Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Rain Update: বর্ষার চার মাসে ২৫% ঘাটতি, পুজোর পাঁচদিনে ৮২% বেশি বৃষ্টি

Weather Update: পরিস্থিতি এমন, এখনই বর্ষা-বিদায়ের সম্ভাবনা নেই। অন্ধ্র প্রদেশ উপকূলের নিম্নচাপ দুর্বল হলেও ঘূর্ণাবর্ত এখনও মিলিয়ে যায়নি।

Rain Update: বর্ষার চার মাসে ২৫% ঘাটতি, পুজোর পাঁচদিনে ৮২% বেশি বৃষ্টি
পুজোয় বৃষ্টি। ছবি ফেসবুক।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 06, 2022 | 11:52 PM

কমলেশ চৌধুরী

কী বলা যায় একে? মন্দ কপাল? বর্ষার প্রথম তিন মাসে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি বলে হা-হুতাশের শেষ ছিল না দক্ষিণবঙ্গে। পুজোতেও হা-হুতাশ! এ বার অতিবৃষ্টির ঠেলায়। চাওয়া-পাওয়ায় বিস্তর ফারাক। চূড়ান্ত বৈপরীত্য। প্রকৃতির খেলা বটে! এ খেলা যেন মনে পড়িয়ে দিচ্ছে অমিত কুমারের জনপ্রিয় গানটাই, ‘যা পেয়েছি আমি তা চাই না, যা চেয়েছি কেন তা পাই না!’

এ বছর বর্ষার শুরুটা মোটেই ভালো হয়নি দক্ষিণবঙ্গে। জুনে ঘাটতি ছিল ৪৮%। জুলাইয়ে ৪৬% ঘাটতি। অগাস্টে বঙ্গোপসাগরের তিন নিম্নচাপের হাত ধরে পরিস্থিতি খানিকটা সহায় হয় বটে, তাতে সব জেলায় কৃষকের হাল ফেরেনি। বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়ার মতো জেলায় ধান রোপণের কাজ শেষই করা যায়নি। পাট পচাতে গিয়ে নাকাল হয়েছেন চাষিরা। সব মিলিয়ে ১ জুন থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর, দক্ষিণবঙ্গে ঘাটতি দাঁড়ায় ২৫ শতাংশে। অর্থাত্‍ চার ভাগের এক ভাগ বৃষ্টিই হয়নি। ২০১০ সালে রাজ্যে খরার বছরে ৩১% বৃষ্টির ঘাটতি ছিল দক্ষিণবঙ্গে। তারপর এমন বর্ষাল্পতা এই প্রথম।

তবে গাঙ্গেয় বাংলাতে পুজোর মধ্যে বর্ষার দাপটও দেখা গিয়েছে। কেমন দাপট তা তো বাঙালি মাত্রেই টের পেয়েছেন। ষষ্ঠীতে ডুবে গিয়েছিল কলকাতার বিস্তীর্ণ তল্লাট। দশমী পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে রোজই। বৃষ্টি হয়নি, এরকম জেলা একটিও নেই। দক্ষিণ থেকে উত্তর, বাংলাদেশ লাগোয়া জেলা থেকে ঝাড়খণ্ড লাগোয়া জেলা– বৃষ্টি হয়েছে সর্বত্র। কোথাও কম, কোথাও বেশি। যত বেশি বৃষ্টি, তত দুর্ভোগ দর্শনার্থীদের, পুজো উদ্যোক্তাদের।

এ বার পরিসংখ্যানের দিকে তাকানো যাক। ষষ্ঠী থেকে দশমী, পুজোর এই পাঁচ দিনে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে ৮২% বেশি। বৃষ্টি হওয়ার কথা গড়ে ৩৮.৭ মিলিমিটার, হয়েছে গড়ে ৭০.৩ মিলিমিটার। অক্টোবরে কলকাতায় বৃষ্টি হয় ১৮০.৫ মিলিমিটার। ইতিমধ্যেই ৯৩.৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়ে গিয়েছে আলিপুরে। স্বাভাবিকের চেয়ে ৯৬% বেশি।

জেলার দিকে তাকালে চোখ কপালে উঠবেই। পুজোর পাঁচ দিনে অতিবৃষ্টির বহরটা এই রকম— হুগলি (৩৪৮% বেশি), পশ্চিম মেদিনীপুর (১৮১% বেশি), হাওড়া (১৫৮% বেশি), বাঁকুড়া (১৫২% বেশি), পূর্ব মেদিনীপুর (১২৪% বেশি)। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টির পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে ২৭% বেশি। অর্থাত্‍, বরবাদ না হলেও বিঘ্ন ঘটাতে একটুও পিছপা হয়নি বর্ষা।

Kolkata

হঠাত্‍ বর্ষা অতিসক্রিয় হয়ে উঠল কেন?

কারণ বঙ্গোপসাগর অতিসক্রিয়। আরও স্পষ্ট করে বললে নেপথ্যে বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ। যে নিম্নচাপ অন্ধ্র প্রদেশ উপকূলের কাছে থাকলেও বাংলার পুজোয় কলকাঠি নাড়তে ছাড়েনি। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাসের ব্যাখ্যা, “নিম্নচাপ দূরে থাকলেও, তার প্রভাবে একটানা দখিনা-পুবালি, দখিনা বাতাস ঢুকেছে। এর ফলে বৃষ্টি নামার অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয় বাংলার দুই প্রান্তেই।”

পরিস্থিতি এমন, এখনই বর্ষা-বিদায়ের সম্ভাবনা নেই। অন্ধ্র প্রদেশ উপকূলের নিম্নচাপ দুর্বল হলেও ঘূর্ণাবর্ত এখনও মিলিয়ে যায়নি। এরমধ্যে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে নতুন ঘূর্ণাবর্তের উদয় হয়েছে। দিন কয়েকের মধ্যে সেটিও নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এর প্রভাবে বাংলায় ফের বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে।

গণেশবাবুর কথায়, “বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প ঢোকার প্রক্রিয়া জারি থাকবে। ফলে তাপমাত্রা বাড়লেই সকালে বা বিকেলে বজ্রগর্ভ মেঘ সৃষ্টি হয়ে বৃষ্টি নামার পরিস্থিতি থাকছে। সপ্তাহের শেষে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে। আপাতত ৪-৫ দিনের মধ্যে বর্ষা বিদায়ের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।” বর্ষার ক্যালেন্ডার বলছে, কলকাতা থেকে মৌসুমি বায়ু পাততাড়ি গোটানোর কথা ১২ অক্টোবর। নিয়ম মানলেই ৬ দিন বাকি। তার পরও থেকে যাবে কি? উত্তর লুকিয়ে সাগরেই।