SSC Recruitment: ২৫ নয়, ৫০০ জনের নিয়োগে দুর্নীতি! পর্ষদ বলছে, সুপারিশ করেছে কমিশনই
SSC Recruitment: মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, দুর্নীতি যে হয়েছে এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এই দুর্নীতির জন্য ফৌজদারি তদন্তের দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা।
কলকাতা : স্কুল সার্ভিস কমিশনের গ্রুপ ডি নিয়োগের মামলায় উঠে এল আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। ২৫ জনের নয়, অন্তত ৫০০ জনের নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে বলে দাবি মামলাকারীদের। সেই ৫০০ জনের নাম-ঠিকানা জানতে চাইল আদালত। অন্যদিকে, এই মামলায় নিয়োগ নিয়ে দুই সরকারি দফতর স্কুল সার্ভিস কমিশন ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল। একদিকে যখন কমিশন বলছে, ২৫ জনের নিয়োগ নিয়ে তাদের কাছে কোনও তথ্য নেই। অন্যদিকে, পর্ষদের দাবি, কমিশনের সুপারিশেই ওই ২৫ জনকে নিয়োগ করেছে তারা।
নিয়োগ সংক্রান্ত এই মামলায় নিয়োগের অনিয়ম নিয়ে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। গতকাল স্কুল সার্ভিস কমিশনের সচিবকে তলব করা হয়েছিল আদালতে। সেই মতো উপস্থিত হন সচিব। কমিশনের তরফে হলফনামায় জানানো হয়, নিয়োগের সুপারিশ তারা করেনি। তাহলে কী ভাবে ওই ২৫ জন গত ২ বছর ধরে চাকরি করছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যেহেতু কমিশনও চাকরির বিষয়ে জানে না, তাই গতকাল ওই ২৫ জনের বেতন বন্ধ করার নির্দেশ দেয় আদালত। পাশাপাশি ২৫ জনকে আদালতে উপস্থিত হতে বলা হয়।
আজ সেই মামলায় আরও ৫০০ জনের নিয়োগের ক্ষেত্রে একই অভিযোগ রয়েছে বলে জানান মামলাকারীরা। তাঁদের তাদের নাম, ঠিকানা জানাতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। মামলাকারীরা আদালতে জানাবেন সেই তথ্য। সেই সঙ্গে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদকে জানাতে হবে কী ভাবে এরা চাকরি পেয়েছিলেন। বোর্ডের আইনজীবী কুহেলি ভট্টাচার্য মঙ্গলবার পর্যন্ত সময় চেয়েছিলেন কারণ চলতি সপ্তাহে ছুটি আছে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, যেখানে বড় দুর্নীতি রয়েছে, সেখানে কোনও ছুটি হতে পারে না। আগামী সোমবার সাড়ে তিনটে ফের এই মামলার শুনানি।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ হল এই নিয়োগের ‘অ্যাপয়েন্টিং বডি’, আর কমিশন হল ‘রিক্রটমেন্ট বডি’। এ দিন আদালতকে পর্ষদ জানিয়েছে, কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী তারা এই নিয়োগ করেছে। নিয়োগ নিয়ে দুই সরকারি দফতরের দ্বন্দ একেবারে প্রকাশ্যে চলে এল। নিয়োগ সংক্রান্ত সব নথি দেখতে চায় আদালত। মামলাকরীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘দুর্নীতি যে হয়েছে এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।’ এই দুর্নীতির জন্য ফৌজদারি তদন্তের দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা।
কমিশনকে গতকালই হলফনামা দিতে বলা হয়েছিল। হলফনামায় কমিশন জানায়, তারা এই চাকরির সুপারিশ করেনি। কমিশনের কোনও আঞ্চলিক অফিস থেকে চাকরি হয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ২০১৬ সালে রাজ্যে গ্রুপ ডি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। সেই মতো ১৩ হাজার নিয়োগ হয়। ২০১৯ সালের মে মাসে সেই গ্রুপ ডি প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়। তারপরেও একাধিক নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ২৫ জনের নিয়োগের সুপারিশের কথা জানা গিয়েছে। সেই তথ্য হাইকোর্টের হাতে আসে। কী ভাবে মেয়াদ উত্তীর্ণ নিয়োগ তালিকা থেকে নিয়োগ তারই কৈফিয়ত চায় হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: TET Agitation: ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নিয়োগ করতে হবে, প্রয়োজনে আবার কালীঘাটে যাবেন চাকরি প্রার্থীরা