আইন ‘অমান্য’, এবার সিবিআই-ইডিকেই ‘তলব’ করা হচ্ছে বিধানসভায়

Narad Case: ২০১৬-র বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির অফিস থেকে নারদ স্টিং অপারেশনের ভিডিও প্রকাশ করা হয়। সেখানে এক ডজনের উপর তৃণমূলে প্রভাবশালীকে টাকা নিতে দেখা যায়।

আইন 'অমান্য', এবার সিবিআই-ইডিকেই 'তলব' করা হচ্ছে বিধানসভায়
আইন মেনে চার্জশিটে জনপ্রতিনিধিদের নাম তোলা হয়নি বলে অভিযোগ।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 11, 2021 | 2:02 PM

কলকাতা: বিধায়ক-মন্ত্রীদের যদি কোনও তদন্তকারী সংস্থাকে ডেকে পাঠাতে হয় কিংবা তদন্ত প্রক্রিয়ায় যুক্ত করতে হয়, সে ক্ষেত্রে বিধানসভার অধ্যক্ষের অনুমতি প্রয়োজন হয়। কিন্তু এ রাজ্যে সিবিআই বা ইডি তদন্তে নামলেও আইন মেনে এগোয়নি বলেই অভিযোগ বিধানসভা কর্তৃপক্ষের। চার্জশিটে মন্ত্রী-বিধায়কদের নাম তুলে দিলেও, জানতেই পারেননি অধ্যক্ষ। এবার সেই ‘বিধি ভঙ্গের’ জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদেরই বিধানসভায় ‘তলব’ করতে চলেছেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।

জন প্রতিনিধিদের চার্জশিট দেওয়ার ক্ষেত্রে যে আইন রয়েছে, তা লঙ্ঘন করেছে ইডি ও সিবিআই। আর তা ইচ্ছাকৃত ভাবেই করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় সংস্থার বিরুদ্ধে। সিবিআই ও ইডির কাছ থেকে এ নিয়ে জানতে চায় বিধানসভা কর্তৃপক্ষ। শনিবার এ নিয়ে চিঠিও পাঠাবে তারা। ওই দুই সংস্থার চিঠির জবাবে কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট না হলে সশরীরে হাজির হতে হবে সিবিআই ও ইডি অধিকারিকদের। একইসঙ্গে অধ্যক্ষের অনুমোদন ছাড়া ইডি ও সিবিআই কী ভাবে চার্জশিট দিল, সে প্রশ্নও তুলেছে বিধানসভা কর্তৃপক্ষ।

অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তিন জনপ্রতিনিধির কাছে বিধানসভা মারফত ইডি সমন পাঠাতে বলেছিল। সেই সমনের মাধ্যমে জানা গিয়েছে, জন প্রতিনিধিদের নাম রয়েছে চার্জশিটে। তবে সেই সমন অভিযুক্তদের কাছে পাঠানোর দায়িত্ব বিধানসভার নয়, তাই তারা পাঠাতেও পারবে না।

প্রসঙ্গত, তিন জনপ্রতিনিধি ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নারদ মামলায় ইডি চার্জশিট দেয়। সেই সূত্রে ইডির যে বিশেষ আদালত রয়েছে, তারা সমন পাঠায় বিধানসভাতে। মূলত অভিযুক্তদের কাছে তা পৌঁছে দিতেই বিধানসভায় তা পাঠানো হয়। এরপরই বিধানসভা কর্তৃপক্ষ জানতে পারে, চার্জশিটে এই তিনজনের নাম রয়েছে। কিন্তু জনপ্রতিনিধিদের চার্জশিটে রাখতে গেলে যে আইন রয়েছে, সেই আইন এ ক্ষেত্রে লঙ্ঘণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বিধানসভার সচিবালয় বলছে, ইচ্ছাকৃত ভাবেই তা করা হয়েছে। এই কারণ যেমন রয়েছে ইডি ও সিবিআইকে চিঠি দেওয়ার ক্ষেত্রে।

অন্যদিকে চার্জশিটে নাম রাখতে গেলে অধ্যক্ষকে বিষয়টি জানাতে হয়। কিন্তু তা কেন করা হয়নি তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। শনিবারই এই চিঠি যাচ্ছে বলে খবর।

উল্লেখ্য, নারদ মামলায় ইতিমধ্যেই সিবিআই চার্জশিট পেশ করেছে। তবে এখনও ইডির চার্জশিট জমা পড়েনি। এই প্রেক্ষিতে চূড়ান্ত চার্জশিট জমা দেওয়ার আগে সিবিআই-র স্পেশাল কোর্টে ইডি জানিয়েছে, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং ফিরহাদ হাকিমকে আগামী ১৬ নভেম্বর তারা জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে সিবিআই-র বিশেষ আদালতের নির্দেশ, বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাধ্যমে তিন বিধায়ককে সমন পাঠানো হবে।

২০১৬-র বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির অফিস থেকে নারদ স্টিং অপারেশনের ভিডিও প্রকাশ করা হয়। সেখানে এক ডজনের উপর তৃণমূলে প্রভাবশালীকে টাকা নিতে দেখা যায়। যদিও সেই ভিডিও-র সত্যতা যাচাই করেনি টিভি নাইন বাংলা। সেই সময় তৃণমূলে থাকা একাধিক নেতা এখন বিজেপিতে। এর মধ্যে মুকুল রায় ফের তৃণমূলে ফিরে এসেছেন। গত ১৭ মে সুব্রত-মদন-ফিরহাদকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এর পরই নতুন করে শিরোনামে উঠে আসে এই মামলা। অবশ্য তিনজনই জামিনে মুক্ত।

আরও পড়ুন: Fire at Taratala: বিধ্বংসী আগুন শহরে! দাউ দাউ করে জ্বলছে গুদাম, অনর্গল বেরিয়ে আসছে কালো ধোঁয়া