SSC Recruitment Case: আপাতত স্বস্তি কমিশনের, গ্রুপ-ডি মামলায় সিবিআই অনুসন্ধানে স্থগিতাদেশ

এসএসসি-র নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিল সিঙ্গল বেঞ্চ। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। ডিভিশন বেঞ্চে তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ দিল।

SSC Recruitment Case: আপাতত স্বস্তি কমিশনের, গ্রুপ-ডি মামলায় সিবিআই অনুসন্ধানে স্থগিতাদেশ
অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 24, 2021 | 5:27 PM

কলকাতা: স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) গ্রুপ ডি (Group D) পদে নিয়োগের মামলায় সিবিআই (CBI) অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টের (High Court) সিঙ্গল বেঞ্চ। আজ সেই রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ দিল বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ। সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। আজ সেই মামলার শুনানি ছিল। তিন সপ্তাহের জন্য সিবিআই অনুসন্ধানে স্থগিতাদেশ দিল আদালত। আগামী সোমবার ফের এই মামলার শুনানি থাকছে।

প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও ২৫ জনের নিয়োগ হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে কমিশনের বিরুদ্ধে। সেই  অভিযোগ থেকেই এই মামলার সূত্রপাত। কমিশন আদালতে জানিয়েছিল, তারা ওই ২৫ জনের নিয়োগের সুপারিশ করেনি। তাহলে কী ভাবে নিয়োগ হল সুপারিশ ছাড়া কী ভাবে ওই ২৫ জন দু বছর ধরে চাকরি করছে সেই প্রশ্ন সামনে আসে। এরপরই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো প্রস্তুতিও শুরু করেছিল সিবিআই। এরই মধ্যে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় কমিশন।

যেহেতু তিন সপ্তাহের স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে, তাই প্রমাণ লোপাটের বিষয়টিও মাথায় রাখেন বিচারপতিরা। আজ দুপুর ৩ টের মধ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত নথি সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল কমিশনের। প্রমাণ লোপাটের কথা মাথায় রেখে আদালতের তরফে বলা হয়েছে, কমিশন ও বোর্ড সব নথি জমা দেবে যে গুলি সিবিআই কে দেওয়ার কথা ছিল। সিল কভারে আদালতে সেই রিপোর্ট জমা দিতে হবে।

এই মামলায় ওই ২৫ জনের বেতন বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছিল আদালত। যে ২৫ জনের বেতন বন্ধ হয়ে গিয়েছে আজ তাঁদের হয়ে আইনজীবী শক্তিনাথ মুখোপাধ্যায় আদালতকে জানান, ‘সিঙ্গল বেঞ্চ অভিযুক্তদের মামলায় বলতে না দিয়েই বেতন বন্ধ করে দিয়েছে। এটা কোনও জনস্বার্থ মামলা নয়। সে ক্ষেত্রে তাঁদের বলতে দিতেই হবে।’

রাজ্যে পুলিশের প্রয়োজনীয়তা কোথায়!

মমালার শুরুতেই এ দিন রাজ্যের হয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় তাঁর বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ‘৪ মে ২০১৯-এ প্যানেল এক্সপায়ার (মেয়াদ উত্তীর্ণ) করে। দুটি সংস্থা দু ধরনের তথ্য দিচ্ছে। এখানে আপত্তি ওঠে। হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে দিয়ে যাতে তদন্ত করানো যায়, এই আর্জি জানানো হয় রাজ্যের তরফে। সেটা মানা হয়নি।’ রাজ্য জানিয়েছিল, বিরল ক্ষেত্রেই সিবিআই হয়। রাজ্যের দাবি,পুলিশকে জানানোর পরেও তারা কিছু করেনি এমনটা নয়।

তাই রাজ্যের বক্তব্য, বিশেষ টিম করা যেতে পারত, সেখানে কোন কোন পুলিশ থাকবেন আদালত তা নির্দিষ্ট করলেও কোনও আপত্তি ছিল না রাজ্যের। কিন্তু বিচারপতি সেটা শোনেন নি। বিচারপতি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় রায়ে উল্লেখ করেছেন, পুলিশ রাজ্য দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, তাই সিবিআই। এজির প্রশ্ন, ‘তাহলে রাজ্যে পুলিশের প্রয়োজনীয়তা কোথায়?’

বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন প্রশ্ন করেন, ‘বোর্ডের অভিযোগের পর কমিশন কি কোনও পদক্ষেপ নিয়েছে? নিজেদের মধ্যে কোনও মিটিং করেছে? ‘এজি জানান, ‘মিটিং হয়েছে।’ নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়ার আর্জি জানান তিনি।

‘এটা আসলে খুব সরল বিষয় নয়’

বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এ দিন বলেন, ‘সমস্যার শুরু কমিশন থেকে। যেখানে আপনারা বলছেন সুপারিশ করিনি অথচ বোর্ড বলছে আপনারাই করেছেন। কমিশন নিশ্চয় দোষীকে আড়াল করবে না। এজি খুব সুন্দর করে বোঝাতেই পারেন, তবে এটা আসলে যে খুব সরল বিষয়, তা নয়।’

কমিশনের আইনজীবী কিশোর দত্ত বলেন, ‘কমিশন কোনও অনুসন্ধানের বিরুদ্ধে নয়। আমরা বলেছি অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে দিয়েই তদন্ত হোক।’ কেন সিবিআই তদন্ত চান না নয় তার যুক্তিতে তিনি কিছু রায়ের উল্লেখ করেন। বোর্ডও জানায় তাদের তদন্তে আপত্তি নেই।

ঠিক কী নিয়ে মামলা?

২০১৬ সালে রাজ্যে গ্রুপ ডি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। সেই মতো ১৩ হাজার নিয়োগ হয়। ২০১৯ সালের মে মাসে সেই গ্রুপ ডি প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়। তারপরেও একাধিক নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ২৫ জনের নিয়োগের সুপারিশের কথা জানা গিয়েছে। সেই তথ্য হাইকোর্টের হাতে আসে। কী ভাবে মেয়াদ উত্তীর্ণ নিয়োগ তালিকা থেকে নিয়োগ তারই কৈফিয়ত চায় হাইকোর্ট। পরে কমিশন জানায় তারা কোনও সুপারিশ করেনি। এদিকে, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ হল এই নিয়োগের ‘অ্যাপয়েন্টিং বডি’, আর কমিশন হল ‘রিক্রটমেন্ট বডি’। আদালতকে পর্ষদ জানায়, কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী তারা এই নিয়োগ করে। নিয়োগ নিয়ে দুই সরকারি দফতরের দ্বন্দ একেবারে প্রকাশ্যে চলে আসে। এরপর ২৫ জনের বেতন বন্ধ করার নির্দেশ দেন বিচারপতি। পরে ওই মামলায় সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: ‘দূষণ কমলেও মামলা বন্ধ হবে না’, আমলাদের নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় ক্ষুব্ধ সুপ্রিম কোর্ট