Jogesh Chandra Law College: যোগেশচন্দ্র আইন কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে CID তদন্তে স্থগিতাদেশ
Jogesh Chandra Law College: অর্থনৈতিক দুর্নীতি, জালিয়াতি-সহ একাধিক অভিযোগ ওঠে যোগেশচন্দ্র আইন কলেজে। কলেজের গভর্নিং বডি-র প্রাক্তন সদস্য নীল বসু ২০১৮ সালে অধ্যক্ষ সুনন্দা গোয়েঙ্কার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন
কলকাতা: যোগেশচন্দ্র আইন কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে সিআইডি তদন্তে স্থগিতাদেশ। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের ওপর অন্তবর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি সিদ্ধার্থ রায় চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ। ৮ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানি। ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, অধ্যক্ষ সুনন্দা গোয়েঙ্কার আবেদন গ্রহনযোগ্য। এদিনের শুনানির সময়ে আদালতে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, সুনন্দা গোয়েঙ্কা মামলায় কলকাতা পুলিশের অ্যান্টি ফ্রড সেকশন তদন্তে অকৃতকার্য হওয়ার পর সিঙ্গল বেঞ্চ মামলা সিআইডিকে হস্তান্তর করেছে। এদিনের শুনানিতে রীতিমতো বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর প্রশ্নের মুখে পড়েন মামলাকারী। মামলাকারীকেই তিনি বলেন, “আপনাদের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে, আপনারা ম্যাজিস্ট্রেটকে এড়িয়ে গিয়ে, হাইকোর্টে এসেছেন সিআইডি তদন্তের নির্দেশ নিতে। দশ বছর চুপ করে বসেছিলেন কেন?”
সুনন্দার আইনজীবী সুবীর সান্ন্যাল বলেন, “সিঙ্গল বেঞ্চ কোনওভাবেই এই মামলায় নির্দেশ দিতে পারে না। ২০১৮ সালের অক্টোবরে এই মামলা ফাইল হয়। নির্দেশ মতো ২০২২ সালে রিপোর্টও ফাইল হয়। এই মামলা পরবর্তী কালে অ্যান্টি ফ্রড সেকশনে হস্তান্তরিত হয়।”
বিচারপতি বলেন, “এই মামলার কি কোনও ভাবে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে? যেখানে এই মামলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পেন্ডিং! জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের যথেষ্ট ক্ষমতা আছে রিপোর্ট দেখে পরবর্তী তদন্তের জন্য নির্দেশ দেওয়ার।” ডিভিশন বেঞ্চ আরও স্পষ্ট করে দেয়, “সিঙ্গল বেঞ্চের এই মামলায় হস্তক্ষেপ করার কোনও কারণ নেই। এখানে সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি ম্যাজিস্ট্রেটের কাজ করছেন।”
রাজ্যের তরফ থেকে বলা হয়, “কলকাতা পুলিশের অ্যান্টি ফ্রড দফতর এই কেসে তদন্ত করছিল। তারা অকৃতকার্য হয়। তার পরেই সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি তদন্তভার সিআইডিকে হস্তান্তর করেন। সিআইডি স্বাধীন তদন্তকারী সংস্থা। কলকাতা পুলিশের আওতায় নয়।”
বিচারপতি তখন প্রশ্ন করেন, “অ্যান্টি ফ্রড সেকশন তদন্তে অকৃতকার্য হয়ে তারা সিআইডি তদন্ত নিয়ে কিছু বললেন না। আর সিঙ্গল বেঞ্চ তদন্ত হস্তান্তর করে দিল?” রাজ্যের তরফ থেকে জানানো হয়, তদন্তভার হস্তান্তর করার এক্তিয়ার ম্যাজিস্ট্রেটের নেই।
বিচারপতি সিদ্ধার্থ রায় চৌধুরী জানতে চান, “সুনন্দা গোয়েঙ্কা তদন্তে সহযোগিতা করছিলেন না, এমন কোন অভিযোগ আছে?” বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী জানতে চান, “১৯৯৮-২০১৪ সাল পর্যন্ত কী করছিল রাজ্য? ১০ বছর পর হঠাৎ রাজ্যের ঘুম ভাঙল এবং তদন্ত শুরু হয়ে গেল? যেখানে বিষয়টা ১৯৯৮ এর!”
মামলাকারী আইনজীবী তখন সওয়াল করেন, ” এই পদে থাকার মতো কোনও শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রিন্সিপালের নেই।” বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী বলেন, “একজন ছাত্র হয়ে কীসের ভিত্তিতে আপনি এই মামলা দায়ের করলেন? আপনাদের যখন মনে হল কলকাতা পুলিশ ঠিক মতো তদন্ত করছে না, আপনারা, তদন্তের জন্য ফের ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে কেন গেলেন না?” তখনই বিচারপতি বলেন, “আপনাদের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে আপনারা ম্যাজিস্ট্রেটকে এড়িয়ে গিয়ে হাইকোর্টে এসেছেন সিআইডি তদন্তের নির্দেশ নিতে।” মামলাকারীর আইনজীবী ফের বলেন, “প্রিন্সিপালের এই মামলা চ্যালেঞ্জ করার কোনও এক্তিয়ার নেই।” ডিভিশন বেঞ্চ সব শুনে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে অন্তবর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেন।
অর্থনৈতিক দুর্নীতি, জালিয়াতি-সহ একাধিক অভিযোগ ওঠে যোগেশচন্দ্র আইন কলেজে। কলেজের গভর্নিং বডি-র প্রাক্তন সদস্য নীল বসু ২০১৮ সালে অধ্যক্ষ সুনন্দা গোয়েঙ্কার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। সেই মামলাতেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেন। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন সুনন্দা।