CPIM Brigade: যতবার ব্রিগেড, ততবার…, সচিনের সুধীর থাকলে, বুদ্ধবাবুর রয়েছেন রবি, কে এই ‘কমরেড’
CPIM Brigade: ভালবাসা বামপন্থা, প্রিয় বাম নেতা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কোনওভাবেই আটকে রাখতে পারেনি রবিদাসকে। উইল চেয়ারে চড়েই ছুটে এসেছেন ব্রিগেডে যোগ দিতে। সাতসকালে দেখা মিলল তাঁর। প্রতিবার যেখানে বামেদের সভা হয় সেখানে চলে যান তিনি।
কলকাতা: যখনই ব্রিগেড, তখনই রবি দাস। বুদ্ধবাবু যতবার ব্রিগেড করেছেন, ততবারই এসেছেন তিনি। পায়ে হেঁটে নয়। হুইলচেয়ারে কয়েকশো কিলোমিটার উজিয়ে। প্রতিবন্ধকতা কখনও ‘বিধি বাম’ হয়ে দাঁড়ায়নি লাল স্রোতে ভেসে যাওয়ার জন্য। অনেকে সচিন তেন্ডুলকারের ‘অন্ধ ভক্ত’ সুধীর চৌধুরীর সঙ্গে তুলনা করেন অনেকে। আজ বুদ্ধবাবু বিছানায়। শত মন খারাপ সত্ত্বেও ব্রিগেডের ডাকে সাড়া দিতে ভুললেন না লটারি বিক্রেতা রবি দাস।
বলা ভাল, ব্রিগেডে হাজার হাজার মানুষের সমাবেশের মধ্যে এ যেন এক অন্য ছবি। ব্রিগেডে বাম যুবদের জনসভা। দলকে ভালোবেসেই চার দিন আগে থেকেই ব্রিগেডের মাঠে রবি দাস। রবিবার ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই হুইলচেয়ারে চেপে চলে এসেছেন ব্রিগেডের মাঠে। লাল পতাকা লাল বেলুন এ সুসজ্জিত হয়ে হুইল চেয়ারে বসে বিষোদগার করলেন তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে। ছোট থেকেই তিনি হাঁটতে পারেন না। সম্বল হুইলচেয়ার। তাতেই চেপেই ছুটে যান দূর-দূরান্ত। সুযোগ পেলে পার্টির প্রায় সব সভা সমাবেশে যোগ দেন। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা অন্তরায় বলেও মনের জোরই শেষ কথা, নিজেই সে কথা বলছেন রবি দাস।
বাড়ি তাঁর হালিশহরে। যেখানে যেখানে বামেদের সভা হয় হুইল চেয়ার নিয়ে পৌঁছে যান তিনি। সিঙ্গুর আন্দোলনের সময়েও সিপিএম-এর হয়ে সওয়াল করতে এই হুইলচেয়ারে করেই পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। আজও ব্রিগেডে হাজার মানুষের মাঝে তিনি যেন এক জ্যোতিষ্কের মতোই বসে আছেন নিজের গরিমায়। তাঁর প্রিয় নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাঁর হেন সভা নেই যেখানে তিনি যাননি। কিন্তু, শারীরিক অসুস্থতার জন্য ব্রিগেডে থাকতে পারছেন না বুদ্ধদেব। তাতে যেন মনটা একটু খারাপ রবি দাসের। বলছেন, “আমি তো বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সব সভাতে গিয়েছি। তিনি যদি আজ ব্রিগেডে আসতেন খুবই ভাল হত। ওনার শরীর খারাপের খবর শুনে আমি গিয়েছিলাম। তখন আবার তৃণমূলের লোক আমার উপর হামলা করেছিল।”
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে শেষবার ব্রিগেড হয়েছিল ডিওয়াইএফআইয়ের ডাকে। তারপর ২০২৪। ১৬ বছর পর বাম যুব সংগঠনের এই ব্রিগেড ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে বলে মনে করছেন রবিদাস। বলছেন, আজকে ব্রিগেড যা হবে তা ইতিহাসের পাতায় নাম তুলবে। বারবার বলা হয় বামেরা শূন্য। কিন্তু, আজ সেই ভুল ভাঙবে। মীনাক্ষীর কথা শুনবে সবাই। কিন্তু, এই শরীর নিয়ে এত দৌড়াদৌড়িতে কষ্ট হয় না? প্রশ্ন শুনে একটু হেসেই রবি দাস বললেন, “গোটা বাংলা ঘোরা আছে। দিল্লি গিয়েছিলাম। বৃষ্টি মাথায় নিয়েও নানা প্রান্তে ছুটে গিয়েছি। আমার শরীরের এই অবস্থা তো জন্ম থেকেই। পার্টিতে আমি ভালবাসি। তাই এই অসুবিধাকে কোনওদিন অসুবিধাই মনে করিনি। পার্টির ডাকে ছুটে গিয়েছি।”