Panchayat Elections 2023: পঞ্চায়েতের হিংসায় রক্তের দাগ স্কুলেও, কতটা প্রভাব পড়বে পড়ুয়াদের মনে?
Panchayat Elections 2023: ভেঙেচুরে পড়ে রয়েছে চেয়ার-টেবিল, এখনও লেগে রয়েছে রক্তের দাগ। গণতন্ত্রের উৎ'শবে’ এই ছবিই দেখা গিয়েছে রাজ্যের একাধিক স্কুলে। রক্তরাঙা এ ছবি কতটা প্রভাব ফেলবে ছাত্রছাত্রীদের মনে? কী বলছেন শিক্ষাবিদরা?
কলকাতা: এ যেন এক অন্য ‘স্কোরবোর্ড’। তবে স্কোর বাড়লে নেই উচ্ছ্বাস। উল্টে রয়েছে শুধুই বিষাদ। এ যেন মাঠে নামতে না নামতেই ‘বোল্ড আউড’। তবে এই আউটে শুধু উইকেট নয়, গিয়েছে তরতাজা সব প্রাণ। রক্তগঙ্গা বয়েছে গ্রাম বাংলার আনাচে কানাচে। শনিবার দিনভর এভাবেই পঞ্চায়েত ভোটের সলিল সমাধি দেখতে পাওয়া গিয়েছে গোটা রাজ্যে। বিরোধীদের দাবি, ভোটের নামে চলেছে প্রহসন। অসমর্থিত সূত্রে খবর, গোটা রাজ্যে ভোটের (Panchayat Election 2023) দিন মৃত্যুর সংখ্যা ১৯। যদিও ১০ মৃত্যুর কথা স্বীকার করলেও বাকিগুলোর বিষয়ে নির্বাচন কমিশন (Election Commission) এখনও বলছে ‘খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে’। উত্তরবঙ্গ (North Bengal) থেকে দক্ষিণবঙ্গ (South Bengal), একের পর এক জেলায় একাধিক ভোট পর্বে একাধিক স্কুলে চলেছে ব্যাপক ভাঙচুর, বোমাবাজি। অনেক জায়গাতেই পড়েছে লাশ। যে স্কুলগুলি একদিন আগেও কচিকাঁচাদের কলরবে গুঞ্জরিত হত, সেখানে এখনও লেগে রয়েছে চাপ চাপ রক্তের দাগ। ভেঙে পড়ে রয়েছে চেয়ার, টেবিল। এই স্কুলগুলির চৌকাঠ আর পেরোতে পারবে তো পড়ুয়ারা? শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এ ছবি দেখে কী বলছেন শিক্ষাবিদরা?
কোচবিহার-১ ব্লকের ফলিমারিতেও ভোটের দিন দেখা গিয়েছিল এক নৃশংস ছবি। বুথের ভিতর বিজেপির পোলিং এজেন্টকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বুথের দরজাতে দীর্ঘক্ষণ পড়ে ছিল তাঁর দেহ। রক্তে ভেসেছিল মেঝে। এ দৃশ্য খুদে পড়ুয়াদের মনে বড় ছাপ ফেলবে বলে মনে করছেন মনোবিদ উর্মি চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “রাজনীতির বিষয়ে ঢুকব না। স্কুলটা তো পড়ুয়াদের খুব প্রিয় একটা জায়গা। সেই জায়গা যদি কেউ লন্ডভন্ড করে দেয় তাহলে তো ওদের মন খারাপ করবেই। সেখানে যদি রক্তের ছিটে লেগে থাকে তাহলে তো ওদের মনে আতঙ্ক তৈরি হবেই। প্রিয় যে কোনও জিনিস হারিয়ে গেলে, ভেঙে গেলে কারও মনে যে প্রভাব পড়ে, এ ক্ষেত্রেও ওদের মনে সেই প্রভাবই পড়বে।”
শুধু ফলিমারি নয়। রাজ্যের নানা প্রান্তেই দেখা গিয়েছে একই ছবি। দুবরাজপুর ব্লকের লোবা গ্রাম পঞ্চায়েতের লোবা গ্রামে ভোট কেন্দ্র তৈরি হয়েছিল এমএসকে স্কুলে। সেখানেও দেদার বোমাবাজি হয় বলে অভিযোগ। সেইসব ছবি পড়ুয়াদের মনে কতটা প্রভাব ফেলবে? সমাজকর্মী মীরাতুন নাহার মনে করছেন, এর খুব একটা বড় প্রভাব পড়ুয়া মনে পড়বে না। কিন্তু, আগামীতে তাঁদের ভুল পথে চালিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। তিনি বলেন, “প্রভাব পড়বে বলে আমি মনে করি না। একটা প্রতিক্রিয়া হবে পড়ুয়াদের মনে। তাদের যে জীবনে হিংসার একটা ছাপ লেগে যেতে পারে। বলা হয় যে ভোট মানে গণতন্ত্রের উৎসব। সেই উৎসবের ছিটেফোঁটা তারা দেখল না। তারা দেখল হিংসা। তাই আগামীতে এই হিংসার বশবর্তী হয়ে তারা সেই পথে চলতে পারে।”