DA Protest: নবান্নের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও রাজ্যজুড়ে ডিএ’র দাবিতে কর্মবিরতি সরকারি কর্মচারীদের

DA Protest: সোমবারের পাশাপাশি মঙ্গলবারও কর্মবিরতি চলবে। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের যে ৩৫টি সংগঠন ছিল, এদিন তাতে যুক্ত হয় আরও তিনটি সংগঠন।

DA Protest: নবান্নের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও রাজ্যজুড়ে ডিএ'র দাবিতে কর্মবিরতি সরকারি কর্মচারীদের
খাদ্য ভবনে ডিএ'র দাবিতে কর্মবিরতি।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 20, 2023 | 6:37 PM

কলকাতা: সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ডাকে বিভিন্ন সরকারি দফতরে চলছে কর্মবিরতি। বকেয়া ডিএ’র (DA) দাবিতে সোমবার স্কুল, সরকারি দফতর, এমনকী আদালতেও চলছে কর্মবিরতি। টানা ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। সোমবারের পাশাপাশি মঙ্গলবারও কর্মবিরতি চলবে। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের যে ৩৫টি সংগঠন ছিল, এদিন তাতে যুক্ত হয় আরও তিনটি সংগঠন। মহাকরণ ও নব মহাকরণে যৌথ মঞ্চের সমর্থনে যাঁরা, তাঁরা অফিসে এলেও কাজ করেননি এদিন। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের বক্তব্য, ‘সরকার যে হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ২০-২১ তারিখ জরুরি কারণ ছাড়া অফিসে না এলে কাজের রেকর্ড থেকে একটা দিন মুছে যাবে। সরকার আসলে ধর্মঘট ও কর্মবিরতি গুলিয়ে ফেলেছে। কর্মবিরতি মানে অফিসে হাজিরা দিয়ে কাজ না করা। আমরা ধর্মঘট করছি না, অফিসে হাজিরা দিয়ে পেন ডাউন রাখছি। শহিদ মিনারে আমাদের অনশন চলছে। তাতেও কাজ না হলে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে ভাবব।’ যদিও সরকারের সমর্থনে যাঁরা এই মহাকরণ ও নব মহাকরণের বিভিন্ন বিভাগে চাকরি করেন, তাঁরা রাজ্য বাজেটে ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণার জন্য আবার মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান এদিন। তবে কলকাতার পাশাপাশি জেলায় জেলায় বিভিন্ন দফতরে কর্মবিরতির ছবি দেখা গিয়েছে। তবে এই কর্মবিরতির বিরোধিতাও শোনা গিয়েছে সরকার সমর্থিত কর্মচারীদের মুখে।

শিলিগুড়ি

উত্তরবঙ্গেও কর্মবিরতি ডিএ’র দাবিতে। শিলিগুড়িতে সূর্যসেন কলেজে কর্মবিরতিতে অংশ নেন কলেজের অশিক্ষক কর্মী ও অধ্যাপকদের একাংশ। প্রাক্তন প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান মুকুলকান্তি ঘোষও কর্মবিরতিতে যোগ দেন। তাঁদের বক্তব্য, ডিএ দিতেই হবে। না হলে আরও ঝাঁঝাল হবে আন্দোলন।

বালুরঘাট

সোমবার দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট জেলা আদালতের কর্মবিরতি চলে। আন্দোলনকারীরা জানান, কলকাতায় যেসব কর্মী বকেয়া মহার্ঘ ভাতার জন্য আন্দোলন করছেন, তাঁদের পাশে দাঁড়াতেই এই কর্মবিরতি। এদিন পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ফলে আদালতে যাঁরা বিচারপ্রার্থী এসেছেন, তাঁদের নানা সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়।

ধূপগুড়ি

কর্মবিরতির মাঝেই অন্য ছবি দেখা গেল জলপাইগুড়ির ধূপগুড়িতে। শিক্ষা সেল থেকে গণপদত্যাগ শিক্ষকদের। তৃণমূলের শিক্ষা সেল থেকে ১৮ জন শিক্ষক সরে দাঁড়ান। বানারহাট ব্লকের অন্তর্গত দুরামারি চন্দ্রকান্ত হাইস্কুলের শিক্ষকরা এদিন স্কুলের শিক্ষা সেলের সভাপতি হাবিবুল ইসলামের হাতে পদত্যাগ পত্র তুলে দেন। তাঁরা জানান, বকেয়া ডিএ ও স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিতে কলকাতার শহিদ মিনারে যে আন্দোলন-অনশন চলছে, তাঁরাও তার সমর্থন করেন।

আলিপুরদুয়ার

ডিএ’র দাবিতে আন্দোলনে আলিপুরদুয়ার আদালতের কর্মীরা। সংগ্রামী যৌথমঞ্চের উদ্যোগে টানা ৪৮ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করবেন সংগ্রামী যৌথমঞ্চের সমর্থকরা। এদিকে এই আন্দোলনের ফলে আদালতের কাজে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, তাঁদের বকেয়া ডিএ না দিলে আরও বড় আন্দোলনের পথে হাঁটবেন তাঁরা।

হাওড়া

সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে হাওড়ার ডোমজুড়ে বিডিও অফিস থেকে শুরু করে সাঁকরাইল কেন্দ্রের বিএলআরও অফিসে কর্মচারীরা উপস্থিত থেকে কর্মবিরতি পালন করেন। অন্যান্য দিন এই দফতরে মানুষের ভিড় থাকলেও এদিন ভিড়ও কম বিডিও অফিসে। সাঁকরাইল বিএলআরও চন্দ্রাণী মল্লিকের বক্তব্য, ভিড় কম, কারণ সংবাদমাধ্যমে মানুষ খবর দেখে ভেবেছেন কাজ হবে না। তবে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে এদিন দুপুর ১টা নাগাদ হাওড়ার আদালত চত্বরে কর্মবিরতি পালন করা হয়।

দুর্গাপুর

বর্ধমানের দুর্গাপুরে মহকুমা আদালতেও এদিন কর্মবিরতি পালিত হয়েছে। ৩৯ শতাংশ হারে ডিএ-র দাবিতে এদিন মিছিলও হয়। যদিওও তৃণমূলপন্থী আইনজীবীদের অভিযোগ, আন্দোলনকারীরা হাজিরা খাতায় সই করে আন্দোলন করছেন। সই করলে কাজও করা উচিত। অপরদিকে আন্দোলনকারীদের পাল্টা দাবি, তাঁরা ধর্মঘট করেননি। কর্মবিরতি পালন করছেন। দফতরে সই করেই কর্মবিরতি পালন করতে হয়।

বিধাননগর

সল্টলেক বিধাননগরের ওয়েস্ট বেঙ্গল ল্যান্ড রিফর্মস অ্যান্ড টেনান্সি ট্রাইব্যুনালের কর্মীরাও এদিন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ডাকা কর্মবিরতিতে শামিল হন। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সমর্থনে যাঁরা, তাঁরা এই কর্মবিরতিতে অংশ নেন। তাঁদের বক্তব্য, হাইকোর্ট বলছে ডিএ পাওয়া সরকারি কর্মীদের অধিকার। অথচ ৩৮ শতাংশ ডিএ বকেয়া, তা নিয়ে সরকার কিছু ভাবছেই না।

বারুইপুর

বারুইপুর মহকুমা আদালতেও কর্মচারীদের কর্মবিরতি ও প্রতিবাদ মিছিল হয়। প্রায় ২০০ জন আদালত কর্মচারী এদিন এই মিছিলে সামিল হয়। ৩৯ শতাংশ ডিএ’র দাবিতে প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে এই মিছিল হয়। কর্মব্যস্ত বারুইপুর মহকুমা আদালতে এদিনের এই আন্দোলনে স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যহত হয়েছে।

হুগলি

হুগলির চুঁচুড়া, চন্দননগর ও শ্রীরামপুর আদালতের কর্মীদের একাংশও এদিন কর্মবিরতিতে শামিল হন। ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেন তাঁরা। চুঁচুড়া আদালতে গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে স্লোগান দেন সরকারি কর্মীরা। চন্দননগর আদালতে গেটের সামনে বসেছিলেন।

মেদিনীপুর

মেদিনীপুর জজকোর্টে কর্মবিরতি পালন করেন আদালত কর্মচারী সমিতি। বিচারক ও আইনজীবীদের কাজে বাধা না দিয়েই তাঁরা তাঁদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বলেই দাবি করেন। আগামিদিনেও দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেই জানান আদালত কর্মচারী সমিতির সম্পাদক।

মুর্শিদাবাদ

মুর্শিদাবাদ জেলা আদালতের সরকারি কর্মচারীরা এদিন কর্মবিরতি পালন করেন। পশ্চিমবঙ্গের আদালত কর্মচারী সমিতির পক্ষ থেকে ডিএ এর দাবিতে কর্মবিরতি পালিত হয়।

বর্ধমান

বর্ধমান আদালতের কর্মীরাও এদিন কর্মবিরতি পালন করেন। আজ সকাল থেকে কর্মক্ষেত্রে উপস্থিত হলেও আদালতের কর্মীরা আদালতের কোনও কাজে যোগ দেননি। সকাল থেকে জেলা আদালত চত্বরে বসে স্লোগান দেন তাঁরা। এই কর্মবিরতির জেরে পরিষেবা ব্যহত হয়।

উত্তর ২৪ পরগনা

ব্যারাকপুর আদালত চত্বরে বকেয়া ডিএ’র দাবিতেও কর্মবিরতি পালিত হয় সোমবার। সংগ্রামী যৌথমঞ্চের সমর্থকরা জানান, ৪৮ ঘণ্টার এই কর্মবিরতিতে কাজ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে তাঁরা হাঁটবেন।

বাঁকুড়া

বাঁকুড়া জেলা আদালতেও কর্মবিরতি। কর্মক্ষেত্রে উপস্থিত হলেও আদালতের কর্মীরা আদালতের কোনও কাজে যোগ দেননি। এর ফলে প্রভাব পড়েছে আদালতের কাজকর্মে। সকাল থেকে আদালতের জর্জ কোর্টের বারান্দায় বসে স্লোগান দেন সংগ্রামী মঞ্চের আন্দোলনকারীরা।