বিক্ষোভের জেরে অসুস্থ সুপার কিছুটা ভাল, তবে ICU’তেই এখনও
গত অগস্টে পড়ুয়াদের ১২ দফা দাবি নিয়ে কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক ডেকে সমস্যার সমাধান করা হবে বলে ছাত্র-ছাত্রীদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল।
কলকাতা: ঘেরাওয়ের জেরে অসুস্থ আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপারকে রাতেই ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট বা আইসিইউতে (ICU) রাখা হয়। বৃহস্পতিবার সকালেও সেখানেই রাখা হয়েছে তাঁকে। ইকো কার্ডিওগ্রাফি হয়েছে। আগের তুলনায় কিছুটা সুস্থ রয়েছেন সুপার সঞ্জয় বশিষ্ঠ।
ছাত্র বিক্ষোভের জেরে বুধবার রাতে ঘেরাও করা হয়েছিল আরজি কর হাসপাতালের (RG Kar Medical College) এমএসভিপি সঞ্জয় বশিষ্ঠকে। বিক্ষোভের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন সুপার। তাঁকে আইসিইউয়ে রাখতে হয়। রাতেই সুপারকে দেখতে হাসপাতালে যান তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন।
ঘটনার সূত্রপাত, পড়ুয়াদের ১২ দফা দাবি ঘিরে। যা না মেটায় বুধবার অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে নতুন করে আন্দোলনে নামেন আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়ারা। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পোস্টার লাগানো হয় মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে। কিন্তু সুপার সঞ্জয় বশিষ্ঠ সেগুলি খুলে ফেলার নির্দেশ দেন।
এরপরই সুপারকে ঘেরাও করা হয়। এমনকী, সুপারকে তালা বন্ধ করে রেখে দেওয়া বলেও দাবি হাসপাতালের একটি সূত্রের। তিনি সুগারের রোগী। জলও পর্যন্ত খেতে পারেননি বলে গুরুতর অভিযোগ ওঠে। এরপর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় প্রথমে ইমারজেন্সিতে এবং পরে আইসিইউ-তে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসক পড়ুয়াদের অভিযোগ, অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ স্বৈরাচারী মনোভাব দেখাচ্ছেন। ১২ দফা দাবিতে চলা আন্দোলনে হস্টেল সমস্যার বিষয় যেমন রয়েছে, তেমনই আছে চিকিৎসক পড়ুয়াদের হেপাটাইটিস বি টিকাকরণ না হওয়া, কলেজ চত্বরে ছাত্র-ছাত্রীদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ এবং সর্বোপরি হস্টেল কমিটি গঠন নিয়ে চিকিৎসক পড়ুয়াদের অসন্তোষ রয়েছে।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ বলেন, “এর পিছনে নিশ্চয়ই কোনও চক্রান্ত আছে। বাংলার সুন্দর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা রয়েছে তা কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছে। কারা এই বিশৃঙ্খলা করতে চাইছে আমরা তাদের শনাক্ত করতে পেরেছি। এই যে ছাত্ররা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তাদের সঙ্গে আমি নিজে আলোচনায় বসেছি। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন, নিজেদের দাবিও জানিয়েছেন। সেই দাবি নিয়ে আমি অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলে স্টুডেন্ট কাউন্সিল তৈরি করা হয়েছে। সেই কমিটির অর্ডার বেরিয়ে একদিন আগে। তার মধ্যেই আবার বিক্ষোভ! ”
অন্যদিকে এই বিক্ষোভ নিয়ে আইএমএ’র রাজ্য সম্পাদক শান্তনু সেন বলেন, “ছাত্রদের সঙ্গে অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মান অভিমান, দাবি দাওয়া। এটা একেবারেই একটা পরিবারের মধ্যে বিষয়। আমি ভীষণ ভাবে বিশ্বাস করি আলোচনার মাধ্যমেই এটা মিটে যাবে। আরজি করের যে ঐতিহ্য, গরিমা তা স্বমহিমায় বজায় থাকবে।”
গত অগস্টে পড়ুয়াদের ১২ দফা দাবি নিয়ে কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক ডেকে সমস্যার সমাধান করা হবে বলে ছাত্র-ছাত্রীদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনও সেই বৈঠক কেন ডাকা হল না তা অধ্যক্ষের কাছে জানতে চাওয়া হলে বলা হয়, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ। ছাত্র-ছাত্রীদের বক্তব্য, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আড়ালে সমস্যার সমাধান করতে চাইছেন না অধ্যক্ষ।