Panchayat Elections 2023: ‘বুথের বাইরে তখন প্রচুর দুষ্কৃতী, জেলাশাসকের থেকে বাহিনী চেয়েও পাইনি’
Panchayat Elections 2023: বাগনান ১ নম্বর ব্লকে নতিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটের কাজে গিয়েছিলেন পেশায় শিক্ষক নবীন ঘোষ। সেখানেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয় তাঁর।
কলকাতা: ১৯ মৃত্যু। শতাধিক আহত। দিকে দিকে হাহাকার। ৮ জুলাই, পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election 2023) ‘সলিল সমাধি’ দেখেছে বাংলা। কোথাও পুড়েছে জনমত, কোথাও প্রিসাইডিং অফিসারের মাথায় ঠেকেছে বন্দুক। প্রাণ হাতে করে কোনওমতে বাড়ি ফিরেছেন সেই সমস্ত সরকারি কর্মীরা। এদের মধ্যে অনেকেই আবার স্কুলের শিক্ষক। সেই সমস্ত ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথাই তাঁরা শোনালেন টিভি-৯ বাংলাকে।
বাগনান ১ নম্বর ব্লকে নতিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটের কাজে গিয়েছিলেন পেশায় শিক্ষক নবীন ঘোষ। কিন্তু, শনিবারের কথা ভাবলে এখনও আঁতকে উঠছেন তিনি। সারারাত তাঁর বুথ ঘিরে রেখেছিল দুষ্কৃতীরা। দফায় দফায় চলেছিল হামলা। ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল ব্যালট বাক্স। কিন্তু, একা হাতে দুষ্কৃতীদের চোখে চোখ রেখে ব্যালট সামলেছেন তিনি। সারারাত ব্যালট পাহারা দিয়ে পরের দিন ভোট করেছেন নবীনবাবু। সেই অভিজ্ঞতার কথাই বললেন তিনি…
নতিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৬ নম্বর বুথে পোলিং অফিসার হিসাবে গিয়েছিলাম। শুক্রবার সন্ধ্যাবেলা আমরা বুথে পৌঁছাই। রাতে ওখানেই ছিলাম। অনেক রাত পর্যন্ত বুথের কাজ করে আমরা ঘুমোতে যাই। তখন বৃষ্টি নেমেছে। বৃষ্টির আওয়াজের মধ্যেই শুনতে পাই দরজায় কারা যেন লাথি মারছে। বাইরে থেকেই চিৎকার করে ওরা বলতে থাকে ব্যালট দিয়ে দিতে হবে। কিন্তু, আমরা দরজা খুলিনি। ফোনেই ঘটনার কথা বিডিও, কমিশনকে জানাই। সেক্টরেও ফোন করি। ওখান থেকে বলে এত রাতে তো কিছু করা যাবে না। ওরা যদি ব্যালট চায় তাহলে ওদের ব্যালট দিয়ে দেবেন।
এরপর কয়েকজন নিরাপত্তা রক্ষী আসে। তাঁদের পক্ষে অত লোকের মধ্যে কিছু করা সম্ভব ছিল না। জেলাশাসকের থেকে বাহিনী চেয়েও পাইনি। ভয়ে আমরা ১২ জন ভোট কর্মী ভিতর থেকে দরজায় চাবি দিয়ে বসেছিলাম। বাইরে থেকে তখন অকথ্য ভাষায় গালাগালি চলছে। কিন্তু, ওই ভয়ের আবহেও আমরা ব্যালট দিইনি। সকালের আলো ফুটতেই ওরা আস্তে আস্তে গা ঢাকা দেয়। দূর থেকে দেখি মুখে সব কালো মাস্ক পরে আছে। কাউকেই আমরা চিনতে পারিনি। আমি মোট ৮টা ভোট করেছি। কিন্তু, এরকম ভোট আগে কখনও করিনি।