রাজ্যের নতুন মুখ্যসচিব হলেন হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, অবসর নিলেও বড় পদ পাচ্ছেন আলাপন

পশ্চিমবঙ্গের নতুন মুখ্যসচিবের পদে এলেন হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদী। অন্যদিকে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় অবসর নিলেও বড় পদ পাচ্ছেন বলে খবর। তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা করা হয়েছে।

রাজ্যের নতুন মুখ্যসচিব হলেন হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, অবসর নিলেও বড় পদ পাচ্ছেন আলাপন
বাঁ দিক থেকে, বিপি গোপালিকা- স্বরাষ্ট্রসচিব. হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী- মুখ্যসচিব, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়- প্রাক্তন মুখ্যসচিব। নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 01, 2021 | 12:16 AM

কলকাতা: মুখ্যসচিবের পদ থেকে অবসর নিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গের নতুন মুখ্যসচিবের পদে এলেন হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। অন্যদিকে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় অবসর নিলেও বড় পদ পাচ্ছেন বলে খবর। তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা করা হয়েছে। অন্যদিকে, স্বরাষ্ট্র সচিবের পদে এসেছেন বিপি গোপালিকা। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, আলাপনের মতো যোগ্য একজন প্রশাসককে কোনও ভাবেই ছেড়ে দেওয়া যায় না। যে কারণে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা হওয়ার পাশাপাশি প্রশাসনিক প্রশিক্ষণের দায়িত্বেও থাকবেন। একই সঙ্গে মমতা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, “আমি চাইলে ওকে বলতেই পারতাম যে তুমি থেকে যাও। তাতে কেন্দ্র কিছু করতে পারত না।”

কিন্তু, আলাপন নিজেই অবসর নেওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশ করেছেন বলে এ দিন জানান মমতা। যে কারণে তাঁর ইচ্ছেকেই প্রাধান্য দিয়েই অবসর নিতে সায় দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, আমি আমার প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, উনি উনার কর্মজীবনের দুর্দান্ত কাজ করেছেন। তাঁর কথায়, “আমাদের আলপনকে খুব বাজেভাবে প্রয়োজন। উনি অবসর নিয়েছেন কিন্তু আমি ওনাকে সচিবালয় ছেড়ে দিতে যাচ্ছি না।” এর ফলে আলাপন আর কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে রইলেন না। এখন তিনি বর্তমানে শুধুমাত্র রাজ্য সরকারের একজন আধিকারিক হয়ে রইলেন। কার্যত এক ঢিলে দুই পাখি মারলেন মমতা। আগামী ৩ বছরের জন্য তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা করা হয়েছে বলে খবর।

অবসরের সময় আলাপনকে কার্যত প্রশংসায় ভরিয়ে দেন মমতা। তিনি বলেন, “উনি অবসর নিলেও আমার মনে হয় ওনার সেই সাহস এবং সততা রয়েছে। তাঁর সেই দায়িত্ববোধ রয়েছে। তাঁর নাম ইতিহাসে লেখা থাকবে একজন আমলাকে কীভাবে রাজনীতির শিকার হতে হয়েছে।” আজকের পদক্ষেপের পর কেন্দ্র যদি চায়ও , তা সত্ত্বেও কোনও ভিত্তিতেই আলাপনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে পারবে না। রাজনৈতিক মহলের স্পষ্ট কথা, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে মমতা একদিকে যেমন কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ থেকে বের করে আনতে পারলেন। একই সঙ্গে আলাপনকে নিজের কাছেও ধরে রাখতে পারলেন। যেভাবে আলাপন এতদিন কাজ করে এসেছিলেন, সেভাবেই মুখ্যমন্ত্রীর পাশে থেকে কাজ করতে পারবে। শুধুমাত্র তাঁর পদটাই বদলে গেল।

আরও পড়ুন: অনুপস্থিতির কারণ জানতে চেয়ে সোজা আলাপনকে চিঠি কেন্দ্রের, ক্ষোভে ফেটে পড়লেন মমতা

আজকের ঘটনা রাজনৈতিকভাবে কতটা তাৎপর্যপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। গত ২৪ মে চিঠি দিয়ে মুখ্যসচিবের মেয়াদ বৃদ্ধিতে কেন্দ্র সিলমোহর দেওয়ার পরও যেভাবে প্রধানমন্ত্রীর ইয়াস পরবর্তী রিভিউ বৈঠকের দিন রাতেই তাঁকে চিঠি দিয়ে ৩০ মে তাঁকে দিল্লিতে ঢেকে পাঠানো হয়, তা এককথায় ছিল নজিরবিহীন। তারপর থেকেই চাপানউতোর চলছিল। এ দিন আলাপন দিল্লিতে কাজে যোগ না দিলে ফের একবার কেন্দ্রের তরফে চিঠি দেওয়া হয়। তারপরই রাজ্যের মুখ্যসচিব সিদ্ধান্ত নেন, তিনি ৩ মাসের বৃদ্ধি নেবেন না। আজ তাঁর অবসর নেওয়ার কথা ছিল, সে দিনই অবসর নিয়ে ফেলবেন তিনি। ফলে কেন্দ্র ও রাজ্যের এই  রাজনৈতিক দড়ি টানাটানির শেষটা মুখ্যসচিবের জন্য সম্মানজনকভাবেই হল।