WBCS অফিসার থেকে হাইকোর্টের বিচারপতি, জীবনের লড়াইয়ে কীভাবে উঠে এলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

Justice Abhijit Gangopadhyay: মিত্র ইনস্টিটিউশনের মেইন ব্রাঞ্চে পড়াশোনা করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। গ্র্যাজুয়েশনের পর পাঁচ বছর ল' পড়েছিলেন। এরপর ডব্লুবিসিএস পরীক্ষার জন্য বসেন, 'এ' গ্রেডের অফিসার ছিলেন তিনি।

WBCS অফিসার থেকে হাইকোর্টের বিচারপতি, জীবনের লড়াইয়ে কীভাবে উঠে এলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 22, 2022 | 12:41 AM

কলকাতা: এই মুহূর্তে চর্চার শিরোনামে হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এসএসসি মামলায় তাঁর একের পর এক নির্দেশ, কার্যত নাড়িয়ে দিয়েছে সমস্ত বেনিয়ম, দুর্নীতির ভিত্তি। হাজার হাজার চাকরি প্রার্থীর কাছে এখন তিনিই ঈশ্বর। সাধারণ মানুষ বলছেন, এমন বিচারপতি সাহস বাড়ায়, বিচারব্যবস্থার উপর ভরসা বাড়ায় কয়েক গুণ। সোশাল মিডিয়াতেও তিনিই চর্চায়। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সেই মানুষ, যিনি একটা সময় ডব্লুবিসিএস অফিসার ছিলেন। কিন্তু এই দুর্নীতির কারণেই সেখান থেকে সরে দাঁড়ান তিনি বলে শোনা যায়। এরপরই আইনজীবী হিসাবে ‘প্র্যাকটিস’ শুরু। এখন তিনি বিচারপতি।

মিত্র ইনস্টিটিউশনের মেইন ব্রাঞ্চে পড়াশোনা করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। গ্র্যাজুয়েশনের পর পাঁচ বছর ল’ পড়েছিলেন। এরপর ডব্লুবিসিএস পরীক্ষার জন্য বসেন, ‘এ’ গ্রেডের অফিসার ছিলেন তিনি। সে সময় উত্তরবঙ্গে পোস্টিং অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। উত্তর দিনাজপুরে। জমির পাট্টা বিলি নিয়ে চরম দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে পঞ্চায়েত সদস্যর বিরুদ্ধে। রুখে দাঁড়ান তিনি। সেই সময় এক গ্রামপঞ্চায়েত সদস্য তাঁকে চোখ রাঙিয়েছিলেন। এক ডব্লুবিসিএস অফিসারের এভাবে অপদস্থ হওয়া কোনওভাবেই মানতে পারেননি তিনি। বুঝে গিয়েছিলেন, এই লড়াইয়ে কাউকে কাউকে কতটা আপোস করতে হয়। এরপরই ঠিক করেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন অন্য পথে।

২০০৯ সাল থেকে এসএসসির ল’ অফিসার ছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সারা রাজ্যের যত মামলা রয়েছে, সমস্ত তথ্য তাঁর কাছে আসত। এখানকার সমস্ত বিষয়ে সম্ম্যক ধারণা রয়েছে তাঁর। সেই অভিজ্ঞতাই তাঁর বিচারব্যবস্থায় প্রতিফলিত হয় বলেই মনে করেন আইনজীবী মহলের অনেকে। প্রথমদিকে অন্য মামলা দেখতেন। পরে তিনি শিক্ষাসংক্রান্ত মামলাগুলি দেখতে শুরু করেন। সেখান থেকেই এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলা এসে পৌঁছয় তাঁর এজলাসে। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সেই বিচারপতি, যিনি দৃঢ় কন্ঠে বলেছিলেন, ‘আমার মাথায় বন্দুক ধরতে পারেন। আমি মরতে রাজি, কিন্তু কোনও দুর্নীতি দেখে আদালত কখনও চুপ করে থাকবে না।’

অনেকেই বলেন, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যেমন শিক্ষকদের দুর্নীতি দেখলে মেনে নিতে পারেন না, আবার তিনিই শিক্ষকরা বিপাকে পড়লেও সহ্য করতে পারেন না। আইনের হাত ধরে রায়গঞ্জ করোনেশন স্কুলের শিক্ষিকার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন এই বিচারপতিই। আবার ব্লাড ক্যান্সার আক্রান্ত বীরভূমের নলহাটির সোমা দাসের প্রাপ্যও ফিরিয়ে দেওয়ার রায়ও তাঁরই দেওয়া। এদিকে তাঁর নির্দেশেই সিবিআই নিজাম প্যালেস অবধি টেনে নিয়ে গিয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পরেশ অধিকারীদের।