Digha Case: পকসো মামলায় ‘ধরাছোঁয়ার’ বাইরে অভিযুক্ত তৃণমূল ছাত্রনেতা, কী বলছেন প্রাক্তন পুলিশকর্তা?

Digha: পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির। এক ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে এক নাবালিকাকে দিঘায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।

Digha Case: পকসো মামলায় 'ধরাছোঁয়ার' বাইরে অভিযুক্ত তৃণমূল ছাত্রনেতা, কী বলছেন প্রাক্তন পুলিশকর্তা?
নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ। প্রতীকী ছবি।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 30, 2023 | 8:00 AM

কলকাতা: নাবালিকাকে ধর্ষণের (Minor Girl Harrasment) অভিযোগ। অভিযুক্ত তৃণমূলের ছাত্রনেতা। হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও অভিযুক্ত ধরাছোঁয়ার বাইরে। পুলিশ বলছে, খোঁজ চলছে। আর এখানেই উঠছে প্রশ্ন। পকসো মামলায় অভিযুক্তকে ধরতে কি তৎপর পুলিশ? নাকি শাসকদলের ছাত্রনেতা হওয়াতেই ‘ধরাছোঁয়ার’ বাইরে? প্রাক্তন পুলিশকর্তা এবং আইনজীবীরা বলছেন, পুলিশ তৎপর হলে পকসো মামলায় অভিযুক্ত এতদিন গা-ঢাকা দিয়ে থাকতে পারত না।

ঘটনাটি পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির। এক ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে এক নাবালিকাকে দিঘায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ওই যুবককে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। পুলিশের খাতায় তিনি ‘পলাতক’। এরই মধ্যে নিম্ন আদালতে আগাম জামিনের আবেদনও জানান অভিযুক্ত। আবার হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের গ্রেফতারি সংক্রান্ত যে নির্দেশকে চ্য়ালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চেও গিয়েছেন। এই ঘটনায় নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে হাইকোর্টেও। মামলার শুনানিতে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা বলেছেন, ‘বলতে দ্বিধা নেই পুলিশ অভিযুক্ত সম্পর্কে দুর্বলতা দেখাচ্ছে। অভিযুক্ত কোথায় আছে, পুলিশ সবটাই জানে। কিন্তু ইচ্ছে করে ধরছে না। পুলিশের গা ছাড়া মনোভাব কোর্টের নজর এড়াচ্ছে না।’ হাইকোর্টের নির্দেশ, অভিযুক্তকে গ্রেফতারের চেষ্টা করতে হবে পুলিশকে।

হাইকোর্টের ভর্ৎসনার পরও অধরা অভিযুক্ত। পুলিশের তৎপরতার পরও কি এভাবে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা যায়? সম্ভব নয় বলছেন কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন ডেপুটি কমিশনার সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পিছনে শাসকদলের মদতও দেখছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, “যে কোনও প্রদেশেই দেখা যায় পুলিশ শাসকদলের কথামতো চলতে বাধ্য হয়। না হলে অনেকরকম সমস্যায় পড়তে হয়। বাজে জায়গায় পোস্টিং করিয়ে দেওয়া হয়। বাস্তবে তারা আরও নানা ঝামেলার মধ্যে পড়েন। তবে এই ধরনের ঘটনা, যেখানে আদালত হস্তক্ষেপ করছে, সেখানে অভিযুক্তের আত্মসমর্পণ করা উচিত। বিশেষ করে এটা পকসো মামলা। পকসো আইনের ক্ষেত্রে এভাবে জামিন হয় না।”

প্রাক্তন ডেপুটি কমিশনারের বক্তব্য, অভিযুক্ত ভাবছেন আত্মসমর্পণ করলে জামিনের কোনও সম্ভাবনাই থাকবে না। তাঁর কথায়, “ভাবছে এমন ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে কেসটাই না থাকে। নানারকমভাবে এই সময়ের মধ্যে পরিবারের উপর চাপ দেওয়া হয়। সেটার চেষ্টা হবে। অর্থের লালসা থাকবে। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থাকবে। প্রশাসনের চাপ থাকবে। এমন ক্ষেত্রে অনেক সময় দেখা যায়, নির্যাতিতার পরিবার মাথা নত করে নেয়।” পকসো আইনে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হওয়ার জামিনের আবেদন প্রসঙ্গে প্রাক্তন পুলিশ কর্তা সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত, অভিযুক্তের তরফে চেষ্টা করা হবে ওই কিশোরীকে সাবালিকা প্রমাণের। আদালতে অভিযুক্তের আইনজীবী বলতেই পারেন, মেয়েটির বয়সের দিকটা প্রমাণসাপেক্ষ।

পুলিশ তৎপর হলে কি এতদিনে ধরা পড়ত অভিযুক্ত? প্রাক্তন পুলিশকর্তা বলছেন, “পুলিশ তৎপর হলে একজনকে ধরতে এতদিন সময় লাগে? ফোন ট্র্যাক করে, বাড়ির লোককে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এতদিন লাগে না একজনকে ধরতে।” আদালত পুলিশের রিপোর্টের উপর নির্ভর করে জানিয়ে তিনি বলেন, “অনেকে বলেন, আইন আইনের পথে চলবে। আইনের কি হাত পা রয়েছে? আইন পুলিশের চোখ দিয়ে দেখে। পুলিশ যদি তৎপর না হয়, তাহলে আদালত কী করবে?”

তবে আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতার বক্তব্য, পকসো মামলায় জামিনের চেষ্টা হলে আইনের পথ ধরেই তার লড়াই করা দরকার। পুলিশ কেন হাল ছাড়বে? পুলিশের মুখে ‘ধরা যাচ্ছে না’, ‘পালিয়ে গিয়েছে’ এসব কথার কোনও মানে নেই বলে মত তাঁর। তিনি বলেন, আইনের চোখে পাওয়া যাচ্ছে না বলে কোনও কথা নেই। প্রয়োজন হলে ওয়ারেন্টও জারি করা যেতে পারে। আবার পুলিশের গাফিলতি নজরে এলে ব্যবস্থা নিতে পারে হাইকোর্ট।