West Bengal Tops In Primary Education in India: দুর্নীতি বিতর্কের আবহেই দেশে প্রাথমিক শিক্ষায় ‘এগিয়ে বাংলা’, বলল কেন্দ্রের রিপোর্ট
West Bengal Tops In Primary Education in India: দেশে প্রাথমিক শিক্ষায় বাংলা শীর্ষস্থানে রয়েছে। সম্প্রতি পিএমও-র কমিটির তরফে প্রকাশিত রিপোর্টে এমনটাই উঠে এসেছে।
কলকাতা ও নয়া দিল্লি: শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে জেরবার বাংলা। এই দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গারদের ওপারে দিন কাটাচ্ছেন। এই আবহেই রাজ্যের মুকুটে লাগল নয়া পালক। প্রাথমিক শিক্ষায় (Primary Education) ফের শীর্ষস্থান অধিকার করেছে বাংলা। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কমিটির তরফে স্কুলে বুনিয়াদি শিক্ষা এবং গাণিতিক সাক্ষরতার উপর একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। সারা ভারতের শিক্ষা সংক্রান্ত উন্নয়নের স্কোর কার্ড হিসেবেই বিবেচিত হয় এই রিপোর্ট। আর সেই রিপোর্ট কার্ডে পশ্চিমবঙ্গ একটি উল্লেখযোগ্য স্থান জুড়ে রয়েছে। অনেকটাই বেশি রয়েছে রাজ্যের নম্বর। আর এই রিপোর্ট যেন কিছুটা স্বস্তি নিয়ে আসল দুর্নীতিতে জেরবার বাংলার জন্য।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের ইকনমিক অ্যাডভাইসারি কাউন্সিলের তরফে শিক্ষাসংক্রান্ত এই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষার দিক থেকে শীর্ষে বাংলা। আর বাংলার থেকে বেশ খানিকটা পিছিয়ে রয়েছে যোগী রাজ্য উত্তর প্রদেশ। শিক্ষা দুর্নীতি নিয়ে পিছনে পড়ে রয়েছে ইডি-সিবিআই। সেই মুহূর্তে প্রাথমিক শিক্ষার মানের দিক থেকে বিজেপি শাসিত উত্তর প্রদেশকে ছাপিয়ে যাওয়ার জন্য এখন মুচকি হাসছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই রিপোর্ট প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, “নিয়োগের বিষয়ে দুর্নীতি। তবে পড়াশোনা রাজ্যে ভালই হচ্ছে। সেই জন্যই পশ্চিমবঙ্গ ভাল করেছে। প্রথম চারটি রাজ্যের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে। আর উত্তর প্রদেশে তো পড়াশোনাই হয় না। আমাদের এখানে প্রাথমিক স্তরে ভাল পড়াশোনা হয়।” তিনি দুর্নীতি নিয়ে বিজেপির প্রশ্ন করার প্রসঙ্গে বলেন, “বিজেপি শিক্ষার ব্যাপারে কিছু জানে? সরব হলে আবার কী হবে? সুকান্ত মজুমদার ছাড়া ওদের মধ্যে একটা শিক্ষিত লোক দেখান। বিজেপি তো শিক্ষার গৈরিকীকরণ করতে চাইছে, শিক্ষার বিস্তার চাইছে না।”
বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, “মাস্টারমশাইকে অঙ্কের প্রশ্ন করা হয়েছে বলে ছাত্রকে মেরেছে। কয়েকদিন পরে সেই মাস্টারমশাইয়ের চাকরি বাতিল করে দিয়েছে মহামান্য কলকাতা হাইকোর্ট। এটা তো সার্বিক পরিস্থিতি। আমাদের এই সরকার পুরস্কারের মাস্টার। কারণ সরকারের ওই প্যাকেজিং অত্যন্ত ভাল।” রিপোর্ট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই সমস্ত রিপোর্ট রাজ্য থেকে যায়। এদের রিপোর্ট যে তৈরি করে, একদম স্বচ্ছতা, সততা ও অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে এই রিপোর্টটা তৈরি করে। এই সরকারটা ফেসিয়ালের সরকার। সারা শরীরে রক্ত নেই, ক্ষতবিক্ষত, শরীর পচে-গলে গিয়েছে। আর তার পরিচর্যা চলছে।” তিনি উদাহরণ টেনে এনে বলেছেন, “হাসপাতালের গেটে বিশালাকর নীল-সাদা তোরণ। আর ভিতরে যখন ঢুকবেন প্রথমেই জিজ্ঞাসা করবে সঙ্গে চাদর এনেছেন? এটাই পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি। জীবনদায়ী ওষুধ হাসপাতালে নেই, সুন্দর, বড় গেট তৈরি হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রীর ইকনমিক অ্যাডভাইসারি কাউন্সিলের তরফে এই ফাউন্ডেশনাল লিটেরেসি ও নিউমেরেসি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়ে থাকে। কোন ধরনের শিক্ষায় দেশের বিভিন্ন রাজ্য কোন কোন স্থানে রয়েছে তা এই রিপোর্টে উল্লেখ করা থাকে। ২০২৩ সালের রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ১০ বছরের কম বয়সীদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। আর দেশে শিক্ষায় শীর্ষে রয়েছে পঞ্জাব। এই রাজ্যের স্কোর ৬৪.১৯। এরপর রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। বাংলার নম্বর ৫৪.৯৮। আর সবচেয়ে খারাপ অবস্থা উত্তর প্রদেশের। এর নম্বর ৩৭.৪৬। মোট পাঁচটি সূচকের ভিত্তিতে রাজ্যগুলিকে নম্বর দেওয়া হয়ে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে শিক্ষা সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা,পড়াশোনার সুবিধা পাওয়া, পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য, সামগ্রিক পরিচালন ব্যবস্থা ও পড়াশোনার ফলে প্রাপ্ত শিক্ষার মান। এই প্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গ অনেকটাই উপরে রয়েছে।