মানুষের পাশেই দিনভর, যেকোনও সমস্যায় হাল ছাড়তে নারাজ ‘উদয়ের পথে’-র ‘বন্ধুরা’

'উদয়ের পথে'-র সম্পাদক উৎপল চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমরা দেখেছি মানুষ এখন কতটা অসহায়। মানুষের পাশে দাঁড়ানো এখন একমাত্র কাজ। কিন্তু, কতটা আমরা পেরে উঠছি। সবকিছু চিন্তা করেই আমরা পথে নামি। টিভি নাইন বাংলার মাধ্যমে আমাদের হেল্পলাইন নম্বর ছড়িয়ে দিয়েছি।"

মানুষের পাশেই দিনভর, যেকোনও সমস্যায় হাল ছাড়তে নারাজ 'উদয়ের পথে'-র 'বন্ধুরা'
সম্পাদক উৎপল চট্টোপাধ্যায়
Follow Us:
| Updated on: Jun 03, 2021 | 5:45 PM

কলকাতা: করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে মৃত্য়ুমিছিল চলেছে বাংলায়। আতঙ্কে ভুগছে বঙ্গবাসী। পেশায় টান। পেটেও। পরিস্থিতি এতটাই সঙ্গীন, যে বেঁচে থাকাই এখন মানুষের মূলমন্ত্র হয়ে উঠেছে। এই কঠিন সময়ে সহমর্মিতা, সহযোগীতার বার্তা বয়ে নিয়ে এসেছে উত্তর কলকাতার হেদুয়া পার্কের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা (NGO) ‘উদয়ের পথে’। টিভি নাইন বাংলার (TV9Bangla) মাধ্যমে বার বার স্বপ্রচারের মাধ্যমেই মানুষের দুয়ারে পৌঁছে যাচ্ছেন ‘উদয়ের পথে’-এর সদস্যরা। অক্সিজেন সাপ্লাই থেকে খাবার, ওষুধ…সবকিছুই এক লহমায় পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁরা। উপকৃত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

‘উদয়ের পথে’-র সম্পাদক উৎপল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা দেখেছি মানুষ এখন কতটা অসহায়। মানুষের পাশে দাঁড়ানো এখন একমাত্র কাজ। কিন্তু, কতটা আমরা পেরে উঠছি। সবকিছু চিন্তা করেই আমরা পথে নামি। টিভি নাইন বাংলার মাধ্যমে আমাদের হেল্পলাইন নম্বর ছড়িয়ে দিয়েছি। এছাড়ও, ফ্লেক্স পোস্টার ব্যানার তো রয়েছেই। টিভি নাইন বাংলায় (TV9 Bangla) প্রায় আধঘণ্টা অন্তর আমাদের হেল্পলাইন নম্বর দেখানো হয়েছে। যেখান থেকেও অনেকে যোগাযোগ করেছেন। এমনকী ভিনরাজ্যর থেকেও ফোন পেয়েছি। যতটা পারছি মানুষকে সাহায্য করছি।

তন্ময় মুখোপাধ্যায় নামে পাটনা থেকে এক ব্যক্তি জানান, গণহরি মুচি নামে তাঁর এক আত্মীয় মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত হন। আক্রান্ত দুমকায় থাকেন। গোটা বিহার, ঝাড়খণ্ড চষে ফেলেও প্রয়োজনীয় ওষুধটি পাওয়া যায়নি। টিভি নাইন বাংলায় ‘উদয়ের পথে’-র হেল্পলাইন নম্বর দেখে তাতে ফোন করেন। তারপর আর ভাবতে হয়নি তন্ময়বাবুকে। ওষুধ গিয়ে পৌঁছয় সটান আক্রান্তের বাড়িতেই। প্রায় অনুরূপ একটি অভিজ্ঞতার সাক্ষী বাবুল দত্ত। অসমের বাসিন্দা বাবুলবাবু, কাজের সূত্রে কলকাতায় থাকেন। পঞ্চাশোর্ধ্ব বাবুলবাবু কিছুদিন আগে করোনায় আক্রান্ত হন। কলকাতায় কিছু আত্মীয় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও লকডাউনের জেরে সাহায্য করতে পারেননি কেউ। টিভি নাইনের মাধ্যমেই অনুরূপভাবে ‘উদয়ের পথে’-র খোঁজ পান তিনি। তারপর, তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা থেকে শুরু করে চিকিৎসা, ওষুধপত্র সব কিছুর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন ‘উদয়ের পথে’-র স্বেচ্ছাসেবকরা।

কীভাবে কাজ করছেন ‘উদয়ের পথে’-র কর্মীরা? সম্পাদক উৎপল চট্টোপাধ্যায় জানান, একাধিক হেল্পলাইন নম্বর তৈরি করা হয়েছে। দিনরাত সেই ফোনকল রিসিভ করার জন্য রয়েছে একটি রেসপন্স টিম। ফোন পাওয়া মাত্রই রোগীর সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংগ্রহের পরেই শুরু হয়ে যাচ্ছে কাজ। বেড থেকে অক্সিজেন, ডাক্তার হোক বা অ্যাম্বুলেন্স, সব পরিষেবা দিতে প্রস্তুত এই স্বেচ্ছাসেবকরা। শুধু কোভিড রোগী নন, যেকোনও রকম চিকিৎসা-সাহায্য়ের জন্যেই পাশে রয়েছে উদয়ের পথে। এখানেই শেষ নয়, করোনা টিকাকরণের ক্ষেত্রেও বিশেষ পদক্ষেপ করেছে এই সংস্থা। যাঁরা টিকা পাচ্ছেন না বা টিকার দ্বিতীয় ডোজ পেতে সমস্যা হচ্ছে তাঁদের কলকাতার হেঁদুয়া পার্কে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি, বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার দিয়ে আসা, যে সকল রোগীরা একান্তবাসে আছেন তাঁদর জন্য যথাযথ ওষুধ, খাবার ও অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা এসবেরই দায়িত্ব নিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘উদয়ের পথে’। মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারার এই লড়াইয়ে টিভি নাইন বাংলাকে অশেষ কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সংস্থা-সম্পাদক উৎপলবাবু। তিনি বলেন, “সংবাদ মাধ্যম হিসেবে যেভাবে টিভি নাইন বাংলা কাজ করছে, যেভাবে কোভিড পরিস্থিতিতে আমাদের হেল্পলাইন নম্বর ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করেছে তার জেরেই আজ এত লোকের পাশে দাঁড়াতে পারছি। এইভাবেই মানুষের পাশে ভরসা হয়ে দাঁড়াক সংবাদমাধ্য়ম, তবেই আমরা ওই কঠিন লড়াই জিততে পারব।”

আরও পড়ুন: কার্যত লকডাউনের জের, পেটে টান বঙ্গবাসীর, লাওস থেকে এল সাহায্য, নেপথ্যে অভিজিৎ