HS Exam in OMR Sheet: সর্বভারতীয় স্তরে সুবিধা হবে নাকি মান কমবে পড়াশোনার? উচ্চমাধ্যমিকে OMR নিয়ে কী বলছেন শিক্ষাবিদরা?
HS Exam in OMR Sheet: উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্যের মতে, এই পদ্ধতি চালু হলে আদপে লাভই হবে বাংলার পড়ুয়াদের। সর্বভারতীয় স্তরের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় তাঁরা সুবিধা পাবেন।
কলকাতা: নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ। এই চার শ্রেণি মিলিয়ে একটি একটি পরীক্ষার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে জাতীয় শিক্ষানীতিতে। যদিও বাংলায় থাকছে আগের পরীক্ষা ব্যবস্থাই। উঠে যাচ্ছে না মাধ্যমিক। তবে একাদশ ও দ্বাদশে আসছে সেমেস্টার সিস্টেম। ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। শীঘ্রই চালু হয়ে যাবে সেমেস্টার সিস্টেমের পঠনপাঠন। সূত্রের খবর, ২০২৬ সাল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হতে চলেছে ওএমআর শিটে। এ খবর প্রকাশ্য়ে আসতেই পক্ষে-বিপক্ষে উঠে আসছে নানা মত। ক্লাস ইলেভেন ও টুয়েলভ মিলিয়ে চার সেমেস্টার থাকলেও উচ্চমাধ্যমিকের ফাইনাল (Higher Secondary Exam) নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রে ক্লাস টুয়েলভের দুটি সেমেস্টারকে নির্ণায়ক হিসাবে ধরা হবে বলে জানা যাচ্ছে। উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্যের মতে, এই পদ্ধতি চালু হলে আদপে লাভই হবে বাংলার পড়ুয়াদের। সর্বভারতীয় স্তরের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় তাঁরা সুবিধা পাবেন। যদিও জাতীয় শিক্ষানীতিতে সরাসরি উচ্চমাধ্যমিক স্তরে এমসিকিউ প্রশ্ন বা ওএমআর শিটে জোর দেওয়ার কথা বলা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে টিভি-৯ বাংলার মুখোমুখি হয়ে চিরঞ্জীববাবু বলেন, “সর্বভারতীয় স্তরে যে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলি হয় সেগুলি সবই কিন্তু মাল্টিপল চয়েস ফরম্যাটে। পরীক্ষাগুলিও হয় ওএমআর শিটে। ফলে এমসিকিউ হয়ে গেলে সেদিক থেকে আমাদের রাজ্যের পড়ুয়াদের একটা প্রাকটিস হয়ে যাবে। আজ কিন্তু জয়েন্ট এন্ট্রান্সের পরীক্ষা, নিটের পরীক্ষাও ওএমআর শিটে হয়। ফলে আগাম পড়ুয়াদের এই পদ্ধতিতে অভ্যস্ত করাতে উচ্চমাধ্যমিকের প্রথম সেমেস্টারে এমসিকিউ ভিত্তিক ওএমআর শিটে পরীক্ষা হবে। দ্বিতীয় সেমেস্টারটা সংক্ষেপিত প্রশ্ন ও বড় প্রশ্ন থাকবে। সেভাবেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
যদিও ভিন্ন মত শিক্ষাবিদ নন্দিনী মুখোপাধ্যায়ের। তাঁর দাবি, এমসিকিউ দিয়ে সঠিকভাবে পড়ুয়াদের গুণমান যাচাই করা সম্ভব নয়। এর ফলে দিনের শেষে বিষয়ের গভীরে গিয়ে বড় প্রশ্নের উত্তর দিতে সমস্যার মুখে পড়ছে পড়ুয়ারা। তিনি সাফ বলছেন, “এমসিকিউ কখনও মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকে করা উচিত নয়। সাধারণত প্রতিযোগিতামূল পরীক্ষাগুলিতে এমসিকিউ দেখা যায়। কিন্তু, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় আদপে পড়ুয়ারা কতটা শিখতে পেরেছে তা যাচাই করে নেওয়া হয়। ফলে এমসিকিউ দিয়ে সেই যাচাইটা করা যায় না। এখনই তো জয়েন্টে তো খুবই ছোট ছোট প্রশ্ন হয়। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে যখন আমরা ক্লাসরুম টিচিং করি তখন এর ফলটা বুঝতে পারি। আজ থেকে হয়ত ১৫ বছর আগে যে ধরনের ছাত্র আমরা পেতাম, তাঁদের লিখতে পারা, প্রশ্নের উত্তর দিতে পারা, এসব যতটা ভালভাবে জানা ছিল, সেই ধরনের ছাত্র এখন আমরা পাই না। বড় প্রশ্নের উত্তর অনেকেই ঠিকভাবে লিখতে পারে না। কীভাবে লিখতে হয় সেটাই তারা শেখে না। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্ষেত্রেও আমরা এই সমস্যাটা দেখেছি।”
একইসঙ্গে উচ্চামাধ্যমিক স্তরে সেমেস্টার সিস্টেম চালু নিয়েও সরকারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নন তিনি। স্পষ্ট বলছেন, “সেমেস্টার সিস্টেম যে সবসময় খুব ভাল ফল দিয়েছে তা নয়। সেমেস্টার সিস্টেমের অনেক জটিলতাও রয়েছে। কলেজের ক্ষেত্রে আমরা তা দেখেছি। তাই উচ্চমাধ্য়মিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে যেখানে সিলেবাসটা অনেক বড় সেখানে সেমেস্টার সিস্টেম চালু হলে পড়ুয়ারা সমস্যার মুখে পড়তে পারে। আমার মনে হয় না এটা ছাত্রদের জন্য খুব একটা ভাল হবে। সূদূর প্রসারী ফলটাও ভাল হবে বলে মনে হচ্ছে না।”