Suicide: ফেসবুকে প্রেম, পালিয়ে বিয়ে, ২ বছরও হয়নি পণের চাপে হরিদেবপুুরে ঝুলন্ত দেহ তরুণীর

Kolkata: মাম্পির বাড়ির লোকের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই মাম্পিকে শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার করা হতো। পণ চেয়ে গায়ে হাত তুলতেন স্বামী।

Suicide: ফেসবুকে প্রেম, পালিয়ে বিয়ে, ২ বছরও হয়নি পণের চাপে হরিদেবপুুরে ঝুলন্ত দেহ তরুণীর
মাম্পি ও প্রণয়।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 28, 2023 | 2:03 PM

কলকাতা: বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীকে নানাভাবে অত্যাচারের অভিযোগ ওঠে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। পণের (Dowry) দাবিতে লাগাতার অত্যাচার করা হতো বলে বাড়ির বউকে। অভিযোগ, স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হন ওই তরুণী। গৃহবধূকে খুন করা হয়েছে বলেই অভিযোগ তরুণীর পরিবারের লোকজনের। বিয়ে হয়েছে বছর দেড়েক। গত ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় হরিদেবপুর থানা এলাকার কৈলাশ ঘোষ রোডের আবাসনের ঘর থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় মাম্পি দাস নামে ওই তরুণীর। এই ঘটনায় একজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ধৃত সম্পর্কে নিহতের নন্দাই। তবে তরুণীর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির অন্য লোকজন পলাতক।

মাম্পির বাড়ির লোকজনের দাবি, দু’ বছর আগে ফেসবুকে প্রণয় চন্দ্র নামে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় মালদহের এই মেয়ের। প্রণয়কে বিয়ে করতে চেয়ে বাড়িতেও জানান তাঁরা। কিন্তু পরিবারের লোকেরা রাজি ছিলেন না এই বিয়েতে। এরপরই বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন মাম্পি-প্রণয়। বিয়ের সময় প্রণয় নিজেকে ব্যাঙ্ক কর্মী হিসাবেও পরিচয় দিয়েছিলেন বলে তরুণীর পরিবারের দাবি। পরবর্তীকালে তাঁরা জানতে পারেন, প্রণয় ব্যাঙ্কে কাজ করেন না।

কৈলাশ ঘোষ রোডের আবাসনে ভাড়া থাকেন প্রণয়রা। প্রতিবেশিরা জানান, স্বামী-স্ত্রী থাকতেন। মাম্পির বাড়ির লোকের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই মাম্পিকে শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার করা হতো। পণ চেয়ে গায়ে হাত তুলতেন স্বামী। স্বামীর ঘরে ক্রমেই মানসিকভাবে একা হতে শুরু করেন তিনি। এরপরই সরস্বতী পুজোর দিন ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় আবাসন থেকে। মাম্পির বাপের বাড়ির তরফে এরপরই কলকাতায় এসে হরিদেবপুর থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করা হয় শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। যদি স্বামী-সহ অন্যরা পলাতক।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিদিনই ময়লা ফেলতে নীচে নামেন মাম্পি। সরস্বতী পুজোর দিন ময়লা ফেলতে নামেননি। তবে সাড়ে ১০টা নাগাদ নীচের দোকান থেকে আদা কেনেন। এরপর আর কেউ তাঁকে দেখেননি। সন্ধ্যা ৬টা সাড়ে ৬টা নাগাদ মাম্পির ননদ ও দু’জন লোক ফ্ল্যাটে ঢোকেন। তবে সারাদিন কেউই কোনও চিৎকার চেঁচামেচির শব্দ শোনেননি বলেই স্থানীয় বাসিন্দারা জানান।

একই আবাসনে থাকেন ঝরনা চৌধুরী নামে এক মহিলা। তিনি বলেন, “৬ মাস ধরে ডিভোর্স চাইছিল। এ নিয়ে কিছু চলছিল কি না জানি না। সেদিন ননদ আর দু’টো লোককে দেখলাম ওকে নামিয়ে নিয়ে যেতে। এরপরই বরকেও দেখলাম বেরিয়ে গেল বাইক নিয়ে। ঘরে তালা মেরে চলে যায়। পরে জানতে পারি এই ঘটনা।” শুক্রবারই হরিদেবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়।

“আমার মেয়ের ঝুলন্ত দেহ তো আমরা মালদহ থেকে গিয়ে দেখিনি। হাসপাতালে লিখিত দিয়ে আমার মেয়েকে ফেলে রেখে জামাই পালিয়ে যায়। আমি এই বিয়েতে রাজি ছিলাম না। মেয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করল। ফেসবুকেই ছবি দিয়ে জানায় বিয়ে করেছে। ওর মায়ের কথায় বিয়ে মেনেনি। বলেছিল, ব্যাঙ্কে কেরানির কাজ করে ছেলে। মেয়েকে পরে কম জিনিস দিইনি। ছেলেকেও দিই। সেগুলো সব বেঁচে ১ বছর ৫ মাসের মধ্যে শেষ করেছে। তারপর যখন সব পয়সা শেষ তখন বলত মেয়েকে আমার কাছে চলে আসতে। না হলে ডিভোর্স দিয়ে দেবে। মেয়ে ডিভোর্স দিতে চায়নি। ছেলের মা এসে পর্যন্ত আমাকে ২-৩ লক্ষ টাকা দিতে বলেছিল। দিইনি। মেয়েটাকে শেষ করে দিল।”