Partha Chatterjee: পার্থর জেলে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান, কেউ ডাকলই না প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে, গরাদের পিছনেই গেল আরেকটা দিন…
Presidency Correctional Home: অপরাধে জড়িয়ে এখন সংশোধনাগারে দিন কাটছে, এমন একাধিক শিক্ষক আবাসিক রয়েছেন প্রেসিডেন্সি জেলে।
প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ: প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী, স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন উপদেষ্টা এবং প্রাক্তন এসএসসি চেয়ারম্যান। শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত তাঁরা। সেই সংশোধনাগারে সোমবার অনুষ্ঠিত হল শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান। তবে উল্লেখযোগ্য, এই অনুষ্ঠানে ডাকই পেলেন না পার্থ চট্টোপাধ্যায়, শান্তিপ্রসাদ সিনহারা। বাকি আবাসিকদের হাজিরা থাকলেও সংশোধনাগার সূত্রে খবর এই তিন ‘হেভিওয়েট’, এতদিন ধরে যাঁরা শিক্ষাজগতের সঙ্গে জড়িয়ে, তাঁদের দিন কেটেছে গরাদের আড়ালেই।
অপরাধে জড়িয়ে এখন সংশোধনাগারে দিন কাটছে, এমন একাধিক শিক্ষক আবাসিক রয়েছেন প্রেসিডেন্সি জেলে। এদিন তেমনই ৮জন বন্দিকে শিক্ষক দিবসের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ এর আয়োজন করে। পাশাপাশি সংবর্ধনা দেওয়া হয় তিনজন প্রাক্তন শিক্ষককে। যাঁরা এক সময় জেলে শিক্ষক পদে কর্মরত ছিলেন। যদিও বছর ১৫ হতে চলল, এখন সেই পদ উঠে গিয়েছে। এখন শিক্ষকপদে নিযুক্তরা কারা দফতরের কেরানি পদে কাজ করেন। এরকমই মোট ১১জনকে এদিন সংবর্ধনা দেওয়া হয় প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের বিশেষ কক্ষে।
সেই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন প্রায় ৩০০ জন আবাসিক। তাঁদের মধ্যে এমনও আছেন, যাঁরা জেলের ভিতরে পড়াশোনাও করেন। এক সময়ের শিক্ষক থেকে বর্তমান শিক্ষার্থী, এদিনের শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেখা গেল সকলকেই। তবে দেখা যায়নি সেল ব্লক বা পয়লা বাইশ ওয়ার্ডের তিন আবাসিক পার্থ চট্টোপাধ্যায়, শান্তিপ্রসাদ সিনহা ও অশোক সাহাকে। নিজেদের মতোই গরাদের আড়ালে দিনটা কাটিয়েছেন তাঁরা। অথচ অন্যান্য বছর তাঁদের নিয়েও কম ধুমধাম হয়নি। বিশেষ করে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর এই শিক্ষক দিবসে বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয় উপস্থিতিও দেখা যেত। এবার সে হিসাবে ওলটপালট। সংশোধনাগার সূত্রে খবর, এদিন এই তিনজনকে ডাকাই হয়নি অনুষ্ঠানে। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, “এটা তো শিক্ষক আর ছাত্রদের অনুষ্ঠান।”
এদিন যে আটজন বন্দি শিক্ষককে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তার মধ্যে দু’জন ছিলেন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি। একজন খুনের দোষে সাজাপ্রাপ্ত, আরেকজন ফেনসিডিল পাচার মামলায় সাজা কাটছেন। অন্যদিকে বিচারাধীন বন্দিদের মধ্যে তিনজন এমন রয়েছেন যাঁরা শিক্ষক ছিলেন, তবে বধূ নির্যাতনের ঘটনায় এই কারাগারে দিন কাটছে। এদিন ১১ জনকে ফুল, মিষ্টি দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয়। সংশোধনাগার সূত্রে খবর, প্রথম দিকে পার্থকে নিয়ে যতটা হইহই জেলের ভিতর ছিল, এখন সেটা অনেকটাই থিতিয়ে এসেছে। টানা এতদিন একসঙ্গে থাকতে থাকতে আবাসিকদের চোখে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও আর পাঁচজনই হয়ে গিয়েছেন। ‘ভিআইপি’ তকমা হারিয়ে পার্থও এখন পয়লা বাইশের একজন। ওটাই তাঁর পরিচয়।