RG Kar হাসপাতালে হবু ডাক্তারদের ‘ঘেরাও’, অসুস্থ হয়ে আইসিইউ-তে ভর্তি উপাধ্যক্ষ
RG Kar Medical College Protest: উদ্ভুত পরিস্থিতির জেরে স্বাস্থ্য ভবনের কর্তাদের কাছে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশ করেছেন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ।
কলকাতা: হবু চিকিৎসকদের লাগাতার বিক্ষোভে (Protest) ফের পরিস্থিতি বিগড়ে গেল আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (RG Kar Medical College)। ঘেরাওয়ের জেরে রীতিমতো অসুস্থ হয়ে পড়েছেন হাসপাতালের এমএসভিপি সঞ্জয় বশিষ্ঠ। এমনকী, তাঁকে আইসিইউতেও ভর্তি করতে হয়েছে বলে খবর। অন্যদিকে, চিকিৎসক পড়ুয়ারা লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। একাধিক দাবি-দাওয়া পূরণ না হওয়ায় অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে সরব তাঁরা। মঙ্গলবার বেশি রাতের দিকে অসুস্থ হাসপাতাল সুপারকে দেখতে হাসপাতালে হাজির হন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন। তবে হাসপাতালের অচলাবস্থা এখনও অব্যাহত রয়েছে বলে খবর। অধ্যক্ষ গত দু’দিন ধরে হাসপাতালেও আসেননি।
একাধিক দাবি-দাওয়াকে কেন্দ্র করে অগস্ট মাসেও একবার অধ্যক্ষকে ঘেরাও করেছিল ডাক্তারি পড়ুয়ারা। সেই সময় কোনও মতে গোটা বিষয়টি ধামাচাপা পড়লেও গত দু’দিন ধরে আবার পড়ুয়াদের বিক্ষোভ হাসপাতালে শুরু হয়। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক বিতর্কিত পোস্টার দেয় বিক্ষোভকারীরা। প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে পড়া সেই পোস্টারগুলি খুলে নেওয়ার নির্দেশ দেন এমএসভিপি। সূত্রের খবর, এরপর বুধবার বিকেলের পর উপাধ্যক্ষ সঞ্জয় বশিষ্ঠকেও ঘেরাও করা হয়। এমনকী, সুপারকে তালা বন্ধ করে রেখে দেওয়া বলেও দাবি হাসপাতালের একটি সূত্রের। তিনি সুগারের রোগী। জলও পর্যন্ত খেতে পারেননি বলে গুরুতর অভিযোগ ওঠে। এরপর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় প্রথমে ইমারজেন্সি, এবং পরে আইসিইউ-তে ভর্তি করা হয়। আপাতত তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল বলেই জানা গিয়েছে।
এই নিয়ে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ সুপার বা অধ্যক্ষের কোনও বয়ান এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে সূত্রের খবর, উদ্ভুত পরিস্থিতির জেরে স্বাস্থ্য ভবনের কর্তাদের কাছে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশ করেছেন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। তিনি দু’দিন ধরে হাসপাতালেও আসতে পারছেন না।
যদিও গোটা ঘটনা নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের বক্তব্য, এমএসভিপি তাঁদের কথা না শুনে নিজেকে তালাবন্দি করে রাখেন। উল্টোদিকে ছাত্ররাও বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে ঘরের বাইরে বসে পড়েন। সকাল ১১টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ঘরবন্দি ছিলেন এমএসভিপি। রাতে অসুস্থ বোধ করলে তাঁকে প্রথমে প্রশাসনিক ভবনের একতলায় রেখে চিকিৎসা করা হয়। এরপর কার্ডিওলজির আইসিইউয়ে তাঁকে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই এখন চিকিৎসাধীন তিনি। তাঁর ইকো করা হয়েছে।
চিকিৎসক পড়ুয়াদের অভিযোগ, অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ স্বৈরাচারী মনোভাব দেখাচ্ছেন। ১২ দফা দাবিতে চলা আন্দোলনে হস্টেল সমস্যার বিষয় যেমন রয়েছে, তেমনই আছে চিকিৎসক পড়ুয়াদের হেপাটাইটিস বি টিকাকরণ না হওয়া, কলেজ চত্বরে ছাত্র-ছাত্রীদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ এবং সর্বোপরি হস্টেল কমিটি গঠন নিয়ে চিকিৎসক পড়ুয়াদের অসন্তোষ রয়েছে। মাসখানেক আগে এ সকল দাবিতেই শুরু হয়েছিল আন্দোলন। ৪৮ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা অবস্থান বিক্ষোভের পরে কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক ডেকে সমস্যার সমাধান করা হবে বলে ছাত্র-ছাত্রীদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কেন বৈঠক ডাকা হল না তা অধ্যক্ষের কাছে জানতে চাওয়া হলে বলা হয়, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ। ছাত্র-ছাত্রীদের বক্তব্য, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আড়ালে সমস্যার সমাধান করতে চাইছেন না অধ্যক্ষ।
আরও পড়ুন: বাংলার ৬১ বিজেপি বিধায়কের নিরাপত্তা ফিরিয়ে নিল কেন্দ্র, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের চিঠি এল নবান্নে