TET 2022: ‘২ মিনিট দেরি’, পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে পারলেন না ক্যানসার আক্রান্ত TET পরীক্ষার্থী

TET 2022: পুনম বললেন, "এখানে এসে দুই মিনিটের জন্য আমাকে ঢুকতে দেওয়া হল না। ১১টা ৪৫ মিনিটে বন্ধ হয়েছিল গেট। আমি ১১টা ৪৭ মিনিটে এসে গিয়েছিলাম।"

TET 2022: '২ মিনিট দেরি', পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে পারলেন না ক্যানসার আক্রান্ত TET পরীক্ষার্থী
টেট না দিতে পেরে পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে কান্নায় ভেঙে পড়লেন পুনম
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 11, 2022 | 1:38 PM

কলকাতা: টেট (TET 2022) দিতে এসেছিলেন ক্যানসার আক্রান্ত পুনম কুমারী। মহেশতলা থেকে বাগবাজারে পরীক্ষা দিতে আসেন তিনি। পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল বাগবাজার মাল্টিপারপাস স্কুলে। পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছাতে কিছুটা দেরি হয়ে গিয়েছিল পুনমের। আর তাই অনুমতি পেলেন না পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের। পরীক্ষা না দিতে পেরে কান্নায় ভেঙে পড়লেন ক্যানসার আক্রান্ত পুনম। উল্লেখ্য, দুপুর ১২টা থেকে টেট পরীক্ষা শুরু। পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের জন্য অন্তিম সময় ছিল বেলা ১১টা পর্যন্ত। পরে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পরীক্ষার্থীদের ভেন্যুতে প্রবেশের জন্য সময়সীমা বাড়িয়ে ১১টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত করা হয়েছিল। কিন্তু পুনমের পরীক্ষাকেন্দ্রে আসতে ১১টা ৫০ বেজে গিয়েছিল। তাই ঢোকার অনুমতি পাননি তিনি। রাস্তায় যানজট, তার উপর ভেন্যুর ঠিকানা চিনতেও বেশ কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে তাঁকে। সব মিলিয়েই পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে দেরি হয়ে গিয়েছিল তাঁর। অনেক কাকুতি-মিনতি করার পরেও ঢুকতে পারেননি। এখনও পুনম পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরেই ঠাঁয় বসে রয়েছেন, মনের মধ্যে ক্ষীণ আশা নিয়ে।

পুনম কুমারী জানান, তিনি ১১টা ৪৬ মিনিটে গেটের প্রায় সামনে এসে গিয়েছিলেন। যে অ্যাপ বাইকে তিনি আসছিলেন, সেই বাইকের চালককে বলেছিলেন একটি ভিতরে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু তারপর আর আসেনি। এরপর তিনি তাড়াহুড়ো করে এসে পুলিশকর্মীদের অনুরোধ করেছিলেন, তাঁকে ঢুকতে দেওয়ার জন্য। জানান তাঁর শারীরিক অবস্থার কথা। বলেন, ‘থেরাপি চলছে, শরীর খারাপ, মাথা চক্কর দিচ্ছে’। কিন্তু কাতর আবেদনের পরেও কোনও লাভ হয়নি।

কেন পরীক্ষাকেন্দ্রে আসতে দেরি হল পুনমের? ক্যানসার আক্রান্ত ওই টেট পরীক্ষার্থী জানাচ্ছেন, “একটি ট্রেন মিস হয়েছিল। তারপর আমি অ্যাপ বাইকে করে এসেছি। দুটি অ্যাপ বাইক মিস হয়েছিল। তারপর কোনওরকমে এসেছি। কিন্তু এখানে এসে দুই মিনিটের জন্য আমাকে ঢুকতে দেওয়া হল না। ১১টা ৪৫ মিনিটে বন্ধ হয়েছিল গেট। আমি ১১টা ৪৭ মিনিটে এসে গিয়েছিলাম। আমার বয়স ৩৮ বছর হয়ে গিয়েছে। আর কখন পরীক্ষা হবে, দিতে পারব কি পারব না তাও বুঝতে পারছি না। পুলিশ বলছে, আমি নাকি নাটক করছি।”

পুনমের মা মারা গিয়েছেন। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা, এক ভাই ও তিন বোন রয়েছে। বর্তমানে প্যারাটিচারের একটি চাকরি করে কোনওরকমে সংসার টানেন তিনি। স্বপ্ন দেখেছিলেন, একটি চাকরি পেলে হয়ত পরিবারের মুখে হাসি ফোটাবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরীক্ষাকেন্দ্রেই ঢুকতে পারলেন না তিনি। তাঁর কাতর আবেদন, প্রশাসন যেন তাঁকে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার অনুমতি দেয়।