Chandan Mondal: প্রাইমারি স্কুলের প্যারাটিচার চাকরির দর হাঁকতেন ১০-১৫ লক্ষ, কে এই বাগদার চন্দন?
Chandan Mondal: চন্দন মণ্ডল একা নন, কাজ করতেন তাঁর একাধিক এজেন্ট, এমনটাই জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা।
কলকাতা : ‘সৎ রঞ্জন’ বলেই তাঁর পরিচয় দিয়েছিলেন প্রাক্তন সিবিআই (CBI) কর্তা উপেন বিশ্বাস। ক্রমশ সামনে আসে তাঁর আসল নাম। অবশেষে সিবিআই জালে সেই চন্দন মণ্ডল (Chandan Mondal)। যাঁর বিরুদ্ধে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তাঁর ঠাটবাট নাকি বিশেষ ছিল না। নেতা তো দূরের কথা, কুন্তল ঘোষের মতো সরাসরি কোনও দলের সদস্য বা কর্মী ছিলেন বলেও জানা যায় না। তাহলে কে এই চন্দন মণ্ডল? কার প্রভাবে এতজনের চাকরির ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি? সেই প্রশ্ন উঠেছে আগেও। এলাকায় খোঁজ নিলে জানা যায়, চন্দন মণ্ডলের নাম জানেন অনেকেই। শুধু এলাকা নয়, বাগদার বাইরে, এমনকী উত্তর ২৪ পরগনার বাইরেও চন্দনের জাল ছড়ানো ছিল বলে জানা গিয়েছে। শুক্রবার নিজাম প্যালেসে জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কে চন্দন? কী করতেন?
নিজে গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে প্যারাটিচার পদে চাকরি করতেন চন্দন। জানা যায়, উত্তর ২৪ পরগনার বাগদায় মামা-ভাগিনা গ্রামে দোতলা বাড়ি রয়েছে তাঁর। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য অনুসারে চন্দন সক্রিয় রাজনীতি করতেন বলে জানা যায় না। তবে, তাঁর দোতলা বাড়ির সামনে নাকি লোকজনের লাইন লেগে থাকত একসময়।
অভিযোগ সামনে আসার পর বেশ কিছুদিন পলাতক ছিলেন চন্দন। তাঁর বাড়িতে গেলে দেখা যায় গেটের তালা বন্ধ।
শাসক দলের সঙ্গে ওঠা বসা?
তিনি তৃণমূল কর্মী ছিলেন, এমন তথ্য পাওয়া যায় না। তবে তৃণমূলের অনেক নেতার সঙ্গে নাকি বিশেষ ঘনিষ্ঠতা ছিল তাঁর। কতদূর হাত ছিল চন্দনের? প্রাক্তন বিধায়ক দুলাল বরের কথায় ‘টপ লেভেল’ পর্যন্ত।
কেউ কেউ বলেন, তৃণমূল নেতারা অনেকেই চন্দনের বাড়িতে যেতেন। তবে কলকাতার নেতাদের খুব বেশি যাতায়াত ছিল বলে শোনা যায় না এলাকায়। আবার স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেন, একসময় সিপিএমের সদস্য ছিলেন চন্দন।
সাদা খাতাতেই হত চাকরি, দর উঠত ১০-১৫ লক্ষ
শুধুমাত্র উপেন বিশ্বাস নয়, এলাকার অনেক বাসিন্দাও স্বীকার করে নিয়েছেন, চন্দন মণ্ডল টাকা নিয়ে চাকরি দিতেন। আবার কাউকে চাকরি দিতে না পারলে টাকা ফেরতও দিতেন। যাঁদের চাকরি দিয়েছিলেন, ইতিমধ্যে তেমন অনেকের চাকরিও গিয়েছে আদালতের নির্দেশে। চাকরি দিতেন প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক থেকে হাইস্কুলেও। ১০, ১৫ বা ২০ লক্ষ পর্যন্ত দর উঠত বলেও দাবি করেন বাসিন্দারা।
অভিযোগ, তাঁর স্পষ্ট নির্দেশ থাকত, চাকরির ব্যবস্থা তিনি করবেন, তবে সাদা খাতা জমা দিলে তবেই। খাতায় উত্তর লিখলে চাকরি পাওয়া যাবে না। লিখতে হবে শুধু নাম ও রোল নম্বর।
এবার সেই চন্দনকে হেফাজতে নিয়ে নিয়োগ কেলেঙ্কারির শিকড়ে পৌঁছতে চাইছে সিবিআই।