Kuntal Ghosh: পর্ষদের হুবহু নকল ওয়েবসাইট কুন্তলের পক্ষে বানানো সম্ভব? কী বলছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা

CBI: সিবিআইয়ের অভিযোগ, অযোগ্যদের প্রাপ্ত নম্বর বাড়িয়ে দেখানোর জন্য কুন্তল ২টি ওয়েবসাইট খুলেছিল। সেখানে নম্বর বাড়িয়ে পাশ করানো হতো চাকরিপ্রার্থীদের।

Kuntal Ghosh: পর্ষদের হুবহু নকল ওয়েবসাইট কুন্তলের পক্ষে বানানো সম্ভব? কী বলছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা
কুন্তল ঘোষ।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 07, 2023 | 5:42 PM

কলকাতা: কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh) এক সময় তৃণমূলের যুবনেতা হিসাবে হুগলিতে যথেষ্ট পরিচিত মুখ ছিলেন। ক্ষমতা, প্রতিপত্তিতে তাঁর উত্থানপর্ব নজরে পড়ার মতো ছিল বলে দাবি তাঁর এলাকার লোকজনেরই। সেই কুন্তলের নাম জড়ায় নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেফতারও হন। এই গ্রেফতারির কিছুদিন পর দল তাঁকে বহিষ্কার করে। অন্যদিকে তদন্তে নেমে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসতে শুরু করে কুন্তলের নামে। প্রথমে তাঁর নামে একটি ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরির তথ্য সামনে আসে। এই ওয়েবসাইট দেখিয়ে চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তুলতেন তিনি। এবার আরও এক ওয়েবসাইটের খোঁজ মিলল।

সিবিআইয়ের অভিযোগ, অযোগ্যদের প্রাপ্ত নম্বর বাড়িয়ে দেখানোর জন্য কুন্তল ২টি ওয়েবসাইট খুলেছিল। সেখানে নম্বর বাড়িয়ে পাশ করানো হতো চাকরিপ্রার্থীদের। সূত্রের খবর, এই সাইট ডোমেন কার নামে, কার নামে তা, ডোমেন কেনা নাকি ভাড়া নেওয়া সবকিছু জানতে চেয়ে গুগলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে সিবিআই। ইমেল করে তথ্য় জানতে চেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

এই ওয়েবসাইটগুলিতে নাম তুলে টাকা নিতেন কুন্তল। ২০১৭-র টেটেও ওয়েবসাইটের ব্যবহার করা হয় বলে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে উঠে এসেছে তথ্য়। গুগলে পর্ষদের আসল সাইটের নীচেই থাকত ভুয়ো ওয়েবসাইটে। নিয়োগ নিয়ে এত নাড়াঘাটা না হলে এখনও বোধহয় কেউ ধরতে পারত না, কোনটা আসল আর কোনটা নকল। এই নকল ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই কুন্তলের জাল কারবার চলত বলে সূত্রের খবর। সূত্রের দাবি, কুন্তল দীর্ঘদিন ধরে এই কাজ করেছে। কয়েকটি চাকরি সে করিয়েও দিয়েছে।

ভুয়ো ওয়েবসাইটটির টেমপ্লেট এমনভাবে তৈরি করা হয়, যেন দেখতে একেবারে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের রেপ্লিকা ওয়েবসাইট মনে হয়। সেই রেপ্লিকা ওয়েবসাইটে যে কারও নাম নিয়ে আসতে পারতেন কুন্তল। সিবিআই সূত্রে খবর, তারপরই চাকরিপ্রার্থীকে কুন্তল বলতেন, ‘পর্ষদের ওয়েবসাইটে নাম চলে এসেছে। টেট কোয়ালিফাই করে গিয়েছেন। এবার বাকি টাকা দিলে নিয়োগ।’

এ প্রসঙ্গে সাইবার বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “হুবহু একটা ওয়েবসাইট নকল করা খুব কঠিন বিষয় নয়। কারও নামে বা কোনও সংস্থার নামে ডোমেন কেনা হলেও তার এক্সটেনশন ডোমেন কিনতে পারেন অন্য কেউ। অর্থাৎ কেউ ডটকম দিয়ে ডোমেন নিলেন, অন্য কেউ সেই নামেই ডটইন দিয়ে ডোমেন কিনতে পারেন। প্রাইমারি এডুকেশনে ডটঅর্গ কেনা রয়েছে। ডটইন বা ডট অন্য কিছু একটা কিনে নিতেই পারি। এরপর ইউটিলিটি পেজ দিয়ে অনায়াসে ওয়েবসাইট ডিজাইন করতে পারি। এটা এর আগেও হয়েছে। চাকরি দেওয়ার নাম করে নামজাদা কোম্পানির ওয়েবসাইট বানিয়ে ঠকানোর ঘটনাও ঘটেছে।”

তবে ‘নকল হইতে সাবধান’ কথাটা মুখে বারবার বলা হলেও, কীভাবে আসল-নকল আলাদা করা যাবে, তা অনেকেই বুঝতে পারেন না। বিশেষ করে এই ওয়েবসাইটের মতো বিষয়ে তো না-ই। সে পথ যে খুব একটা সহজও নয়, তা কিছুটা মেনে নিয়েই সাইবার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, ইন্টারনেট বা গুগলে যা আছে, তার বেশিরভাগই নির্ভরযোগ্য নয় ভেবে এগোনোটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।