Madan Mitra: মমতা ও অভিষেকের মধ্যে কি দ্বন্দ্ব রয়েছে? মুখ খুললেন মদন মিত্র
Madan Mitra: কয়েকদিন আগেই কলকাতার রাস্তা ছেয়ে গিয়েছিল নতুন তৃণমূলের ‘আগমনের’ খবরে। দক্ষিণ কলকাতার নানা প্রান্তে দেখা যায় অভিষেকের ছবি দেওয়া পোস্টার।
কলকাতা: “অভিষেকই ভারতের একমাত্র নেতা যিনি অমিত শাহকে ভারতের সবথেকে বড় পাপ্পু বলতে পারেন। তাও আবার ইডি-র জেরা সামলে। অমিত শাহকে পাপ্পু বলার সাহস আগে কেউ দেখায়নি, অভিষেক দেখিয়েছে।” ‘কথাবার্তা’ অনুষ্ঠানে টিভি-৯ বাংলার (TV-9 Bangla) ম্যানেজিং এডিটর অমৃতাংশু ভট্টাটার্যকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ ভাষাতেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে ঝোড়ো ব্যাটিং করতে দেখা গেল কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রকে (Madan Mitra)। প্রসঙ্গত, দিন যত যাচ্ছে ততই দলের মধ্যে অভিষেকের ক্ষমতা ক্রমেই বাড়ছে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একটা বড় অংশের। এমনকী তাঁর রাজনৈতিক বোধ, দূরদর্শিতাও আরও শানিত হচ্ছে বলেও মত বিশেষজ্ঞদের। তবে কী মমতার পর অভিষেকের আসনই পাকা? এ প্রশ্নের উত্তরে মদনের সোজাসাপটা জবাব, “আমাদের দলে মমতার উত্তরাধিকারী অভিষেক। এই মুহূর্তে ভারতের শক্তিশালী যুব নেতা অভিষেক। আমার তো বেশ ভালই লাগে ওকে।”
এদিকে কয়েকদিন আগেই কলকাতার রাস্তা ছেয়ে গিয়েছিল নতুন তৃণমূলের ‘আগমনের’ খবরে। দক্ষিণ কলকাতার নানা প্রান্তে দেখা যায় অভিষেকের ছবি দেওয়া পোস্টার। পোস্টারে লেখা ছিল, ‘আগামী ৬ মাসের মধ্যে সামনে আসবে নতুন তৃণমূল। ঠিক যেমন সাধারণ মানুষ চায়।’ আর একটি পোস্টারে লেখা ছিল ‘চলুন লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হন। এই লড়াই আমাদের ২৪ এর লড়াই।’ এদিকে এখনও পর্যন্ত যেখানে তৃণমূলের সিংহভাগ পোস্টারে দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেখতে পাওয়া যায় বা তাঁর সঙ্গে অন্য নেতাদের, সেখানে শুধুমাত্র অভিষেকের পোস্টার দেখতে পাওয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়ে যায় জল্পনা। দলের রাশ কার হাতে? সুপ্রিমো নাকি সেকেন্ড ইন কমান্ড তা নিয়েও শুরু হয়ে যায় নতুন জল্পনা। যদিও পরবর্তীতে এই বিতর্কে জল ঢালেন খোদ তৃণমূল নেতারা। এই ইস্যুতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি বলেন, “আমার ও অভিষেকের মধ্যে বিভেদ দেখানোর চেষ্টা চলছে।” অভিষেকও সংবাদমাধ্যমের সামনে বারবারই বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই দলের নেত্রী। দলে একটাই লবি, সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লবি। এরপরও অবশ্য রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন থামেনি।
আর এই নিয়েই আজ মুখ খুললেন মদন মিত্র। বুঝিয়ে দিলেন, দুই প্রজন্মের মধ্যে অনেক ক্ষেত্রে মতের মিল না হতে পারে। কিন্তু, মমতার দেখানো পথেই এগিয়ে চলেছেন অভিষেক। তাঁর কথায়, “এর আগে আমরা দেখেছি শশীকলা এবং জয়ললিতা, আমরা দেখেছি অখিলেশ এবং মুলায়ম। তারপর আমরা লালুর পরিবার দেখেছি। আবার উদ্ধব ঠাকরে রাজ ঠাকরেও দেখেছি। সব ব্যাপারাই সবাই এক মত হবে এটা নাও হতে পারে। তবে আমি এটুকু বলতে পারি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঈশ্বরের মতো মেনে, তাঁর প্রতিটা কথা কাজে পরিণত করার জন্য প্রাণপাত পরিশ্রম করে।”
দলে তাঁর শেষ ইনিংস চলেছে বলেও এদিন বলতে শোনা যায় মদনকে। কামারহাটির বিধায়ক বলেন, “তৃণমূলের বাড়িটা এত বড় যে আমি সেখানে একটা ইঁদুরের মতো। আমার অবস্থা ইঁদুরের। ২৯৪ টা বিধানসভায় আমি মাত্র একজন এমএলএ। সেই বিধায়কও হয়েছি পার্টির সমর্থন। আমি এই রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না যে পার্টির প্রতীকে জিতব, পার্টির টাকায় আমি ভোট লড়ব, পোস্টারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছাপব। তারপর আমি পিছনে দাঁড়িয়ে বলব আমি নিজেই জিতেছি, এটা ঠিক নয়। যদি কখনও নিজের দমে জিততাম তখন বলতাম। কিন্তু আমার মনে হয় না সেই সময় আসবে। কারণ লাস্ট ইনিংস খেলছি।” এরপর কার্যত স্বগোক্তির সুরে মদন বলেন, “এরপর কী আর ইনিংস খেলা উচিত? আমার মনে হয় অভিষেকের মতো ঝকঝকে তাজা যুবকরা রয়েছে। অভিষেকই ভারতের একমাত্র নেতা যিনি অমিত শাহকে ভারতবর্ষের সবথেকে বড় পাপ্পু বলতে পারেন। তাও আবার ইডি-র জেরা সামলে। অমিত শাহকে পাপ্পু বলার সাহস আগে কেউ দেখায়নি, অভিষেক দেখিয়েছে। আমার মতো যাঁরা এই মুহূর্তে নতুন যৌবনের সঙ্গে দৌড়াতে পারব না। তবে ছাব্বিশ অবধি আছি। কিন্তু ছাব্বিশ যতক্ষণে আসবে ততক্ষণে মনে হয় আমার গালের চামড়া কুঁচকে যাবে।”