Subrata Mukherjee Passes Away: মিছিল করে কেওড়াতলা পর্যন্ত প্রিয় সুব্রতদাকে এগিয়ে দিল অগণিত গুণমুগ্ধ
Subrata Mukherjee: এদিন দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে বিশাল ব্যানার নিয়ে কেওড়াতলা মহাশ্মশানের পথে একটি মিছিল এগিয়ে চলে।
কলকাতা: রাজনীতির মানুষ সুব্রত মুখোপাধ্যায়। রাজনীতির অলিন্দে তাঁর সফল পদচারণ। কিন্তু মানুষ হিসাবেও সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের যে এত গুণমুগ্ধ রয়েছে, তা বোধহয় তিনিও বোঝেননি। শুক্রবার বালিগঞ্জের বাড়ি হয়ে একডালিয়া এভারগ্রিনে শেষবারের মতো ঘুরে সুব্রত চললেন মহাসিন্ধুর ওপারে। চললেন কেওড়াতলা মহাশ্মশানে। আর প্রিয় ‘সুব্রতদা’কে এগিয়ে দিতে পায়ে পায়ে চলল গোটা দক্ষিণ কলকাতা। এ এক অদ্ভূত বিষাদের ছবি। আলোর উৎসবের মাঝে ঝুপ করে যেন অন্ধকার নামল শহরের বুকে।
সবসময় হাসিমুখ, ফ্যাসফ্যাসে গলায় মজার সব টিপ্পনি। আবার বিপদে আপদে তিনিই জননেতা। বালিগঞ্জ, গড়িয়াহাট এলাকায় সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলতে সকলে যেন এক ঢোক জল বেশিই খায়। আসলে তিনি মানুষটাই এমন ছিলেন। পরিষদীয় রাজনীতিতে ৫০ বছর কাটিয়েও কোনও বর্ম পরেননি। বিধায়ক, মন্ত্রী হয়েও বালিগঞ্জের মানুষের কাছে তিনি পাশের বাড়ির ছেলে হয়েই থেকে গিয়েছেন। এটাই সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ইউএসপি।
কেওড়াতলা মহাশ্মশানে গান স্যালুট দেওয়া হবে সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। ইতিমধ্যেই মালা রায়, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যরা সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন। সেখানেই যাবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ আসেননি। হয়ত টেলিভিশনের পর্দায় সুব্রতদার শেষযাত্রা দেখছেন। বৃহস্পতিবারই এসএসকেএম হাসপাতালে দাঁড়িয়ে মমতা বলেছিলেন, তাঁর সুব্রতদার মৃতদেহ তিনি দেখতে পারবেন না। শুক্রবার রবীন্দ্রসদন, বিধানসভা, বালিগঞ্জের বাড়ি, একডালিয়া এভারগ্রিনে মানুষের ভিড় থিক থিক করেছে। শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থান তিনি চোখের সামনে দেখেছেন।
বৃহস্পতিবার তাই সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের অসুস্থতার কথা শুনে এসএসকেএমে ছুটে আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারাক্রান্ত গলায় শেষ দেখার স্মৃতিটুকু বলার চেষ্টা করেন মমতা। নিজেকে সামলে একটু ধরে আসা গলাতেই বলেন, “সেদিনও আমার সঙ্গে দেখা হল… হাসল। কথা হল। বললেন, ভাল আছেন। আবার জেলায় জেলায় যেতে চান, সে কথাও বললেন। কাল ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে হার্ট অ্যাটাক… কিচ্ছু করা গেল না।”
বুজে আসছিল মমতা বন্দ্যেোপাধ্যায়ের গলা। শেষ বেলার কিছু টুকরো টুকরো স্মৃতির মেঘ ভিড় করে আসছিল মমতার মনে। মমতা বলেন, “কিছুদিন আগে দার্জিলিঙে গিয়েও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন সুব্রতদা। কোনওরকমে বাঁচিয়ে নিয়ে এসেছিলাম…।” কিন্তু দীপাবলির রাতে নিভল সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের জীবন প্রদীপ।
শুক্রবার দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে বিশাল ব্যানার নিয়ে কেওড়াতলা মহাশ্মশানের পথে একটি মিছিল এগিয়ে চলে। সেই মিছিলের মাঝখানে শববাহী শকট। তার ভিতরে শুয়ে সুব্রত মুখোপাধ্যায়। শকটের সামনে রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও সুজিত বসু। সঙ্গে অগনিত সুব্রত-ভক্তরা। একডালিয়া এভারগ্রিন ক্লাবের লোকজন, পরিজন, পরিচিতও সে ভিড়ে মিলেমিশে রয়েছেন।